মোহাম্মদপুরে ২৫ দিন ধরে শিকলে বেঁধে তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ

আগের সংবাদ

পাল্টে যাচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা : শিখনকালীন ৪০ শতাংশ, ৩০ নম্বর হাতেকলমে এবং ৩০ নম্বর সামষ্টিক মূল্যায়ন

পরের সংবাদ

বৈশ্বিক স্বর্ণের দামে নয়া রেকর্ড

প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বৈশ্বিক স্বর্ণের দাম। এতে ঘটছে একের পর এক রেকর্ড। চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস গতকাল সোমবার লেনদেন শুরু হতেই স্বর্ণের দামে বড় উত্থান হয়েছে। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে দামি এ ধাতুটি। প্রথমবারের মতো এক আউন্স স্বর্ণের দাম ২ হাজার ২৫০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
মার্চ মাসজুড়েই বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম এমন লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। এর মধ্যে গত সপ্তাহেই প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম বাড়ে ৫১ দশমিক ৪৬ ডলার বা ২ দশমিক ২৬ শতাংশ। আর মার্চ মাসে বেড়েছে ২০০ ডলারের ওপরে।
আগে থেকেই বিশ্ববাজারে রেকর্ড দামে ওঠা স্বর্ণ গতকাল সোমবার লেনদেন শুরু হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যে ২ হাজার ২৫০ ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করে।
বিশ্ববাজারের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত সপ্তাহের শুরুতে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল ২ হাজার ১৮০ দশমিক ৯২ ডলার। সেখান থেকে বেড়ে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২ হাজার ২৩২ দশমিক ৩৮ ডলারে থিতু হয় সপ্তাহ শেষে। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম বাড়ে ৫১ দশমিক ৪৬ ডলার বা ২ দশমিক ২৬ শতাংশ।
আর মার্চ মাসের শুরুতে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল ২ হাজার ৪৩ দশমিক ৬৩ ডলার। অর্থাৎ গত সপ্তাহ পর্যন্ত মার্চ মাসে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম বাড়ে ১৮৯ দশমিক ২০ ডলার বা ৯ দশমিক ২৬ শতাংশ। এদিকে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস গতকাল সোমবার ইতোমধ্যে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২৬ দশমিক ৮৬ ডলার বেড়েছে। এতে মার্চ মাসে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম বাড়ল ২১৬ ডলার।
শুধু বিশ্ববাজার নয় দেশের বাজারেও রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে স্বর্ণ। দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সর্বশেষ নির্ধারণ করা হয় গত ২১ মার্চ। যা কার্যকর হয় ২২ মার্চ থেকে।
বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের দাম বাড়ার কারণ উল্লেখ করে সেদিন সব থেকে ভালোমানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৯১৬ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করে হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৭৪ টাকা।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৭৪১ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৮ হাজার ৮৮৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৩৩৩ টাকা বাড়িয়ে ৯৩ হাজার ৩১২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৯৮৩ টাকা বাড়িয়ে ৭৭ হাজার ৭৯৯ টাকা নির্ধারণ করে। দেশের বাজারে স্বর্ণের এত দাম আগে কখনো হয়নি। বর্তমানে এ দামেই স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে।
অবশ্য স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের এর থেকে বেশি অর্থ গুনতে হচ্ছে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের গহনা বিক্রি করা হয়। সেই সঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে আজ থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার গহনা কিনতে ক্রেতাদের ১ লাখ ২৩ হাজার ২৭৭ টাকা গুনতে হচ্ছে। দেশের বাজারে সর্বশেষ যখন স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়, সে সময় বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল ২ হাজার ১৫৫ ডলারের কাছাকাছি। অর্থাৎ দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর পর ইতোমধ্যে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১০০ ডলারের মতো বেড়ে গেছে।
এদিকে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, চলতি বছর প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৩০০ ডলার হয়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারে সম্প্রতি বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিংয়ের চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের যে রেকর্ডটা আমরা দেখেছি তাতে এ বছরই প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৩০০ ডলার হয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, ভূরাজনৈতিকসহ কয়েকটি কারণে স্বর্ণের দাম বাড়ছে। ইনফ্লেশন (মূল্যস্ফীতি) এখন খুব হাই। ডলারের দাম সেই তুলনায় কম। এ কারণে বিনিয়োগ গোল্ডের দিকে ঝুঁকে গেছে। আবার মুক্তবাজার অর্থনীতিতে অনেক দেশ এখন ডলার বাদ দিয়ে রিজার্ভ হিসেবে স্বর্ণ কিনে রাখছে।
বাংলাদেশে নতুন করে দাম বাড়ানো হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা বিশ্ববাজার এবং স্থানীয় বাজারের পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিই। এখানে দুটি বিষয় আছে একটা ফিউচার মার্কেট, আর একটা প্রাকটিক্যাল মার্কেট। ফিউচার মার্কেটে দাম বাড়তে পারে বিনিয়োগের কারণে। আর প্রাকটিক্যাল মার্কেটে যদি ক্রয়ক্ষমতার ওপরে চলে যায়, তখন মানুষ কম কিনবে, চাহিদা কম থাকবে। এ দুই দিক বিবেচনা করে আমাদের দাম ওঠা-নামা করে। আমরা স্থানীয় বাজারের চিত্র দেখব, তারপর সিদ্ধান্ত নেব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়