জামায়াতে ইসলামী : রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞার আবেদন শুনানি ৩১ জুলাই

আগের সংবাদ

ভোটের আমেজে তৃণমূলে ঈদ : শেখ হাসিনার বার্তা নিয়ে এলাকায় আ.লীগ নেতারা

পরের সংবাদ

দেশি মুরগির খামারে ফিরেছে নারীর আর্থিক সচ্ছলতা

প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মর্তুজা ফারুক রুপক, মেহেরপুর থেকে : স্বল্প বিনিয়োগ ও অল্প সময়ে দেশি মুরগি পালন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন মেহেরপুরের নারীরা। পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টির অন্যতম মাধ্যম দেশি প্রজাতির মুরগি পালন। স্বল্প বিনিয়োগ, সহজ ব্যবস্থাপনা ও ভালো বাজার দরের কারণে দেশি মুরগি পালন জেলার বিভিন্ন গ্রামের নারীদের শৌখিন ও পছন্দের পেশায় পরিণত হয়েছে।
এতে একদিকে যেমন পরিবারের মাংসের চাহিদা পূরুণ হচ্ছে অন্যদিকে বাড়তি আয়ের উৎস বলেও মনে করছেন গৃহিণীরা। নারীদের পাশাপাশি বেকার যুবকরাও এগিয়ে আসছে দেশীয় জাতের মুরগি পালনে। অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে পালন করেও লাভবান হচ্ছে।
এ ব্যাপারে গাংনী উপজেলার তেরাইল গ্রাামের দেশি মুরগি খামারি রাহেলা খাতুন জানান- তার স্বামী একজন গার্মেন্টস কর্মী। তিনি বাড়িতে বসে অলস সময় পার করছিলেন। পরে দেশীয় প্রজাতির মুরগি পালন শুরু করেন। প্রথমে ১০টি দেশীয় জাতের মুরগির বাচ্চা দিয়ে খামার শুরু করেছিলেন। এখন তার খামারে প্রায় দুই শতাধিক বড় মুরগি রয়েছে। পরিবারের মাংসের চাহিদা পুরন করেও প্রতিমাসে প্রায় ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকার মুরগি বিক্রি করে সংসারের সচ্ছলতা এনেছেন।
গাংনীর গাড়াডোব গ্রামের ফরিদুলের স্ত্রী সুরাইয়া খাতুন জানান, গতানুগতিক সনাতন পদ্ধতিতে দেশি মুরগি পালন করে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারছিলেন না। সনাতন পদ্ধতিতে বাচ্চা মৃতের হার অনেক বেশি। ব্রুডিং (৭-১০ দিন বয়সী মুরগির বাচ্চাকে তাপ প্রদান করা) ঠিকঠাক না হওয়ায় বাচ্চার শারীরিক বৃদ্ধি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পেত। এছাড়া বিভিন্ন সংক্রামক রোগ লেগেই থাকত। বিভিন্ন শিকারি প্রাণির আক্রমণে মুরগির বাচ্চা মৃত্যুর হার ছিল অনেক বেশি। বিশেষ আবাসন নিশ্চিত করে দেশি মুরগির বাচ্চা লালন পালন করায় এবং রোগ প্রতিরোধে সময়মতো টিকা প্রদান নিশ্চিত করায় মুরগির বাচ্চা মৃত্যুর হার নেমে এসেছে প্রায় শূন্যের কোঠায়। এখন তার খামারে দেড় শতাধিক দেশীয় জাতের মুরগি রয়েছে।
তেরাইল গ্রামের ইউপি সদস্য মাসুম পারভেজ জানান, দেশীয় জাতের মুরগি পালন একদিকে যেমন দরিদ্র মানুষ আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন অপরদিকে তাদের দৈনন্দিন পুষ্টি চাহিদাও পূরণ করতে সক্ষম হচ্ছেন। স্থানীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তর হতে কারিগরি সহায়তা (যেমন :- ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন আয়োজন করা, চিকিৎসা সহায়তা প্রভৃতি) পেলে এসব ক্ষুদ্র খামারিরা উদ্যোক্তা হিসাবে গড়ে উঠবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ ব্যাপারে মেহেরপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সাঈদুর রহমান জানান, জেলায় মাংসের চাহিদা ও পুষ্টিগুণ বিবেচনায় দেশি মুরগির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্রয়লার ও লেয়ারের খামার থাকলেও দেশি মুরগির খামার তেমন উল্লেখযোগ্য নয়। তাই দেশিও মুরগির জাত উন্নয়ন ও বাজারের চাহিদা বিবেচনা করে প্রান্তিক পর্যায়ে দেশি মুরগির খামার আরো বাড়ানো উচিত।
সরকারি সহায়তার পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোও (এনজিও) প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে নানা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যাচ্ছে। দেশের প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি এনজিওগুলোরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়