পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় : সবাই সার্বভৌমত্বকে সম্মান দেখাবে- এই প্রত্যাশা বাংলাদেশের

আগের সংবাদ

মেয়র প্রার্থীদের প্রতিশ্রæতির ফুলঝুরি : ‘পরিকল্পিত সিলেটে’ প্রাধান্য

পরের সংবাদ

মূলধন ঘাটতিতে ১১ ব্যাংক : বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন

প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : চলতি বছরের মার্চ শেষে ১১ ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা। মূলত ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ বাড়ায় মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে ব্যাংকগুলো- এমনটিই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকের তুলনায় মার্চে ঘাটতি আরো ২ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা বেড়েছে। ডিসেম্বরে ব্যাংক খাতের মূলধন ঘাটতি ছিল ৩০ হাজার ৭০২ কোটি টাকার মতো। তথ্য মতে, রাষ্ট্র মালিকানাধীন ও বিশেষায়িত ৯ ব্যাংকের মধ্যে ৭টি ব্যাংকই বর্তমানে মূলধন ঘাটতিতে আছে। এসব ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ২৮ হাজার ১১৭ কোটি টাকা। এছাড়া মূলধন ঘাটতির তালিকায় রয়েছে ৪টি বেসরকারি ব্যাংক।
এ ব্যাপারে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন-রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি কমাতে সরকারকে অর্থায়ন করতে হবে। তা না হলে তাদের সংকট কমবে না। তবে নতুন করে অর্থায়ন করা হলে সেগুলো যেন আবার খেলাপি হয়ে না যায়, সরকারকে সেটিও লক্ষ্য রাখতে হবে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে সুশাসন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি ব্যবস্থাপনার দিকেও নজর দিতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এদিকে খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ প্রতিমাসেই বাড়ছে। খেলাপি ঋণ বাড়ায় প্রভিশনও বাড়ছে, ফলে ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি বাড়ছে। আন্তর্জাতিক নীতিমালার আলোকে ব্যাংকগুলোকে মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। বাংলাদেশে বর্তমানে ব্যাসেল-৩ নীতিমালার আলোকে ব্যাংকের রিস্ক ওয়েটেড অ্যাসেট-এর ১০ শতাংশ অথবা ৪০০ কোটি টাকার মধ্যে যেটি বেশি সে পরিমাণ মূলধন রাখতে হচ্ছে। কোনো ব্যাংক এ পরিমাণ অর্থ সংরক্ষণে ব্যর্থ হলে মূলধন ঘাটতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
নিয়মানুযায়ী ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের জোগান দেয়া অর্থ ও মুনাফার একটি অংশ মূলধন হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়। কোনো ব্যাংক মূলধনে ঘাটতি রেখে তার শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে পারে না। এছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলো কোনো স্থানীয় ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন করার আগে ব্যাংকের মূলধন পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে থাকে। ব্যাংক খাতে ক্যাপিটাল অ্যাডিকুয়েসি রেশিও ডিসেম্বরের ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ থেকে কমে মার্চে হয়েছে ১১ দশমিক ২৩ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ৩ মাসে ব্যাংক খাতের সারপ্লাস ক্যাপিটাল ৭ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা কমে গেছে। ক্যাপিটাল শর্টফলে থাকা ব্যাংকগুলো বাদে বাকি ৫০টি ব্যাংকের মধ্যে মাত্র ১৩টি ব্যাংকের সারপ্লাস ক্যাপিটাল বেড়েছে গত ৩ মাসে। বাকিগুলোর কমেছে। মার্চ শেষে ব্যাংকখাতের সারপ্লাস ক্যাপিটাল দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডিসেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংকগুলো অনেক খেলাপি ঋণ ২-৩ মাসের জন্য রিসিডিউল করে। এর কারণ হলো, ডিসেম্বর শেষে তাদের বার্ষিক প্রতিবেদন তৈরি করতে হয়, সেখানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কম দেখাতেই রিসিডিউল করা হয়।
তবে জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারির দিকে এসব রিসিডিউলের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। ফলে মার্চ প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ এবং রিস্ক ওয়েটেড অ্যাসেট বাড়ে। এজন্য ক্যাপিটাল শর্টফলও বাড়ে। এছাড়া যেসব ব্যাংকের শর্টফল নেই, তারাও একই প্রক্রিয়ায় খেলাপি ঋণ কমিয়ে দেখায়। তাই মার্চ প্রান্তিকে এসব ব্যাংকের সারপ্লাস ক্যাপিটাল কমে যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী লোন রিসিডিউল করার কারণে গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ কমেছিল প্রায় ১৩ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। তবে রিসিডিউল করা লোনের মেয়াদ শেষ হয়ে সেগুলো ফের খেলাপি হয়ে যাওয়ায় মার্চ প্রান্তিকে মোট খেলাপি ঋণ ডিসেম্বরের তুলনায় ১১ হাজার কোটি টাকা বেড়ে হয় ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২১ কোটি টাকা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়