সংসদে বিল উত্থাপন : আমানত সুরক্ষা ট্রাস্ট তহবিল গঠন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক

আগের সংবাদ

খুলনা-বরিশালে ‘উন্নয়ন’ ম্যাজিক : খুলনার উন্নয়ন ভাবনা ও ব্যক্তি ইমেজেই খালেকের বাজিমাত

পরের সংবাদ

সরকারি প্রকল্পে মিলবে আম রপ্তানির নিশ্চয়তা

প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৩, ২০২৩ , ১২:৫৩ পূর্বাহ্ণ

আতিক ইসলাম সিকো, শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) থেকে : আমের রাজধানী হিসেবে পরিচিত উত্তরাঞ্চলের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও রয়েছে এ জেলার সুমিষ্ট আমের কদর। তবে স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণের দিক দিয়ে অতুলনীয় হলেও আম রপ্তানিতে এখন পর্যন্ত মেলেনি কাক্সিক্ষত সাফল্য। বেসরকারি পর্যায়ে কিছু উদ্যোগ থাকলেও বড় পরিসরে রপ্তানির সুযোগ হয়নি এ অঞ্চলের আম চাষিদের। এমন প্রেক্ষাপটে জেলায় প্রথমবার সরকারিভাবে চালু হওয়া ‘রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্প’ আশা দেখাচ্ছে আম চাষি ও সংশ্লিষ্টদের।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, আমের উৎপাদন বেশি হলেও কাঙ্খিত মূল্য না পেয়ে হতাশায় পড়েন চাষিরা। ফলস্বরূপ বাগানের পুরোনো আমগাছ কেটে ফেলছেন তারা। নিরাপদ আম উৎপাদন করেও রপ্তানি করতে না পেরে প্রতিবছর লোকসানের মুখে পড়েন হাজারো আম চাষি। তবে এবার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে চালু হওয়া সরকারি প্রকল্পে মিলবে আম রপ্তানির নিশ্চয়তা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, প্রকল্পের আওতায় উত্তম কৃষিচর্চা (গুড অ্যাগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিস বা গ্যাপ) অনুসরণ করে নিরাপদ আম উৎপাদন করা হচ্ছে। পুরো জেলায় ২০১ জন চাষি প্রকল্পটিতে জড়িত আছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৪১ জন, শিবগঞ্জ উপজেলায় ৬৪ জন, গোমস্তাপুর উপজেলায় ৩২ জন, নাচোল উপজেলায় ৩৫ জন ও ভোলাহাট উপজেলায় এ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত আছে ২৯ জন চাষি। ইতোমধ্যে এসব আম চাষির সার, কীটনাশক, ফ্রুট ব্যাগ ও নগদ অর্থ প্রদানের পাশাপাশি প্রশিক্ষণও দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
সদর উপজেলার বাসিন্দা আবদুল জব্বার। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের পালশা এলাকায় রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের সহায়তায় আমের বাগান করেছেন। ভোরের কাগজকে তিনি বলেন, প্রথম থেকেই গতানুগতিক আমের বাগান করে আসছি। এবার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ নিয়ে বালাইনাশক কম স্প্রে করে আম উৎপাদন করছি। নতুন পদ্ধতি অনুসরণ করে ভালো ফলন হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বিদেশে আম রপ্তানি করতে গেলে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের সাহায্যের প্রয়োজন হয়। যেহেতু সরকারিভাবে এ প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে তাই আশা করছি এবার বিদেশে আম পাঠাতে সমস্যা হবে না। বিপ্লব আলী নামে আরেক আম চাষি জানান, নিরাপদ আম উৎপাদন করতে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তারা যেভাবে বাগান পরিচর্যা করতে বলেছেন, সেভাবে বাগান দেখভাল করা হচ্ছে। আমেরও ভালো ফলন হয়েছে। উদ্যোগটি কার্যকর করতে কৃষি উদ্যোক্তাদের আরো সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে বলে মত দিয়েছেন জেলা কৃষি এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুঞ্জের আলম মানিক। তিনি বলেন, এতে করে উদ্যোক্তাদের কাঙ্খিত দামে আম বিক্রি করা সম্ভব হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. পলাশ সরকার ভোরের কাগজকে বলেন, চলতি বছরই রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ২০১ জন আমচাষি রয়েছেন। এদের সবাইকে একটি করে প্রদর্শনীসহ প্রশিক্ষণ, সার, কীটনাশক, বালাইনাশক ফ্রুট ব্যাগ দেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে এ অঞ্চলের কৃষকরা নতুন পদ্ধতিতে আম চাষাবাদ করে বিদেশে রপ্তানি করতে পারবেন।
তিনি আরো বলেন, জেলায় রপ্তানিকারকদের আকৃষ্ট করতে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বিগত বছরগুলো থেকে এবার সবচেয়ে বেশি রপ্তানিকারক এসেছে এ জেলায়। আশা করছি এবার বিগত বছরগুলোর চেয়ে বেশি আম রপ্তানি করতে পারবেন চাষিরা। আমাদের নির্ধারিত আম বাগানগুলো নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। এসব আম রপ্তানির নিশ্চয়তা রয়েছে। তিনি বলেন, বিদেশে আম রপ্তানিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সুদৃষ্টি রয়েছে এবার। কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই এবার এ জেলার আম বিদেশে পাঠানো সম্ভব হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়