৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবে জাতীয় পার্টি : গাইবান্ধায় জি এম কাদের

আগের সংবাদ

শারদীয় দুর্গোৎসব : শুভ চেতনা সঞ্চারিত হোক সবার মনে

পরের সংবাদ

স্মৃতির ঝুলি থেকে পূজার গল্প…

প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দুর্গাপূজা মানেই উৎসব। সাধারণ থেকে তারকা- উৎসবের রং সবার প্রাণেই
ছড়ায় একই রকম। শারদীয় দুর্গোৎসবের স্মৃতি নিয়ে মেলার সঙ্গে কথা বলেছেন হালের শীর্ষ তারকারা

পুরনো পূজার সেই স্মৃতি ভুলতে পারি না : চঞ্চল চৌধুরী

ছোটবেলার বেশ কয়েকটি স্মৃতি আমাকে আজো ভাবিয়ে তোলে। দুর্গাপূজা এলে স্মৃতিগুলো চোখের সামনে ভাসে। আমি এমন একটি পরিবারে জন্মেছি, যেখানে অর্থ সংকট ছিল বেশ। সারা বছর নতুন কাপড় কিনে দেয়ার সামর্থ্য ছিল না আমার বাবা-মায়ের। অনেক কষ্ট করে পূজা উপলক্ষে একটি নতুন জামা পেতাম। তাও কত কষ্ট করে! একবার নতুন জামার কাপড় বাবা খুব কষ্ট করে কিনে দিয়েছিলেন। সে কাপড় নিয়ে দর্জি দোকানে বারবার খোঁজ নিতে গিয়েছি। মনে পড়ে দর্জির দোকানে ২০ বার গিয়েছিলাম, আমার জামাটি বানানো হয়েছে কিনা জানতে। জীবনের অনেক কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে আজ এই অবস্থানে এসেও পুরনো পূজার সেই স্মৃতি ভুলতে পারি না। প্রতি বছরই পূজা এলে গ্রামের বাড়ি যাই। বাবা-মায়ের সঙ্গে সময় কাটাই। এবার বাবাকে ভীষণ মিস করব। আরেকটি বিষয় না বললেই নয়, দুর্গাপূজার অনুষ্ঠান তথা ঢাকের সুর, সংগীত, যাত্রা, নাচ-গান আমার অভিনয় জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব। বলা চলে পূজা আমার অভিনয়ের অনুপ্রেরণার উৎস বটে।

পূজা দেখতে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছিলাম : বাপ্পা মজুমদার

ছোটবেলার পূজার অনেক স্মৃতিই মনে আছে। সে স্মৃতিগুলো আজও আমাকে ভাবায়। দুর্গাপূজা এলে মা বিভিন্ন খাবার রান্না করতেন। একমাত্র পূজা এলেই আমার বন্ধুরা মিলে বাসায় একসঙ্গে খেতাম। পূজায় অনেক স্মৃতি রয়েছে। তবে বিশেষভাবে একটি স্মৃতির কথা না বললেই নয়। আমি তখন খুব ছোট। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ি। বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রথম কলকাতায় গিয়েছিলাম দুর্গাপূজা করতে। কলকাতা বড় শহর, পূজায় কত মানুষ মিলিত হয়! বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘুরতে ঘুরতে আকস্মিকভাবে আমি হারিয়ে যাই। পথ খুঁজে পাচ্ছি না! খুব ছোট ছিলাম, ভাবতে পারছিলাম না কী করব।
এত মানুষের ভিড়ে বাবা-মাকে কীভাবে খুঁজে পাব? কান্না করছিলাম। ভাবতে ভাবতে পথ যেদিকে দেখি সেদিকে হাঁটি। মণ্ডপ দেখলেই বাবা-মাকে খুঁজতে থাকি। এভাবে খুঁজতে খুঁজতেই এক সময় বাবা-মাকে পেয়ে গেলাম। পরে শুনেছি, তারাও আমাকে হন্যে হয়ে খুঁজেছেন। এরপর থেকে পূজা উপলক্ষে দূরে কোথাও আর যাইনি। ছোটবেলার সেই স্মৃতি এখনো আমার মনে পড়ে। মাঝে মাঝে খুব কষ্ট হয় এই ভেবে যে, শৈশবের সেই দিনগুলো কই? কেন ফিরে যেতে পারি না শৈশবে? এখন আর তেমন যাওয়া হয় না মণ্ডপে। তবে দুর্গাপূজার প্রভাব আমার সংগীত জীবনে পড়েছিল। পূজার সেই ঢাকঢোলের সুর আমার ভেতরে শিল্পী সত্তা তৈরিতে কিছুটা সহযোগিতা করেছে।

আড্ডা ও বেড়ানোই ছিল আসল কাজ : মৌটুসী বিশ্বাস

পূজা এলে আনন্দের পূর্ব শর্ত হচ্ছে নতুন জামাকাপড় কেনা। নতুন জামা পরে মণ্ডপে গিয়ে দুর্গা মায়ের সঙ্গে দেখা করা। এরপর বান্ধবীদের নিয়ে আড্ডা ও বেড়ানোই ছিল বাকি কাজ। ছোটবেলার পূজা এভাবেই কাটত আমার। ওই সময় গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামে পূজার আনন্দে ভাসতাম। প্রতি বছর এ দিনটির জন্য অপেক্ষা করতাম। মণ্ডপ আর বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনের বাড়ি বেড়াতেই দিন কাটত। রাত ছিল নির্ঘুম। পূজার বিশেষ খাবার আর পোশাক ছিল প্রধান আনন্দ। দিনটি এলে সুন্দর করে মণ্ডপ আর প্রতিমা সাজানো হতো। ছোট বেলায় অবাক হয়ে তা দেখতাম। এখন স্মৃতি হয়ে আছে সেই সোনালি দিনগুলো। এখন সময় বদলে গেছে। ব্যস্ততার কারণে এখন আর গ্রামের বাড়িতে যাওয়া হয় না। ঢাকাতেই পরিবার নিয়ে সময় কাটে। তবে পূজামণ্ডপে কিন্তু এখনো যাই। তবে পূজা এলে মন চায় শৈশবে ফিরে যাই; কিন্তু তা আর সম্ভব হবে না কখনো।

