সাড়ে ৩ মাস পর কারামুক্ত আলাল

আগের সংবাদ

নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের কোনো প্রশ্ন নেই : সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী

পরের সংবাদ

বহুমাত্রিক নন্দনতত্ত্ব খেলায় কবি নৃপেন্দ্রলাল দাশ

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

‘ভাস্কর’ একটি লিটল ম্যাগাজিন, সাহিত্যপত্রিকা। কবি পুলিন রায়ের সম্পাদনায় ‘ভাস্কর’ ৩৪ বছরে পদার্পণ করেছে। এটা যুগপৎ আনন্দ ও গৌরবের। সম্প্রতি বের হয়েছে ভাস্কর কবি নৃপেন্দ্র লাল দাস সংখ্যা। এটি প্রকাশ করে সম্পাদক একটি ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৪ সালে প্রকাশিত ‘ভাস্কর’ কবি দিলওয়ার সংখ্যা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে রেফারেন্স হিসেবে পাঠ্যভুক্ত হয়। ভাস্কর সম্পাদক হিসেবে কবি পুলিন রায় ইতোমধ্যে দুই বাংলায় বেশ কয়েকটি সম্মাননা/পুরস্কার পেয়েছেন।
নৃপেন্দ্রলাল দাশ একজন জাত লেখক। পেশায় বাংলা ভাষার অধ্যাপক, আর সাধনায় সাহিত্যিক। তিনি একাধারে কবি, গবেষক, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক। ১৯৭০ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘রম্যানি রুচিরা’ প্রকাশের পর আজ ৫৪ বছর চলছে তার সাহিত্য জীবন। এই বহুমাত্রিক কবিকে নিয়ে ‘ভাস্কর’-এর বিশেষ সংখ্যাটি একটি অনন্য প্রকাশনা। ২৪৮ পৃষ্ঠার বৃহৎ কলেবরের এ সংখ্যাটি ১৩টি ভাগে বিন্যস্ত। প্রথম চারটি ভাগে বিভিন্ন বিজ্ঞজনের আলোচনার বিষয়বস্তু কবির রচনার মূল্যায়ন। রয়েছে কবিকে নিবেদিত কবিতাগুচ্ছ, কবি পরিবারের সদস্যদের কিছু কথা, কবির রচনার ক্ষুদ্র অংশ, তার কাছে লেখা দেশ-বিদেশের বিশিষ্টজনের পত্র, দুটো সাক্ষাৎকার, একটি বৈঠকি কথকতা, জীবনপঞ্জি, গ্রন্থতালিকা ও ছবি সম্ভার।
শুরুতে ‘মেধার মাধুরী’ অংশ। কবির ৫০তম জন্মবার্ষিকীতে তাকে প্রদত্ত সংবর্ধনা অনুষ্ঠান উপলক্ষে দিলওয়ারের লেখা, ‘কবি নৃপেন্দ্রলাল দাশ : আমার চোখে’ দিয়ে শুরু। লেখায় দিলওয়ার বলেছেন, ‘কবি নৃপেন্দ্রলাল দাস একজন যথার্থ কবি। এ কথার প্রমাণ তার কবিতা। …কবি নৃপেন্দ্র লাল শূন্যগর্ভ কবি নন। অর্থাৎ পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত দু’চারটে কবিতা পড়ে তিনি কবিতা লেখেন না। তার কাব্যিক শক্তির সঙ্গে বিস্তৃত অধ্যয়নের যোগাযোগ রয়েছে।’
