প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকদের আন্দোলন দুদিন স্থগিত : প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার আশ্বাস বিএসএমএমইউ উপাচার্যের

আগের সংবাদ

আনন্দে পাঠ উৎসবে মূল্যায়ন : ষষ্ঠ ও সপ্তমে চলছে ‘ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন উৎসব’, ঈদুল আজহার পর মূল্যায়নের বিশ্লেষণ

পরের সংবাদ

সংকটেও বাড়ছে কোটিপতি

প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : উচ্চ মূল্যস্ফীতিসহ বৈশ্বিক ও আভ্যন্তরীণ অস্থিরতায় দেশের সাধারণ মানুষ ধারদেনা করে জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও বাড়ছে কোটিপতির সংখ্যা। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোতে কোটি টাকার বেশি রয়েছে; এমন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হিসাবের সংখ্যা ১ লাখ ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ব্যাংকগুলোতে এক বছরের ব্যবধানে কোটিপতি হিসাব বেড়েছে ৬ হাজার ৫৯৫টি।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূল্যস্ফীতির চাপে সাধারণ মানুষ সংসারের ব্যয় মেটাতে পারছে না। ছোট ছোট প্রতিষ্ঠান ব্যবসা করতে পারছে না। এমন অবস্থায় ব্যাংক টাকা জমানো দূরের কথা, অনেকে আগের জমানো অর্থ তুলে ব্যয় মেটাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতেও একশ্রেণির মানুষের আয় বেড়েছে। এরা হচ্ছে বিত্তশালী বা বড় প্রতিষ্ঠান। এটাকেই দেশে বৈষম্য বাড়ার বহিঃপ্রকাশ বলছেন অর্থনীতিবিদরা।
মঙ্গলবার প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত ব্যাংক খাতে মোট আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি ১১ লাখ ৩৭ হাজার ২৫৬টি। যেখানে জমা ছিল ১৬ লাখ ১৩ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে এমন ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা রয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ১৯২টি। কোটি টাকার ওপর এসব হিসাবে জমা আছে ৬ লাখ ৯০ হাজার ৮৭৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা। তিন মাস আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক খাতে মোট আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ১৩ কোটি ৬২ লাখ ৪৯ হাজার ৭৬৪টি। যেখানে জমা ছিল ১৫ লাখ ৮৮ হাজার ১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে এমন ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৯ হাজার ৯৪৬টি। কোটি টাকার ওপর এসব হিসাবে জমা ছিল ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা। এক বছরে আগে ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৭৩ লাখ ৫২ হাজার ৮৯৩। যাদের হিসাবে জমা ছিল ১৫ লাখ ১৪ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা। ওই সময় কোটি টাকার বেশি হিসাব ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ৫৯৭টি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, কোটি টাকার হিসাব মানেই কোটিপতি ব্যক্তির হিসাব নয়। কারণ ব্যাংকে ১ কোটি টাকার বেশি অর্থ রাখার তালিকায় ব্যক্তি ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। আবার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কতটি ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে, তার কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। ফলে এক প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির একাধিক হিসাবও রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কোটি টাকার হিসাবও রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ১০টি ক্যাটাগরিতে কোটি টাকার আমানতকারীদের হিসাব করেছে। ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ী, ১ কোটি ১ টাকা থেকে ৫ কোটি টাকার আমানতকারীর হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৭ হাজার ১০১টি। যাদের হিসাবে জমা টাকার পরিমাণ ১ লাখ ৮১ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা। ৫ কোটি থেকে ১০ কোটির মধ্যে রয়েছে ১২ হাজার ৪০টি হিসাব। তাদের হিসাবে জমার পরিমাণ ৮৪ হাজার ৬৫১ কোটি টাকা। এছাড়া ১০ কোটি ১ থেকে ১৫ কোটির টাকার হিসাব রয়েছে ৩ হাজার ৮৭৫টি, ১৫ কোটি ১ টাকা থেকে ২০ কোটির মধ্যে ১ হাজার ৮৭৪টি, ২০ কোটি ১ টাকা থেকে ২৫ কোটির মধ্যে ১ হাজার ১৪৫টি, ২৫ কোটি ১ টাকা থেকে ৩০ কোটির মধ্যে হিসাব রয়েছে ৮৮৭ জনের, ৩০ কোটি ১ থেকে ৩৫ কোটি টাকার মধ্যে ৪৯৯টি এবং ৩৫ কোটি ১ টাকা থেকে ৪০ কোটির মধ্যে রয়েছে ৩২৭ আমানতকারীর হিসাব। ৪০ কোটি ১ থেকে ৫০ কোটি টাকার হিসাব সংখ্যা ৬৪৬টি। এ ছাড়া ৫০ কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৫৮টি। এসব হিসাবে জমার পরিমাণ ৬ লাখ ৯০ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি আমানতকারী ছিল ৫ জন, ১৯৭৫ সালে তা ৪৭ জনে উন্নীত হয়। ১৯৮০ সালে কোটিপতিদের হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ৯৮টি। এরপর ১৯৯০ সালে ৯৪৩টি, ১৯৯৬ সালে ২ হাজার ৫৯৪, ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২টি, ২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭টি এবং ২০০৮ সালে ছিল ১৯ হাজার ১৬৩টি। ২০২০ সালে ডিসেম্বর শেষে দাঁড়ায় ৯৩ হাজার ৮৯০টিতে।
২০২১ সালের ডিসেম্বর বেড়ে কোটিপতি হিসাব দাড়ায় ১ লাখ ১ হাজার ৯৭৬টিতে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কোটা টাকার হিসাবের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৯ হাজার ৯৪৬টি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়