কাগজ ডেস্ক : পাকিস্তানি তালেবান ও ইমরান খানের সরকার এক মাসের অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন উভয়পক্ষ। গতকাল মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এই অস্ত্রবিরতি আপাতত ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত; তবে দুই পক্ষ রাজি হলে এর মেয়াদ আরো বাড়বে। গত সোমবার তাদের মুখপাত্ররা এমনটাই বলেন বলে এক প্রতিবেদনে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) নামের সংগঠনটি পাকিস্তানি তালেবান নামে পরিচিত। এই গোষ্ঠীটি আফগান তালেবান থেকে পৃথক। বছরের পর বছর ধরে টিটিপি ইসলামাবাদের সরকারকে উৎখাতে লড়াই চালিয়ে আসছে। তারা ২২ কোটি জনসংখ্যার দেশ পাকিস্তানে কঠোর শরিয়া আইন কায়েম করতে চায়। তাদের সঙ্গে পাকিস্তান সরকার আগেও বহুবার আলোচনায় বসেছে। দুই পক্ষের মধ্যে শান্তি চুক্তিতে পৌঁছানোর একাধিক চেষ্টা ব্যর্থও হয়েছে এর আগে। গত আগস্টে আফগানিস্তানে তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর টিটিপির সঙ্গে পাকিস্তান সরকারের আলোচনা ফের শুরু হয়। সীমান্তের ওপারে আফগানিস্তানের তালেবান নেতাদের সহযোগিতায় দুই পক্ষ বৈঠকে বসে।
এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী বলেন, পাকিস্তান সরকার ও নিষিদ্ধঘোষিত তেহরিক-ই-তালেবান একটি পূর্ণাঙ্গ অস্ত্রবিরতিতে রাজি হয়েছে। আলোচনায় অগ্রগতি হলে অস্ত্রবিরতির মেয়াদ আরো বাড়তে পারে। স্কুলছাত্রী মালালা ইউসুফজাইকে হত্যাচেষ্টা টিটিপিকে পশ্চিমে পরিচিতি এনে দেয়। টিটিপির একের পর এক আত্মঘাতী হামলা ও বোমা হামলায় এরই মধ্যে পাকিস্তানের কয়েক হাজার সামরিক-বেসামরিক নাগরিকের প্রাণ গেছে।
২০১৪ সালে তারা আফগান সীমান্তের কাছে পেশোয়ারে একটি সামরিক বাহিনী পরিচালিত স্কুলে হামলা চালিয়ে ১৩২ শিশুসহ ১৪৯ জনকে হত্যা করে। সর্বশেষ গত শনিবারও তারা উত্তর ওয়াজিরিস্তানে একটি বোমা হামলার দায় স্বীকার করে নেয়। ওই হামলায় ৪ সেনা নিহত ও একজন আহত হয়।
ফাওয়াদ চৌধুরী বলেন, টিটিপির সঙ্গে যে অস্ত্রবিরতি চুক্তি দেশের সংবিধান মেনেই হয়েছে। পাকিস্তানি তালেবান এর আগে ইসলামাবাদের সরকারের সঙ্গে বসতে বন্দিমুক্তির শর্ত দিয়েছিল। তবে পাকিস্তান সরকার টিটিপির শর্ত মেনে তাদের কোনো নেতাকে মুক্তি দিয়েছে কিনা, তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি। অনেকগুলো জঙ্গি গোষ্ঠীকে একত্রিত করে গঠিত টিটিপি ২০০৭ সাল থেকে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় এই গোষ্ঠীটির নাম আছে। ২০১৪ সালে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর জারব-ই-আজব অভিযানে ?টিটিপি বেশ দুর্বল হয়ে পড়ে। অভিযানের মুখে উত্তর ওয়াজিরিস্তানের ঘাঁটিগুলো ছেড়ে যায় তালেবানরা। তারপরও তাদের ৪ থেকে ৫ হাজার যোদ্ধা আছে বলে ধারণা করা হয়। এদের অনেকেই সীমান্তের ওপারে আফগানিস্তানে অবস্থান করছে। আফগান তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর থেকে দুই দেশের সীমান্ত বরাবর অনুপ্রবেশ, গোলাগুলিসহ বেশ কিছু ঘটনাও ঘটে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।