মোহাম্মদপুরে ২৫ দিন ধরে শিকলে বেঁধে তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ

আগের সংবাদ

পাল্টে যাচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা : শিখনকালীন ৪০ শতাংশ, ৩০ নম্বর হাতেকলমে এবং ৩০ নম্বর সামষ্টিক মূল্যায়ন

পরের সংবাদ

মানবাধিকার সংগঠন খুলে চাঁদাবাজি করতেন তিনি : এক সংসদ সদস্যের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সুফি সাগর সামসকে কমবেশি অনেকেই চেনেন একজন মানবাধিকার কর্মী হিসেবে। আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা বলে তিনি নিজেকে পরিচয় দিতেন। এই পরিচয়ে সামস মূলত বিভিন্ন ব্যক্তিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে চাঁদাবাজি ও অর্থ কামিয়ে আসছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই তার এই প্রতারণা চলছিল। এছাড়া সামস নিজেকে একজন ডক্টরেট ডিগ্রিধারী বলে দাবি করতেন। আদতে তিনি কোনো পড়াশোনাই করেননি। মাত্র পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেই তিনি ডক্টর বনে যান।
সম্প্রতি ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা) আসনের সংসদ সদস্য মো. আব্দুল ওয়াহেদের কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন। পরে তিনি যখন বিষয়টি নিয়ে পুলিশকে অভিযোগ দেন, তখন তদন্ত শুরু করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্তে বেরিয়ে আসে এমন সব চাঞ্চল্যকর তথ্য। এরপর সেই ভুয়া মানবাধিকার সংগঠনের উপদেষ্টা সুফি সামসকে গত রবিবার গ্রেপ্তার করে ডিবি। গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর ডিবি কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, সেই এমপির কাছে সুফি সামস চাঁদা দাবি করেন। এরপর তাকে হেনস্তা করার জন্য তিনি পাপুয়া নিউগিনির নাগরিক বলে প্রচার করতে থাকেন। এজন্য তার নামে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে মিথ্যা অভিযোগে চিঠি দেন সামস। তারপর মোটা অঙ্কের চাঁদাও দাবি করেন। চাঁদা না দেয়ায় সামস ও তার সহযোগীরা এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা শিরোনামে উচ্চ আদালতে মীমাংসিত বিষয়ে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ সম্মেলন করে বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এটি নজরে এলে সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলার তদন্তে নেমে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিবিপ্রধান বলেন, সামস নিজেকে একজন ডক্টর দাবি করলেও তার সত্যতা পাওয়া যায়নি। আমরা তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তিনি আমেরিকার যে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম বলেছেন, সেটির কোনো অস্তিত্ব নেই। মূলত তার একজন আত্মীয় আমেরিকায় থাকেন। তার পরামর্শে তিনি এই সার্টিফিকেটটি তৈরি করেন এবং নিজেকে ডক্টরধারী বলে প্রচার করতে থাকেন।
তিনি নিজেকে বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টির (বিএইচপি) মহাসচিব দাবি করতেন। প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন কমিশনে এ রকম নামের কোনো দলের নিবন্ধন নেই। মূলত বিভিন্ন জনকে জিম্মি করে চাঁদাবাজি করাই ছিল তার পেশা। কারো নামে কোনো পত্রিকায় দুর্নীতির সংবাদ হলেই তার নম্বর নিয়ে দুদকে অভিযোগ দায়ের করা হবে বলেও ভয় দেখানো হতো।
এভাবে সামস বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা চাঁদাবাজি করতেন। তাকে মানবপাচারের অভিযোগে আমেরিকান অ্যাম্বাসির করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার করেছিল ডিবি। তার বিরূদ্ধে বিভিন্ন থানায় চারটি মামলা আছে। এই চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
ডিবি জানায়, সুফি সামস সম্প্রতি কিছু মানুষকে আমেরিকায় পাঠানোর নাম করে প্রতারণা করেন। এছাড়া তার নামে অসংখ্য মানুষের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়