সবাই আমাকে দেখতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে : বিদ্যা সিনহা মিম

আগে পরিবারের সঙ্গে পূজা উদযাপন করতাম। কখনো রাজশাহী, কখনো ভোলায় পূজা কাটত। রাজশাহীতে হলে অনেক মজা হতো। সারা দিন ঘুরে বেড়াতাম। এলাকার প্রায় মণ্ডপে যেতাম। সুন্দর প্রতিমা নির্বাচন করতাম। আরতি দিতাম। কেউ কিছু বলত না। অনেক খাওয়া-দাওয়া হতো। শৈশব-কৈশোরের দিনগুলো খুব মিস করি। এখন আর সেই মজাটা নেই। কোথাও গেলেই ক্রাউড হয়ে যায়। রাজশাহী কিংবা ভোলাতে যেতে চাইলে আগেই খবর চাউর হয়ে যায়। বিড়ম্বনার মুখোমুখি হই। দেবী দর্শন বাদ দিয়ে সবাই আমাকেই দর্শনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সেলফি তুলতে চায়। মণ্ডপে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। তাই নিজেকে আনন্দিত করার মতো ব্যক্তিগত সেই সুযোগটা আর পাই না। পূজা এলে অতীতের কথা খুব মনে পড়ে। পূজার একটি স্মৃতি আমার এখনো মনে আছে। অনেক আগে একবার পূজার সময় নৌকায় উঠেছিলাম বেড়ানোর জন্য। কিন্তু নৌকায় উঠে খুব বিপদ হয়েছিল। অতিরিক্ত মানুষের কারণে নৌকা প্রায় ডুবুডুবু। পাড়ে ভিড়ার আগ পর্যন্ত আতঙ্কে ছিলাম। বেড়ানোর চেয়ে ভয়টাই বেশি কাজ করেছিল সেদিন। প্রতি বছর পূজা এলে সে ঘটনার কথা মনে পড়লে এখনো ভয় পাই। তা ছাড়া পূজা আমার অভিনয় জীবনে বিশেষ প্রভাব রেখেছে। আমি বিশ্বাস করি, মা দুর্গার আশীর্বাদ ছিল বলেই আমি আজকের অবস্থানে আসতে পেরেছি।

আমাকে দুর্গা সাজিয়ে ঠাকুরের পাশে বসিয়ে দেয়া হতো : অপর্ণা ঘোষ

প্রতি বছর দুর্গাপূজা এলেই ছোটবেলার সে গল্পটি মনে পড়ে। আমার বয়স তখন ৫ কি ৬ বছর। পূজার দিন আমাকে কুমারি সাজিয়ে দুর্গা মায়ের পাশে বসিয়ে দিতেন ঠাকুর। আর আমাকে সবাই প্রণাম করত। কুমারী পূজার জন্য আমাকে বিশেষভাবে সাজানো হতো। আমার গর্বে বুক ভেসে যেত। কারণ আমাকে কুমারী সাজানো হতো আর সবাই আমাকে দেখে সম্মান প্রদর্শন করতেন। দুর্গাপূজা এলে আরেকটি বিষয় খুব মনে পড়ে। বছরের অন্যান্য দিনে তেমন নতুন কাপড় কেনা হয় না। পূজা এলে বাবা-মায়ের কাছে আবদার করতাম নতুন কাপড় কিনে দিতে। নতুন কাপড় পরে আবার বাবা-মায়ের কাছে টাকাও চাইতাম। এখন বড় হয়েছি, সে স্মৃতিগুলো এখনো মনে পড়ে।

নস্টালজিক বিষয়গুলো চোখের সামনে ভাসে : উর্মিলা শ্রাবন্তী কর

দুর্গাপূজার অনেক স্মৃতি মনে পড়ে। ছোটবেলায় খুব কিউট ছিলাম। তাই সবাই আমাকে পূজা এলে দুর্গামায়ের সঙ্গে বসিয়ে রাখত। পূজা এলে নতুন জামাকাপড় পরে বাইরে যাওয়ার অভ্যাস ছিল। কার জামা দামি, কার জামা সুন্দর এ নিয়ে তর্ক হতো বন্ধু-বান্ধবীদের সঙ্গে। পূজা এলে নাচ-গান-যাত্রা হতো। এগুলো দেখে প্রথম প্রথম আমারও মনে হতো আমিও যাত্রা করব। কিন্তু সাহস করে বলতে পারতাম না। আমার অভিনয় জীবনে পূজার প্রভাব আছে। প্রতি বছর দুর্গাপূজা এলেই নস্টালজিক বিষয়গুলো চোখের সামনে ভাসে। মনে হয় অতীতে ফিরে যাই। কিন্তু তা তো আর সম্ভব নয়।

:: মেলা প্রতিবেদক

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়