মানিলন্ডারিং মামলা : হাইকোর্টে জামিন পাননি এসপিসি ওয়ার্ল্ডের শারমিন

আগের সংবাদ

জাহাঙ্গীর আজীবন বহিষ্কার : আ.লীগের সভায় সিদ্ধান্ত, মেয়র পদ হারাতে পারেন জাহাঙ্গীর > খালেদার টার্গেট আমি : প্রধানমন্ত্রী

পরের সংবাদ

যে কারণে টিকায় ব্যয়ের হিসাব দিতে নারাজ মন্ত্রী

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকার খরচ কত তা সংসদে জানাতে নারাজ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, উৎপাদনকারী কোম্পানির সঙ্গে ‘নন-ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্টের’ কারণে সংসদে অর্থ খরচের হিসাব প্রকাশ করা সমীচীন হবে না। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে সরকারদলীয় সাংসদ আবুল কালাম আজাদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে করোনা ভাইরাসের টিকা কেনার খরচ প্রকাশ করে আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। গত ৯ জুলাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে বলা হয়, ১ কোটি ১ লাখ ৫০ হাজার ডোজ টিকা কেনা হয়েছে (ওই সময় পর্যন্ত)। প্রতি ডোজ ৩ হাজার টাকা হিসাবে মোট ৩ হাজার ৪৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।
সাংসদ আবুল কালাম আজাদ জানতে চান, করোনা ভাইরাসের কত টিকা সংগ্রহ করা হয়েছে। আর সেজন্য কত টাকা খরচ হয়েছে? স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে সততা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে ভ্যাকসিন কেনা হয়েছে। তিনি জানান, ২১ কোটি ১৭ লাখ ৩০ হাজার ডোজ টিকা কেনা হয়েছে। এর মধ্যে চীন থেকে ৭ কোটি ৭০ লাখ ডোজ সিনোফার্মা, ৭ কোটি ৫১ লাখ ডোজ সিনোভ্যাক, ভারত থেকে ৩ কোটি কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সের আওতায় ২ কোটি ৯৭ লাখ ২০ হাজার ডোজ সিনোফার্মের টিকা। তিনি বলেন, চীন, ভারত ও কোভ্যাক্স থেকে সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে সততা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে ভ্যাকসিন কেনা হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, সিসিজিপি ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে কেনা হয়েছে। নন-ক্লোজার এগ্রিমেন্টের মাধ্যমে ভ্যাকসিন কেনার কারণে সংসদে অর্থ খরচের হিসাব প্রকাশ করা সমীচীন হবে না বলে জানান তিনি।
আলী আজমের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণের জন্য মোট ২৯ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ডোজ ভ্যাকসিনের সংস্থান করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৮ কোটি ৪১ লাখ ৩৮ হাজার ৫৪ ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫ কোটি ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৮৬৪ জনকে প্রথম ডোজ এবং ৩ কোটি ২৮ লাখ ৫ হাজার ১৯০ জনকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। দেশে পুষ্টিহীনতা বিষয়ে সব বয়সের মানুষের নির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান সরকারের হাতে না থাকলেও এক্ষেত্রে সফলতার দাবি করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তবে ঢাকা-৭ আসনের সাংসদ হাজী মো. সেলিমের প্রশ্নের জবাবে তিনি নারীদের পুষ্টি পরিস্থিতির একটি চিত্র তুলে ধরেন। মন্ত্রীর দেয়া তথ্যানুযায়ী, ১৫-৪৯ বছর বয়সি নারীদের অপুষ্টিজনিত কম ওজন ২০১৭ সালে ছিল ১২ শতাংশ, ২০০৭ সালে তা ৩০ শতাংশ ছিল।
সাড়ে ১২ হাজার ওষুধের দোকানের লাইসেন্স নেই : নুরুন্নবী চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সংসদকে জানান, ২০২১ সালের আগস্ট পর্যন্ত সময়ে ১২ হাজার ৫৯২টি ওষুধের দোকান শনাক্ত করা হয়েছে, যেগুলোর ড্রাগ লাইসেন্স নেই। তিনি জানান, লাইসেন্সবিহীন দোকান শনাক্ত ও লাইসেন্স দেয়া চলমান প্রক্রিয়া। ৫৫ জেলা কার্যালয় ও আট বিভাগীয় কার্যালয়ের মাধ্যমে সারাদেশে ওষুধ প্রশাসনের কর্মকর্তারা নিয়মিত দোকান পরিদর্শন করেন। বিএনপির সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, মাদকসেবীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে দেশের প্রতিটি জেলা হাসপাতালে পৃথক ইউনিট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
৪৬টি ওষুধ কোম্পানির উৎপাদন লাইসেন্স বাতিল : ময়মনসিংহ ১১ আসনের সাংসদ কাজিম উদ্দিন আহম্মেদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে নকল-ভেজাল ওষুধ বিক্রির বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ১ হাজার ৭১৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাতে ৭ কোটি ৫৮ লাখ ১০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। নকল ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের বিরুদ্ধে সরকার নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত সময়ে ৪৬টি ওষুধ কোম্পানির উৎপাদন লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭টি হোমিও ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানি, ৪টি হার্বাল ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানি, ৫টি অ্যালোপ্যাথিক, ৬টি ইউনানী এবং ১৪টি আয়ুর্বেদিক ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানি রয়েছে। এসব কোম্পানির সব ধরনের ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ স্থগিত করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়