দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন : ৬ আন্তর্জাতিক সংস্থার বিবৃতি প্রত্যাখ্যান সরকারের

আগের সংবাদ

দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া বার্তা

পরের সংবাদ

বিচ্ছেদই চির জাগরুক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৫, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

‘তোমায় নতুন করে পাবো বলে/ ও আমার ভালোবাসার ধন।’ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ এভাবেই তার চিরচেনা ভালোবাসাকে কষ্টের মায়াজাল থেকে ছিন্ন করতে চেয়েছেন।
আমি অমোঘ বিস্ময়ে দেখি- জীবন, যৌবন, জগৎ-নদীতে কেবল ব্যথা, কেবল তৃষ্ণা। সে তৃষ্ণা আরো বেশি উসকে দেয় কবি-গীতিকারের গান। মূলত, গীতিকার যে গান, যে ভাবাশ্রয়ে লেখেন, তা শতগুণ, সহস্রগুণ গ্রহণযোগ্যতায় নিয়ে যান সুরকার, শিল্পী। মায়ার খেলা যাকে বলে, সেই অনন্ত খেলা।
‘আমার ডুবো ডুবো তরী
কেমনে ধরি পাড়ি
আমার হাইলের বৈঠা, খাইলো রে ঘুণে
দয়াল গুরু তুমি বিহনে’
এই যে জীবন তরী, সেখানেও দয়ালের বিশাল বিচ্ছেদ।
আসলে পৃথিবীর মানুষের বোধে আসে না- বিচ্ছেদই শেষ কথা। আমরা মানুষে মানুষে প্রেম করি, জীবে প্রেম করি, স্রষ্টায় প্রেম করি, কোথাও কী সহজে আমাদের প্রেম জয়ী হয়? হয় না। অনেক ত্যাগ, অনেক তিতিক্ষার পরও এক বুক জ¦ালা নিয়ে জীবন কাটাতে হয়, পথ চলতে হয়।
সময় নিয়ে কথা উঠলেই মনে পড়ে যায় স্টিফেন হকিংয়ের কথা। তিনি নিজে সময়ের চমৎকার ব্যাখ্যা দিয়েও কী সময়কে নিজের জীবনে সুশোভন করতে পেরেছিলেন? না, পারেননি। তার মহান করুণ রোগক্লিষ্ট জীবন আমাদের বুকে বিচ্ছেদের হাতুড়ি পেটায়।
জগৎজুড়ে এই এক মহাবিচ্ছেদ। এই বিচ্ছেদ থেকে কারো মুক্তি নেই। বলা নেই, কওয়া নেই, আপনার আমার এই ধরণী থেকে বিদায়, কী এক শূন্যতায় পরিভ্রমণ! কেনই বা আসা, কেনই বা চলে যাওয়া? কী মজা লাগাইলা দারুণ বিধি!
পিতা-মাতা চলে গেলে সন্তান ভাবে- কী করে চলবে এ জীবনের পথপরিক্রমা? একদিন সময়ের বিশাল থাবায় সে কষ্ট দূর হয়ে নিজেই সন্তানের কাছে দূরাগত মানব বনে যান, যেতে বাধ্য হন।
সুতা ছিঁড়ে যায়। দূর নীলাকাশে অনন্ত পাখি হয়ে উড়াউড়ি শুরু হয়। শেষ কোথায় কে জানে? মন বলে, এই অনন্ত বিচ্ছেদই আসল প্রেম। যে প্রেম স্বর্গ থেকে আসে স্বর্গে যায় চলে। আমরা শুধু প্রেমের ক্রীড়নক।
মায়া লাগিয়েও ধরে রাখা যায় না। মায়া না লাগিয়েও কাছে ধরে রাখা যায় না। কী মহাযন্ত্রণা আপনার-আমার ভুবনকে কষ্টের কালো ব্যথায় ভরে দেয়। সেই ব্যথার ভুবন থেকে কারো মুক্তি নেই। জীবনের এই এক অনন্য, অনন্ত তৃষ্ণা।
ফুল ফুটেছিল বনে, বাগানে। কে কতটা সে সৌন্দর্য দেখে বিমোহিত হয়েছিল, সেটাই আসল বিচার। ফুল ফুলের কাজ করেছে। মানুষ তেমনটি যেন করে যায়। তবেই শত বিচ্ছেদেও একটুখানি সুখ বাসা বাঁধতে পারে কারো না কারো বুকে। এটাই বা কম কি?
ওয়াহিদ মুরাদ : নিউ ইস্কাটন, ঢাকা

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়