দেশের কিংবদন্তিতুল্য নিসর্গবিদ দ্বিজেন শর্মা, নৃপেন্দ্র লাল দাসের ‘হাসন-রাজা শব্দ-বৈশব্দ’ গ্রন্থটি আলোচনা করে তার ‘দার্শনিক মানসবৃত্ত অন্বেষা’ প্রবন্ধে নৃপেন্দ্রলাল দাশকে একজন শ্রমদায়ি গবেষক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। বিশিষ্ট কবি মোফাজ্জল করিম ওই অনুষ্ঠানে সভাপতির ভাষণে নৃপেন্দ্রলাল দাসকে তার প্রিয় কবিদের একজন বলে অভিহিত করে, তাকে ধ্রæপদী মেজাজের, অতীতচারী ও নিজস্ব বাচনভঙ্গির অধিকারী সৎ কবি হিসেবে মূল্যায়িত করেছেন। কবি শাহজাহান হাফিজও যথার্থ বলেছেন ‘কবিতার মোহিনী ভুবনই তার আসল ভুবন’। তিনি ‘রম্যাণি রুচিরা’ ও ‘অনীহার অন্ধকার আমি’ এ দুটো প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ এবং ‘রক্তে আমার রুবাই’ ও ‘বৈশালীর প্রতি সনেটগুচ্ছ’ এ দুটো পাণ্ডুলিপির কবিতাগুলো ব্যাখ্যা করে নৃপেন্দ্রলাল দাসকে একজন প্রতিশ্রæতিশীল কবি যিনি নিজেকে অনবরত নির্মাণ করতে ভালোবাসেন বলে চিত্রিত করে তার অবিরত নতুন নতুন নিরীক্ষার সাহসের প্রশংসা করেছেন। অধ্যাপক আবুল বশর ও সৌমিত্র শেখর অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত হলেও কবিকে একজন প্রকৃত ‘কবি’ বলে মূল্যায়ন প্রণিধানযোগ্য।
দ্বিতীয় অধ্যায় ‘কারুবাকি কথন’-এ লিখেছেন ১১ জন। বর্ষীয়ান শিক্ষাবিদ অধ্যাপক বিজিত কুমার দে ‘মনস্বী কবি নৃপেন্দ্রলাল দাস শিরোনামে’ লেখায় কাব্যচর্চার জন্য তাকে যেমনি মনস্বী কবি বলেছেন, আবার ধীমান কবি হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি কবির গবেষণা কর্মের প্রতি অনুরাগেরও প্রশংসা করেছেন।
আবুল ফতেহ ফাত্তাহ সমসাময়িককালে সিলেটের অন্যতম প্রধান গবেষক ও লেখক। তিনি ‘নৃপেন্দ্রলাল দাসের কবিতায় ঐতিহ্য চেতনা’ শিরোনামে লিখিত প্রবন্ধে কবির কাব্য গ্রন্থগুলোর ওপর বিশদ আলোচনা করেছেন। যেমন তিনি কবি সম্পর্কে বলেছেন, ‘হৃদয়ের রক্তক্ষরণে কবি লিখে যান মুক্তিযুদ্ধের গান অমর কবিতা’। আবার বলেছেন, ‘শিল্পরসের অপার্থিব ছোঁয়া তার কবিতাকে দিয়েছে অনিন্দ্য প্রণোদনা।’ তিনি বলেন, ইতিহাসের কালপর্ব ঘুরে কবি নৃপেন্দ্রলাল বাংলার পল্লী-প্রকৃতির রূপ মাধুর্য অবগাহন করে যেতে চান আজীবন। কবি এ কে শেরাম ‘নৃপেন্দ্রলাল দাস : সাহিত্যের এক বরপুত্র’ প্রবন্ধে কবির সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্কের প্রসঙ্গ তুলে তার কাব্যধারা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছেন। কবি নৃপেন্দ্রলাল দাস জাতীয় পুরস্কার না পাওয়াতে তার প্রবন্ধে ক্ষোভের সুর পরিলক্ষিত হয়।
