টিআইবি : গণতন্ত্রের জন্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অপরিহার্য

আগের সংবাদ

জাদুর কাঠির ছোঁয়ায়! হলফনামায় দেয়া তথ্য > মন্ত্রী-এমপিদের সম্পদ বেড়েছে ২ থেকে ২০০ গুণ পর্যন্ত

পরের সংবাদ

মানবাধিকার দিবসে রাষ্ট্রপতি : বাংলাদেশ মার্কিনিদের মানবাধিকার শেখাবে

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ১১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : মার্কিনিরা যেন আর মানবাধিকার না শেখায়, বাংলাদেশ তাদের মানবাধিকার শেখাবে বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেছেন, যারা আমাদের মানবাধিকার শেখায়, তাদের মাস্টার বাংলাদেশ। বাংলাদেশ তাদের শেখাবে। তোমরা পড়তে পড়তে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছ। সারাবিশ্বে সংঘাত সৃষ্টি করছ। তোমাদের আমরা শেখাব মানবাধিকার কীভাবে রক্ষা করতে হয়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে গতকাল রবিবার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
গাজাকে রক্ষায় সারাবিশ্বকে একযোগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, জাতিসংঘে যখন গাজার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব এল, এ মানবাধিকারের ফেরিওয়ালারা সেখানে বাধা দিল। আজ বিশ্ববিবেক কোথায়? আজ সারা পৃথিবীতে মানবাধিকার দিবস পালন করা হয়, অথচ চোখের সামনে কত নির্মমভাবে গাজায় মানুষকে, মুসলমানকে শেষ করে দেয়া হচ্ছে। নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। অথচ সারা বিশ্ব নীরব ভূমিকা পালন করছে।
তিনি বলেন, ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের মাস। বহু আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা এই মাসের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা পেয়েছিলাম। এজন্য মাসটি আমাদের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান। এই মাসে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসরদের দ্বারা সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছিল।
তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, দারিদ্র হ্রাস, শিক্ষা ও চিকিৎসার সুযোগ বিস্তার, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস ও নারীর ক্ষমতায়নসহ আর্থসামাজিক নানান সূচকে তাৎপর্যপূর্ণ সফলতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। যেখানে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার মানবাধিকার লঙ্ঘিত ও লুণ্ঠিত হয়েছিল। তিনিই মানবাধিকারের প্রতি দৃঢ় আস্থা ও অঙ্গীকার থেকে ২০০৯ সালে মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেছিলেন, আমি ভুক্তভোগী, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ যেন ভুক্তভোগী না হয়। এতো বড় মহান ব্যক্তিকে আমি শুভেচ্ছা জানাই।
রাষ্ট্রপতি বলেন, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার পাশাপাশি সংকট মোকাবিলায় দূরদর্শী নেতৃত্ব ও মানবিকতার জন্য বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে প্রশংসিত হয়েছে। করোনাভাইরাসের মহামারিতে বাংলাদেশ মানবাধিকার সুরক্ষায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে পৃথিবীতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। শুধু জাতীয় পর্যায়ে নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও বাংলাদেশ মানবাধিকার সুরক্ষায় তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। স¤প্রতি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে মানবতার চরম বিপর্যয় ঘটেছে। নির্বিচারে নারী-শিশু হত্যা ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। এসব ঘটনায় আমি বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে অত্যন্ত দুঃখ ও চরম উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি যুদ্ধ নয় আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান হবে। সব ধরনের সংঘাতের স্থায়ী সমাধান নিশ্চিতকরণ ও নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াতে আমি আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। বিশ্বের যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবে সেখানেই দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব দেশ, মানবাধিকার সংস্থা ও মানবাধিকার কর্মীরা প্রতিবাদে সোচ্চার হবেন বলেও তিনি আশা করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, মানবাধিকার শাশ্বত ও সর্বজনীন অধিকার। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বিরাজমান বিশ্ব মানবাধিকার পরিস্থিতি বিবেকবান যে কোনো মানুষকেই ব্যথিত করবে। অনেক দেশ ও সংস্থা মানবাধিকারের নামে দ্বিচারিতায় লিপ্ত হচ্ছে। বাংলাদেশে মানবাধিকার সংস্কৃতির বিকাশ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে গবেষণা ও প্রকাশনা বাড়ানো, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ওপরে সার্বক্ষণিক নজরদারি বাড়ানো, মানবাধিকারবিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টি ও অ্যাডভোকেসি কার্যক্রম পরিচালনা বাড়ানোর লক্ষ্যে কমিশনকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, মানবাধিকার সুরক্ষায় পারস্পরিক সংলাপ, সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ শিক্ষা ও প্রচারসহ সহযোগিতা বাড়ানোর সব কার্যক্রমে জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়