মৃত্যুদণ্ড থেকে বাঁচতে পরিচয় বদল, ৩০ বছর পর গ্রেপ্তার : কেরানীগঞ্জে বাবা-ছেলে হত্যা

আগের সংবাদ

‘স্বতন্ত্র’ নিয়ে নমনীয় আ.লীগ : ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি বাড়ানো প্রধান টার্গেট > সরকার চায় অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন

পরের সংবাদ

উচ্চ সুদে ঋণ নিচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দৈনিক চাহিদা মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ করছে বেশকিছু বাণিজ্যিক ব্যাংক। উচ্চ সুদে ঋণ করার কারণে ব্যাংকের কস্ট অব ফান্ড বা তহবিল খরচ বাড়বে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৮ নভেম্বর ১৭টি ব্যাংক ও দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে মোট ৭৩টি নিলাম ডাকের মাধ্যমে ৬ হাজার ৬০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যে ঋণের মেয়াদ ছিল সাত দিন। এক দিন মেয়াদি ঋণ নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বারস্থ হয় ১৩টি ব্যাংক। এখানেও ৭ হাজার ৫৩২ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে সংস্থাটি। ওইদিন আরও একটি ব্যাংককে এক দিন মেয়াদি বিনিয়োগ সুবিধাসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংক মোট ১৩ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। এই মুহূর্তে সাত দিন মেয়াদি রেপো রেট বা ঋণের সুদহার ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ। সাত দিনের অধিক মেয়াদি সুদের হার ৭ দশমিক ৭৫ এবং একদিন মেয়াদি তারল্য সহযোগিতার জন্য ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদ গুনতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২৭ নভেম্বর একবারে দশমিক ৫০ শতাংশ রেপো রেট বাড়ানোর কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ খাতে আগে নীতি সুদহার ছিল ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ, তা বেড়ে এখন হবে ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এর ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো যে টাকা ঋণ করে, তার সুদহার বাড়বে। পাশাপাশি ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকদের রাখা আমানত ও গ্রাহকদের নেয়া ব্যাংকঋণের সুদহারও বাড়বে। এর মাধ্যমে মুদ্রানীতি আরো বেশি সংকোচনমুখী করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
চলতি অর্থবছরের শুরুতেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি ঘোষণা করে। এরপর নীতি সুদহার আরো বাড়িয়ে মুদ্রানীতিকে আরো সংকোচনমুখী করে। এবার আরো এক দফায় নীতি সুদহার বাড়ানো হলো। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বাড়তি অর্থের প্রবাহ থাকলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ট্রেজারি বিল পুনরায় বিক্রি করে বা রিভার্স রেপোর (যার বর্তমান নাম স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি বা এসডিএফ) মাধ্যমে বাজার থেকে টাকা তুলে নেয়। এর নি¤œ সীমার সুদহারও দশমিক ৫০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। ফলে ২৬ নভেম্বর থেকে এর সুদহার ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ করা হয়েছে। নীতি সুদহার করিডোরের ঊর্ধ্বসীমা স্পেশাল রেপো (যার বর্তমান নাম স্টান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি বা এসএলএফ) সুদহার দশমিক ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে ৯ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বড় তারল্য সংকটে পড়া বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেশি সুদে ঋণ দেয়।

সূত্র জানায়, মুদ্রানীতির কমিটি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে যে পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে ঋণ বিতরণ করে, তার সুদের হারও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বর্তমানে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি খাতের ছয় দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় সুদের হারের ভিত্তিতে ঋণের সুদহার নির্ধারণ করে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এর ভিত্তিতে আমানতের সুদহারও নির্ধারণ করে। তবে ব্যাংকগুলোর আমানতের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ নেই।
বর্তমানে ওই ট্রেজারি বিলের গড় সুদহার ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ব্যাংকগুলো এর সঙ্গে সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ শতাংশ পর্যন্ত সুদ যোগ করে ঋণ বিতরণ করতে পারে। এর সুদহার সাড়ে ৩ শতাংশ থেকে দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ফলে ব্যাংকঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ১১ দশমিক ১৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এর আগে সুদহার ছিল ১০ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এদিকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বর্তমানে ট্রেজারি বিলের গড় সুদহারের সঙ্গে আমানতের ক্ষেত্রে আড়াই শতাংশ ও ঋণের ক্ষেত্রে সাড়ে ৫ শতাংশ যোগ করতে পারে। কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে তারাও আমানতের সুদহারের ক্ষেত্রে ট্রেজারি বিলের গড় সুদহারের সঙ্গে ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং ঋণের সুদহারের সঙ্গে ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ যোগ করতে পারবে। ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমানতের সুদহার সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ১৮ শতাংশ হবে এবং ঋণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সুদহার হবে ১৩ দশমিক ১৮ শতাংশ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়