বিধুভূষণ ভট্টাচার্য্য নৃপেন্দ্রলাল দাসকে সুরসিক হিসেবে বর্ণনা করে তার সঙ্গে কবির ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের পরিচয় এবং কবির বাগ্মিতা ও পাণ্ডিত্যের বিষয়টি সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন। কবি-গবেষক জফির সেতু কবির বহুমাত্রিকতায় বিস্ময় প্রকাশ করে তাকে ক্লাসিকধর্মী মেজাজের কবি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কবি মোস্তাক আহমাদ দীন কবির নির্বাচিত কবিতা গ্রন্থের ‘কম্পোজিশন’ কবিতাটির রসোত্তীর্ণ আলোচনা করেছেন, যা এই বিশেষ সংখ্যার এক মূল্যবান রচনা। মোহাম্মদ হোসাইনও তার নাতিদীর্ঘ প্রবন্ধে নৃপেন্দ্রলাল দাসের কাব্য-ফসলের ভাবধারার নির্যাস তুলে ধরে তার দীর্ঘায়ু কামনা করেছেন।
কবি শামসুল আলম সেলিম কবির কাব্যগন্থ ‘অনীহার অন্ধকারে আমি’ নিয়ে সরস আলোচনায় কবির ভাবনা জগতকে পরিক্রমা করেছেন অত্যন্ত কুশলতার সঙ্গে। কবি সুমন বনিক কবির কাব্য ভাবনার ছায়া দর্শন নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে কবিতার মগ্ন চেতনায় কবি অন্তরানুভূতির অনুবেদন তৈরি করে আবির্ভূত হয়েছেন বলে মনে করেন। নৃপেন্দ্রলাল দাসের কবিতা নিয়ে আমাদের দেশে প্রভাবশালী কবি সাহিত্যিকদের মূল্যায়নভিত্তিক মন্তব্যগুলোকে উদ্ধৃত করে তিনি নৃপেন্দ্র কাব্যের মূল্যায়নে মনোনিবেশ করেছেন। তার মতে কবি নৃপেন্দ্রলাল দাসের মননবিশ্বে বহুরৈখিক, বহুমাত্রিক নন্দনতত্ত্ব খেলা করে, যা কবির বহুমাত্রিকতা প্রসঙ্গে অত্যন্ত যৌক্তিক মূল্যায়ন।
মাধব রায় কবি নৃপেন্দ্রলাল দাসের রবীন্দ্র চর্চা ও রবীন্দ্র মগ্নতা প্রসঙ্গে বেশ দীর্ঘ প্রবন্ধ রচনা করেছেন। এ প্রবন্ধটিতে রবীন্দ্রবিষয়ক রচনাবলীর এক বিশ্লেষণধর্মী পর্যালোচনা করেছেন।
জয়নাল আবেদীন শিবু তার আলোচনায় নৃপেন্দ্রলাল দাসের কবিতায় লোকায়ত বাংলার চিত্র কীভাবে এসেছে তার একটা বর্ণনা দেয়ার চেষ্টা করেছেন।
‘গদ্যের ঘনিষ্ঠ বিভা’ অংশটি শুরু হয়েছে অধ্যাপক প্রশান্ত কুমার সাহার রচনা দিয়ে। অধ্যাপক সাহা তার আলোচনায় কবিকে তার ভালোবাসার মানুষ হিসেবে পরিচিত করিয়েছেন পাঠকের কাছে। কবি আবিদ ফায়সাল ‘নৃপেন্দ্র মানস : গদ্যের নিজত্ব ও শৈলী’ শিরোনামের প্রবন্ধটিতে বাংলা গদ্যের যাত্রাপথকে সংক্ষিপ্তাকারে তুলে ধরে কাব্যিক ভাষায় নৃপেন্দ্রলাল দাসের গদ্য গ্রন্থগুলোর এক একটি নিয়ে বেশ বিস্তৃত আলোচনা করে নৃপেন্দ্রলাল দাসের গদ্যরীতি সম্পর্কে বলেন, ‘তার গদ্যের অবয়বের মধ্যে যেমন এক ধরনের অনিন্দ্য প্রমূর্তিকে খুঁজে পাওয়া যায়, তেমনি ভাবগম্ভীর এক মৃদু কল্লোলকেও সোচ্চার হতে দেখি।’ আবিদ ফায়সালের সুচিন্তিত মতামত নৃপেন্দ্রলাল দাসের গদ্য গ্রন্থ পাঠে পাঠককে অনুপ্রাণিত করবে বলে আমার বিশ্বাস।
