রাজধানীর ওয়ারীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শ্রমিকের মৃত্যু

আগের সংবাদ

মুখে স্বস্তির ভাব, মনে উদ্বেগ : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনার ঝড়

পরের সংবাদ

ইলিয়াস কাঞ্চন : পথচারী পারাপারের বিষয়টি বর্তমান সড়ক আইনে অনুপস্থিত

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেছেন, পথচারীদের জন্য বাংলাদেশের সড়ক সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। প্রায় প্রতিদিনই পথচারীরা সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। পরিবহনের পাশাপাশি পথচারী পারাপার ও তাদের নিরাপদে চলাচল সড়ক নিরাপত্তার অন্যতম একটি অংশ। কিন্তু আমাদের বর্তমান আইন বা নীতিকাঠামোতে এই বিষয়টি অনুপস্থিত। এটি খুবই উদ্বেগজনক।
গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলরুমে নতুন সড়ক নিরাপত্তা আইনের দাবিতে রোড সেইফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইলিয়াস কাঞ্চন এসব কথা বলেন।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো- মানুষ বা সড়ক ব্যবহারকারী ভুল করলেও সড়ক ব্যবস্থাপনা এমন হবে, যার ফলে মানুষকে তার ভুলের সর্বোচ্চ মাসুল অর্থাৎ মৃত্যু বা পঙ্গুত্বের শিকার যেন হতে না হয়। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, আমাদের বর্তমান আইনি ও নীতি কাঠামোতে এই দর্শন সম্পূর্ণরূপে অনুপস্থিত। তবে আশার কথা হলো, বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় গৃহীত বাংলাদেশ রোড সেইফটি প্রকল্পে সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের কিছু ব্যবহার শুরু হয়েছে। আমরা এই বিজ্ঞানভিত্তিক প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই। পাশাপাশি, সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের আলোকে নিরাপদ সড়কের জন্য আলাদা আইনি কাঠামোর জোর দাবি জানাই, যাতে সড়কে মানুষের জীবনের মৃত্যু ঝুঁকি কমে এবং জীবন হয় নিরাপদ।
তিনি বলেন, সড়ক নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোকে আমলে নিয়ে একটি নতুন আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন। এর মূল কেন্দ্রে থাকবে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা। এই আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখা ও মৃত্যুর হার কমিয়ে আনার জন্য রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, আচরণগত ৫টি মূল ঝুঁকির (অতিরিক্ত গতি, মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার না করা, সিটবেল্ট ব্যবহার না করা, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো, শিশুদের জন্য নিরাপদ আসনের অনুপস্থিতি) বিষয়গুলোকে বিবেচনায় রেখে সার্বিকভাবে সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের আলোকে যথাযথ আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের সড়ক অধিকতর নিরাপদ হবে। এসব পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।
নিসচার চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের বর্তমান সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এবং সড়ক পরিবহন বিধিমালা-২০২২ মূলত সড়কে পরিবহনের জন্য আইন এবং সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিধিমালা। তাই পরিবহন ব্যবস্থাপনার জন্য তৈরি এই আইনে সাম্প্রতিক সংশোধনীর সময়ে গতি নিয়ন্ত্রণ, হেলমেট ও সিটবেল্ট ব্যবহারের মতো কিছু বিষয় সংযোজন করা হলেও তা সড়কে দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যু ও বড় ধরনের আঘাত থেকে রক্ষার করার জন্য পর্যাপ্ত নয়। সুতরাং সড়কে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের আলোকে নিরাপদ সড়ক সংক্রান্ত আলাদা আইন প্রণয়ন ও যথাযথ বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই।
সংবাদ সম্মেলনে রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশের সদস্য সংস্থা ব্র্যাকের সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার এম খালিদ মাহমুদ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রকল্প পরিচালক (রোড সেফটি) ডা. মাহফুজুর রহমান ভূঁঞা, বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও অ্যান্ড কমিউনিকেশনের (বিএনএনআরসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএইচএম বজলুর রহমান, সিআইপিআরবির পরিচালক ডা. সেলিম মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা আহ্?ছানিয়া মিশনের হেলথ সেক্টরের প্রকল্প সমন্বয়কারী শারমিন রহমান, ইমপ্রেসিভ কমিউনিকেশন লিমিটেডের (আইসিএল) ম্যানেজিং ডিরেক্টর খন্দকার হাসিবুজ্জামান, এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) সহযোগী অধ্যাপক ড. সোহেল মাহমুদ, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক বজলুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়