প্রকাশিত: জুন ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
৫০ বছরে পা রেখেছে জনপ্রিয় ব্যান্ডদল ‘সোলস’। রাজধানীর একটি রেস্তোরাঁয় সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যেখানে ব্যান্ডের সদস্যরা উন্মোচন করেন নতুন লোগো। এছাড়া নতুন গান মুক্তির ঘোষণা দিয়েছে ব্যান্ডটি। সোলসের প্রধান ভোকাল পার্থ বড়ুয়ার সঙ্গে কথা বলে সোলস এবং ব্যান্ড সংগীত নিয়ে জানাচ্ছেন
সিমরান রহমান
সোলসের ৫০ বছর পূর্তিতে আপনার অনুভূতি কী?
সোলস এত বছর ধরে টিকে আছে, আমাদের জন্য এটা খুবই অসাধারণ অনুভূতি। এটা আমাদের দলের একটা ড্রিম প্রোজেক্ট। আমরা অনেক দিন ধরে আজকের দিনটির অপেক্ষা করছিলাম। সেলিব্রেশনটা এভাবেই করতে চেয়েছি। আমাদের বেশ কিছু প্ল্যান আছে। বড় আকারে এর কাজ শুরু হবে।
সোলসের নতুন গান আসছে না কেন?
আমরা আসলে ইচ্ছা করেই মুক্তি দিইনি। আমাদের প্ল্যান ছিল সোলসের যখন ৫০ বছর হবে, তখন একসঙ্গে আমরা গানগুলো ছাড়ব। এ জন্যই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। আমরা একটি নির্দিষ্ট সময়ে গানগুলো মুক্তি দেব। প্রতিটি গান মুক্তির জন্য তারিখ নির্ধারণ করে সবাইকে জানিয়ে দেব এবং সেদিনই গানগুলো মুক্তি পাবে। শ্রোতারা সেগুলো শুনতে পারবে।
ক্যাসেটের সোনালি যুগ কি মিস করেন?
হ্যাঁ, অনেক বেশি মনে পড়ে সেই দিনগুলো। সে সময়ে আমাদের অনেক স্মৃতি আছে। সেই যুগ আর এই যুগে অনেক পার্থক্য। তখন গানগুলো একটা টেপে রেকর্ডিং করা হতো। তখন কাট, কপি-পেস্টের কোনো অপশন ছিল না। প্রতিবারই নতুন করে গান করতে হতো। প্রতিটি বাদ্যযন্ত্র বাজাতে হতো। একটি নির্ধারিত সময়ে স্টুডিওতে যেতে হতো। অনেক সময় নিয়ে কাজ করতে হতো। এখন তো সবার ঘরে ঘরে স্টুডিও। কাট, কপি-পেস্ট করা যায়। টিউন করা যায়। কিন্তু ক্যাসেটের যুগে এই জিনিসগুলো ছিল না। তখন কাজ করা খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল। একটা মিনিমাম লেভেলের মিউজিশিয়ান না হলে কেউ স্টুডিওতে যেত না। যাওয়ার সাহসও পেত না। এখন তো সবকিছু অনেক সহজ হয়ে গেছে। এখন মাউস দিয়েও মিউজিক করা যায়। পার্থক্য এ জায়গাতেই।
‘মন শুধু মন ছুঁয়েছে’ গান এখনো মানুষ শোনে, সে সময়ের এ রকম অসংখ্য গান রয়েছে। কিন্তু বর্তমান সময়ের গানগুলো দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে না কেন?
‘মন শুধু মন ছুঁয়েছে’ গানটি লিখেছেন নকিব খান আর সুর করেছেন নকিব খানের বড় ভাই জিলু খান। আর গান যেগুলো ভালো হয়, সেগুলো শ্রোতাদের হৃদয়ে থেকে যায়। যেসব গান ভালো হয় না, সেসব থাকে না। আগেও অনেক গান হতো কিন্তু সব গান দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। যেই গানগুলো ভালো ছিল, সেই গানগুলোই টিকে গেছে। যে গানগুলো ভালো ছিল না, সেগুলো হারিয়ে গেছে সময়ের শ্রোতে। এখনো তাই হচ্ছে।
সবাই আজকাল ভাইরালের পেছনে ছুটছে এবং অশ্লীল গানে মানুষের আকর্ষণ এত বেশি কেন?
আমাদের একটি বদ অভ্যাস আছে। যে কোনো কিছু পেলে সেটি নষ্ট না হওয়া পর্যন্ত আমরা ছাড়ি না। একটা ডিজিটাল জায়গা, একটা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের এডভান্টেজ আছে। এই সুবিধাটি নিতে গিয়ে যদি সেটি নিয়ে বাড়াবাড়ি করি, তাহলে তো নষ্ট হবেই। ব্যাপারটি নিয়ে সেভাবে কখনো ভাবিনি। যারা ভাবে, তারা ভালো বলতে পারবে।
পুরনো গানগুলো নতুনভাবে মুক্তির পরিকল্পনা আছে?
কিছু পুরনো গান আমরা রি-রেকর্ড করব। তেমন বেশি না। কিছু গান হয়তো তখন মানুষ সেভাবে শোনেনি। ওই গানগুলো আরেকটু নতুন করে এনে আরেকবার মুক্তি দেব। গানগুলো মানুষের সামনে নিয়ে আসব।
আগের মতো এখন আর কনসার্ট হয় না কেন?
কনসার্ট করতে হলে অনুমতি নিতে হয়। এসব বিষয় প্রশাসনের হাতে থাকে। অনেক সময় ইচ্ছা থাকলেও অনেক কিছু করা যায় না। প্রশাসনের পারমিশন থাকতে হয়। ডিসি, পুলিশ, কমিশনার এদের সবার অনুমতি লাগে। আর আমাদের অনেক প্ল্যান আছে। আমরা এখনো পুরোপুরি গুছিয়ে উঠতে পারিনি। প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের টার্গেট আছে স্টেডিয়ামে বড় শো করার। অনেক ধরনের খরচের ব্যাপার আছে। স্পন্সরের ব্যাপার আছে। মাত্র তো নতুন করে শুরু করলাম। সবই হবে ধীরে ধীরে।
ব্যান্ডগুলো আগের মতো সরব নয় কেন?
ব্যান্ড সংগীতের বর্তমান অবস্থা আমার কাছে ভালোই মনে হয়। কনসার্ট কম হলেও ব্যান্ডগুলো তাদের কাজ করে যাচ্ছে। প্রস্তুতি নিচ্ছে। নতুন নতুন গান মুক্তি দিচ্ছে। তারা গান গেয়ে যাচ্ছে, বাজিয়ে যাচ্ছে। সবকিছুর চড়াই-উতরাই আছে। আবার ভালো হবে।
শ্রোতাদের উদ্দেশে কোনো বার্তা দিতে চান?
আমাদের সঙ্গে ছিলেন এতদিন, আমাদের সঙ্গে থাকবেন। আমরা আপনাদের গান শোনাব, গান রিলিজ করব। অনেক প্ল্যান আছে। আমাদের সাপোর্ট দেবেন, আমাদের পাশে থাকবেন।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।