আগরতলার কবি ও সম্পাদক গোবিন্দ ধর তার সঙ্গে নৃপেন্দ্রলাল দাসের পরিচয় ও সখ্যতার দিক বর্ণনা করে কবি সম্পর্কে রব্বানী চৌধুরী, ড. তপন বাগচী, গোবিন্দ রায় সুমন প্রমুখের রচনাবলীর উল্লেখ করে নৃপেন্দ্রলাল দাসকে ‘সাহিত্যের এক বটবৃক্ষ’ অভিধায় অভিষিক্ত করেছেন।
তৃতীয় অংশ হলো ‘আনন্দ পাঠ’। এ বিভাগটি কলকাতার অমিয় শংকর চৌধুরীর একটি চিঠি দিয়ে শুরু। এ চিঠিটি বেশ আকর্ষণীয় রচনা।
নন্দলাল শর্মা, খ্যাতিমান লেখক। তিনি অল্প কথায় ‘প্রসঙ্গ : রবীন্দ্রনাথ, রসপ্রস্থান’ গ্রন্থটির এক মনোমুগ্ধকর আলোচনা করেছেন। তার ভাষায় কবি হলেও গবেষক হিসেবে নৃপেন্দ্রলাল দাশের একটি বিশিষ্ট স্থান আছে। গ্রন্থটির ভাষা, ‘অননুকরণীয় কাব্যিক গদ্য’। তিনি গ্রন্থটির উচ্ছ¡সিত প্রশংসা করে বলেছেন, বিষয় বস্তুর কারণে বিশ্লেষণ নৈপুণ্যে ও ভাষার কারুকার্যে সুখ পাঠ্য।’
মিহির কান্তি চৌধুরী, ‘এই ইলিশের দেশ’ গ্রন্থটি নিয়ে বেশ রসালো ভঙ্গিতে আলোচনা করেছেন। কবি এ কে শেরাম এ সংখ্যায় আরো একটি লেখা লিখেছেন। নৃপেন্দ্রলাল দাসের শ্রেষ্ঠ প্রবন্ধ নিয়ে এ বিভাগে তার এ রচনাটি স্বতন্ত্র মূল্যায়নে সমৃদ্ধ।
অধ্যাপক জাহানারা খাতুন নৃপেন্দ্রলাল দাসের তিনটি নিরীক্ষাধর্মী উপন্যাস নিয়ে আলোচনা করেন। বেশ দীর্ঘ এ প্রবন্ধে লেখিকা তিনটি উপন্যাস যথাক্রমে ‘গার্গী’, ‘হাসন রাজা, রঙের বাড়ই’ আর ‘হেমন্তবালার রবীন্দ্রনাথ’ নিয়ে আলাদা করে মোটামুটি বিস্তৃত আলোচনা করে প্রতিটি উপন্যাসে লেখকের নিজস্ব রচনাশৈলীর বিশ্লেষণ করেছেন আকর্ষণীয় ভাষায়। লেখিকার ভাষামাধুর্যগুণে প্রবন্ধটি ‘ভাস্কর’ এর এই সংখ্যার এক মূল্যবান সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হতে বাধ্য।
আসামের শিলচরের কবি-গবেষক তমোজিৎ সাহা ‘হাসন রাজা-শব্দ নৈঃশব্দ’ গ্রন্থটি নিয়ে এক চিন্তাকর্ষক সমালোচনা করেছেন। দীপংকর মোহান্তও নৃপেন্দ্রলাল দাসের ‘শ্রেষ্ঠ প্রবন্ধ’ গ্রন্থটি নিয়ে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। এটিতে এ গ্রন্থের দশটি প্রবন্ধের প্রতিটি নিয়েই তিনি আলোচনা করেছেন এবং বলেছেন, তিনি গ্রন্থে ‘স্বতন্ত্রবাচ্য ভাষা’ ব্যবহার করেছেন।
সৈয়দ মুজতবা আলীকে নিয়ে কবির লেখা ‘বাংলা সাহিত্যের কুতুব মিনার’ নামের পুস্তকটি নিয়ে সায়েদুর রহমান তালুকদারের আলোচনা বেশ উৎসাহ-উদ্দীপক ও আকর্ষণীয়। কবিকে নিবেদিত পঙ্ক্তিমালা বিভাগে কবি এনায়েত হাসান মানিক, সুফিয়ান আহমদ চৌধুরী, বাবুল আহমদ, অমিতা বর্ধন, চন্দন কৃষ্ণ পাল, শাহাদত বখত শাহেদ, প্রণবকান্তি দেব, ধ্রæব গৌতম, মাসুদা সিদ্দিকা রুহী, মো. আলাউদ্দিন তালুকদার, হারান কান্তি সেন ও নামব্রম শংকর কবিকে নিবেদন করে কবিতা লিখেছেন, যা পাঠকদের জন্য মূল্যবান পাওয়া।
