ঠিকানা নিয়ে ৩২ বার তদন্তে উষ্মা হাইকোর্টের

আগের সংবাদ

সেন্টমার্টিন দ্বীপ লিজ দিয়ে ক্ষমতায় বসবে না আ.লীগ > সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী : অন্য দেশের সঙ্গেও অর্থ বিনিময়ের সুযোগে ব্রিকসে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত

পরের সংবাদ

গোল্ডেন কালার

প্রকাশিত: জুন ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সেই কখন থেকে স্কুলমাঠে ঘুরছেন মায়িদার দাদাভাই। কিন্তু নাতিনকে খুঁজেই পাচ্ছেন না। বিশাল মাঠের এ কোণা, ও কোণা, মাঝখান- কোনো অংশই বাদ রাখেননি। কিন্তু মায়িদার দেখা নেই। দেখা মিলবেই বা কী করে? বিশাল মাঠ। ত্রিকোণাকৃতির মাঠটির তিন কোণে পাকা হাঁটার পথ। স্কুল ছুটির পরপরই পুরো শুরু হয় কয়েকশ শিশুর ছোটাছুটি আর খেলাধুলা। এক জায়গায় বসে খেলার দল খুব কমই। বেশির ভাগই এদিক-সেদিক দৌড়াদৌড়ির খেলায় মগ্ন।
মায়িদার দাদাভাই আজই প্রথম এসেছেন তাকে নিতে। প্রতিদিন বাবা অথবা মা এসে নিয়ে যান। তারাও তাকে খুঁজে পান না। প্রথম প্রথম খুঁজলেও এখন আর সে চেষ্টাও করেন না। কারণ মাঠের কোন অংশে মায়িদারা খেলছে তা বোঝার উপায় নেই। তাই মেয়ে নিজ থেকেই দেখা দেয়। আজ তাকে নিতে আসবে মা- সেটাই জানত সে। দাদাভাই যে আসতে পারেন- তার মাথায়ই আসেনি। তাই সেও অপেক্ষায়। খেলার ফাঁকে ফাঁকে একটু পরপর গেটের দিকে নজর রাখছে- মা এসেছেন কিনা। আর না এলে তো পোয়াবারো। যতক্ষণ কেউ না আসবে ততক্ষণই তার খেলার সুযোগ।
দাদাভাই অনেক খুঁজে ব্যর্থ হয়ে মোবাইলে কল দেন মায়িদার মাকে। জানতে চান, ‘মাঠের কোন অংশে ওরা খেলে’। উত্তর পেলেন, ‘নির্দিষ্ট নেই।’ বলে দিলেন, ‘মাঠের পাশে কোনো এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে। মায়িদাই তাকে খুঁজে নেবে।’ এ তো মহা মুশকিলে পড়া গেল। আধঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। শিশুদের আনাগোনাও খুব একটা কমেনি। নিরুপায় হয়ে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকে পুরো মাঠে চোখ বুলাচ্ছেন রহমান সাহেব।
স্কুল ছুটির পরপরই মাঠজুড়ে শুরু হয় হৈ-হুল্লোড়। দল বেঁধে নানান খেলায় মেতে ওঠে শিশুরা। কেউ খেলছে ‘কানামাছি’, কেউবা ‘কুমির ডাঙা’। আবার কখনো ‘রং রং’, কখনো বা ‘লুকোচুরি’ অথবা ‘চোর-পুলিশ’। মায়িদারা এক খেলা শেষ করে মেতে উঠছে আরেকটায়। একই ক্লাসের অর্জয়ী, সায়নি, রাজন্যা, নিংথী, ওয়ারিয়া, আয়েশা, আর্য, মৃম্ময়ী ছাড়াও আছে নিংথীর বোন আদ্রিকা আর ওয়ারিয়ার বোন ইরা।
তারা এখন খেলছে ‘রং রং’। একেকবার একেক রঙের নাম বলে আর সেই রঙের বস্তু আগে খুঁজে বের করতে শুরু হয় দৌড়াদৌড়ি। একবার রঙের নাম বলার পালা এলো মায়িদার। চারপাশটায় চোখ বুলিয়ে উচ্চারণ করল ‘গোল্ডেন কালার’। বলতে না বলতেই সবাই হুড়মুড়িয়ে ছুটল সেই রঙের একটি পাঞ্জাবি ধরতে। আর সেই পাঞ্জাবি পরা লোকটিই ছিলেন মায়িদার দাদাভাই। ৮/১০টা বাচ্চার মধ্যে মাস্ক পরা নাতিনকে চিনতেও পারেননি তিনি। কিন্তু মায়িদার নজর আগে না পড়লেও এবার পড়ল তার চেহারার দিকে। সে তো অবাক! দাদাভাই এলেন কোত্থেকে!
হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন দাদাভাই। কিন্তু তার অপেক্ষার পালা শেষ হলো না। মায়িদার আবদার- দাদাভাই আরেকটু খেলি, প্লিজ…।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়