বিটিএসের টানে ১৮ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে ঘর ছাড়ল কিশোরী : নারায়ণগঞ্জ

আগের সংবাদ

শান্তর শুরু, সাকিবের শেষ!

পরের সংবাদ

চোখের জলে লিখে যাই কতশত কথা

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বৃহস্পতিবার রাতে ঘুমাতে পারিনি! বুকের ভেতর অন্যরকম শিহরণ! সেই কৈশোরের পটপটানি একটুও কমেনি। পাঠক ফোরামের ৩০ বছর পূর্তি উৎসব উপলক্ষে ঘুমকুমার কি আর চোখের পাতায় বসে?
মুকুল শাহরিয়ার ভাই, বোরহান, পারভেজ এবং সফিক ভাই- তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের সফল ফসল ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪-এর অনুষ্ঠান। দুঃখের সঙ্গে বলছি, আমি তাদের কোনো কাজেই সাহায্য করতে পারিনি। ভোরের কাগজ পাঠক ফোরামকে এবং এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা মানুষগুলোকে অসহ্য রকম ভালোবাসি বলেই হয়তো আমার চোখে অনুষ্ঠানের কোনো ভুল ধরা পড়েনি। আমার চোখে শতভাগ সফল একটি অনুষ্ঠান (শুধু সানি ভাইয়ের গানের সঙ্গে যে মেয়েটি নেচেছিল তার নাচটা ভালো লাগেনি। ১০-১২ জনের একই অভিমত)।
আমার বরাবরই লটারি ভাগ্য খুব খারাপ। তাই লটারি কিনি না। কিন্তু ভোরের কাগজ পাঠক ফোরামের লটারি বলে কথা। মাত্র ১২টা লটারি খরিদ করলাম এবং দুঃখের বিষয় হলো- একটাও আমার ভাগ্যে ধরা দিল না। এরপর থেকে ওয়াহিদ মুরাদ ভাইয়ের হাত দিয়ে লটারি কিনব। তবে ভীষণ আনন্দিত যে, প্রথম পুরস্কারটি মুকুল ভাই পেয়েছেন।
সবাইকে পেয়ে আবেগে ভেসেছি। নির্ঘুম রাতের ক্লান্তি চোখে ছায়া ফেলেনি। খুব মিস করেছি সবুজকে। বাসায় এসে মনে হলো, এত তাড়াতাড়ি আসা ঠিক হয়নি। ওদের একটু সময় দিলে পারতাম। কিন্তু ছেলের জন্য চলে আসতে হলো।
এ রাতেও ঠিকমতো ঘুমাতে পারলাম না। বারবার যেন সবাইকে সামনে দেখতে পাচ্ছি। কত ভাবনা, কত কথা, কত স্মৃতি চোখের পর্দায় নকশিকাঁথা সেলাই করে যাচ্ছিল।
আমি একজন অতি সাধারণ মানুষ। তেমন যোগ্যতা আমার নেই। ভোরের কাগজ পাঠক ফোরাম এই নগণ্য আমাকে দিয়েছে আজীবন সম্মাননা। আদৌ কি এটা পাওয়ার যোগ্য আমি? কোনো অবদান রেখেছি আমি পাঠক ফোরামের জন্য? জন্মলগ্ন থেকেই পত্রিকাটির সঙ্গে আছি। আছি পাঠক ফোরামের সঙ্গে। আমৃত্যু পাঠক ফোরামের সঙ্গে থাকব এবং পরবর্তী প্রজন্মও রেখে যাব। ইনশাআল্লাহ।
শনিবার দুপুর দেড়টা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত ঘুমিয়েছি। এই ঘুমের মধ্যেও ওদের আনাগোনা। সফিক ভাই দূর থেকে ভাবির দিকে তাকিয়ে আছেন। অসহায় চোখে! বেচারা বউয়ের কাছে আসতে পারছেন না। বোরহান টেনশনে আছে, অনুষ্ঠান সফল করতে হবে। ওর চোখে-মুখে ক্লান্তির ছাপ। পারভেজ ভাই কাকে যেন খুঁজে চলেছে। নীলা আপুর মাথাব্যথা, শিবানীদি গান গাইছেন! মুকুল ভাই, সব ক’টি টিকিট ৫০০ টাকা দেই… ফোনের রিংটোনে ঘুম ভেঙে গেল।
উঠতি সন্ধ্যায় ডাইনিং টেবিলে বসলাম এক কাপ চা নিয়ে। পাঠক ফোরামের তিন দশক পূর্তি সংকলন পড়ছি। ১, ২…৭…১৩…১৬…১৮ এবং ১৯ পৃষ্ঠায় এসে নিজেকে আর সামলাতে পারলাম না। এমন করে কেঁদেছিলাম ২০০৭ সালের ২৩ নভেম্বর। সঞ্জীব চৌধুরী দাদার দেহত্যাগের কথা জেনেছিলাম ওইদিন বিকালে। সিডরের কারণে অনেক দিন বিদ্যুৎ ছিল না। সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ ছিল। ১৯ নভেম্বর দাদার দেহাবসান হয়। প্রায় এক ঘণ্টা বসে থেকে ১৯ পৃষ্ঠার দিকে তাকিয়ে কতকিছু যে ভেবেছি এবং মনে মনে লিখেছি। তা বলে শেষ করা যাবে না।
৯ ফেব্রুয়ারি পাঠক ফোরামের তিন দশক পূর্তি উৎসব ছিল আমার চোখে শতভাগ সফল একটি অনুষ্ঠান।
আমি পজিটিভ চোখে সব দেখার চেষ্টা করি। তাই সবই আমার কাছে সেরা। মুকুল শাহরিয়ার ভাই, সফিক ভাই, বোরহান উদ্দিন, সরফরাজ পারভেজ খুব কষ্ট করেছেন। আপনাদের কষ্ট সার্থক। ভোরের কাগজ পরিবার এবং পাঠক ফোরাম পরিবারের সবার জন্য রইল শুভকামনা।
আমরা ভালোবাসায় বাঁচি, ভালোবেসে বাঁচি। জয়তু ভোরের কাগজ পাঠক ফোরাম।

শেখ শামীমা নাসরীন পলি : সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকা পরিবার

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়