‘পারিবারিক আলপনা’ অধ্যায়ে কবি পতœী মমতা দাস, তার স্বামীকে নিয়ে, তাদের সংসার জীবন নিয়ে কিছু কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘তিনি যেমন বহু গ্রন্থ লিখেছেন সাহিত্য বিষয়ে তেমনই লিখেছেন ধর্ম বিষয়েও। আবার আশ্চর্যের বিষয় এই যে, তিনি সবরকম ধর্মীয় গোঁড়ামি মুক্ত, কোনো সাম্প্রদায়িক মনোভাব তার নেই।’ এ কথাগুলো ব্যক্তি নৃপেন্দ্রলাল দাসকে চিনতে সাহায্য করে। তাদের পুত্র নিসর্গ দাস অন্তু, নিগম দাস অয়ন ও কন্যা অপালা দাস পাল তাদের বাবার সাধারণ জীবন যাপন, বিভিন্ন উৎসব উদযাপন, মানুষের প্রতি তার ভালোবাসা- এ সব ব্যাপারে এবং সর্বোপরি নিজের যা আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকার পিতৃ শিক্ষার কথা উল্লেখ করেছেন।
‘নৃপেন্দ্রলালের সৃজন বিশ্ব’ বিভাগে তার কিছু রচনার নির্বাচিত অংশ পত্রস্থ করা হয়েছে তার রচনার সঙ্গে পাঠকদের পরিচয় করিয়ে দেয়ার মানসে।
পত্রাবলি অংশে কবি বিষ্ণু দে, ড. আহমদ শরীফ, ধর্মগুরু মহানামব্রত ব্রহ্মচারী, গবেষক যতীন্দ্রমোহন ভট্টাচার্য, দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ, শান্তিনিকেতনের অধ্যাপক সুখময় ভট্টাচার্য, সাহিত্যিক আবুল ফজল, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধ্যাপক শোভন সোম, শিলচরের কবি শক্তিপদ ব্রহ্মচারী, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আশুতোষ ভট্টাচার্য, শান্তিÍনিকেতনের চিত্তরঞ্জন দেব, বাংলা একাডেমির প্রয়াত দুই সভাপতি সৈয়দ মুর্তজা আলী ও অধ্যাপক আনিসুজ্জামানসহ পত্রগুলো এ সংখ্যার বিশেষ সম্পদ। ‘সাক্ষাৎকার’ বিভাগে একটি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন কমলগঞ্জের লেখক-গবেষক আহমদ সিরাজ। অপরটি নিয়েছেন কবি-সংগীতশিল্পী এনায়েত হাসান মানিক। দুটো সাক্ষাৎকারে কবির ব্যক্তিগত জীবন, ছাত্র-জীবন, সাহিত্য-জীবনের চিত্র পাওয়া যায়। এ দুটো সাক্ষাৎকার এই বিশেষ সংখ্যার অত্যন্ত মূল্যবান সংযোজন। ভাস্কর সম্পাদক পুলিন রায় ও মো. আলাউদ্দিন তালুকদারের বৈঠকি আড্ডাও বেশ উপভোগ্য একটি সংযোজন। রয়েছে নৃপেন্দ্র লাল দাসের জীবনপঞ্জি ও গ্রন্থতালিকা।
কবি নৃপেন্দ্রলাল দাস ৭৬ বছরে উপনীত, কিন্তু তার শারীরিক তার মানসিক অবস্থা জানান দেয় তিনি আরো বহুদিন আমাদের মাঝে থাকবেন এবং তার সৃজনশীল কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকবে। তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি। জয় হোক ভাস্করের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়