কাপাসিয়ায় গ্রেপ্তার ৭৬, বিএনপির দাবি শতাধিক

আগের সংবাদ

ভুল চালে ব্যাকফুটে বিএনপি : দিতে হচ্ছে সহিংসতার খেসারত > নতুন করে আন্দোলনে গতি ফেরানো কঠিন হবে

পরের সংবাদ

সাপ্তাহিক পুঁজিবাজার পর্যালোচনা : শঙ্কার মধ্যেও মূলধন বাড়ল প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কায় সমাপ্ত সপ্তাহজুড়ে দেশের পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে। সপ্তাহজুড়ে যে কটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার দ্বিগুণের বেশি। ফলে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। তবে এর মধ্যেও বেড়েছে বাজার মূলধন।
প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা বেড়ে গেছে। অপরদিকে, ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ১৩ পয়েন্টের ওপরে। আর দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ৮ শতাংশের বেশি।
গত সপ্তাহজুড়েই পুঁজিবাজারে আলোচনায় ছিল ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশ। সেই সঙ্গে দুই দলের দায়িত্বশীল নেতাদের মন্তব্য। এর সঙ্গে সপ্তাহের শেষদিকে যুক্ত হয় জামায়াতের সমাবেশ। সবকিছু মিলেই রাজনৈতিক একটি অস্থিরতা সৃষ্টির আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। ফলে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে চলে যান। এতে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস গত বৃহস্পতিবারে সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি দেখা দেয় লেনদেনে খরা।
এ ব্যাপারে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, চারপাশের পরিস্থিতি দেখে মানুষ বিনিয়োগ করতে চায়। এ কারণেই পুঁজিবাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতার সক্রিয়তা কম ছিল। বিনিয়োগকারীরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।
২৮ অক্টোবর রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির আশঙ্কায় কি পুঁজিবাজারে এমন লেনদেন খরা ও দরপতন, এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটা (রাজনৈতিক অস্থিরতা) হবে কী হবে না, সেটা না। কিন্তু মানুষ দেখতে চাচ্ছে আদৌ কিছু হয় কিনা। যদি হয় এককথা, না হলে হয় তো রোববার থেকে অন্যরকম আচরণ হবে।
গত সপ্তাহের বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, সমাপ্ত সপ্তাহের চার কার্যদিবসে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৫৩টির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০২টির। আর ২১৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম অপরিবর্তী থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগ ফ্লোর প্রাইসে (সর্বনি¤œ দাম) আটকে রয়েছে। ক্রেতা না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রি করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা।
বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৮৪ হাজার ৬৮ কোটি টাকা। যা গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৮২ হাজার ১৩২ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা বা দশমিক ২৫ শতাংশ।
এদিকে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৩ দশমিক ১৮ পয়েন্ট বা দশমিক ২১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৯ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৩১ শতাংশ। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে ৪ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বা দশমিক ২৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১ দশমিক ১০ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।
আর ইসলামী শরিয়াহভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক কমেছে ১ দশমিক শূন্য ৬ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৫ দশমিক ২৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৯ শতাংশ।
প্রধান মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৫৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৫০০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৪১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বা ৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৮৩৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ২ হাজার ৫০২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। সে হিসেবে মোট লেনদেন কমেছে ৬৬৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা বা ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। মোট লেনদেন বেশি হারে কমার কারণ গত সপ্তাহে পূজা উপলক্ষে পুঁজিবাজারে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে এমারেল্ড অয়েলের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সি পার্ল বিচ রিসোর্টের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ৫৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সোনালী পেপার।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে, ফু-ওয়াং ফুড, জেমিনি সি ফুড, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ, কহিনুর কেমিক্যালস এবং ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়