আতিক ইসলাম সিকো, শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) থেকে : চাঁপাইনবাবগঞ্জকে বলা হয় আমের রাজধানী। কারণ শুধুমাত্র আমের জন্যই জেলাটির একটি বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। বাংলাদেশেও অন্য জেলার তুলনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের কদর বেশি। শুধু তাই নয়, এ সুস্বাদু আম দেশের সীমানা ছাড়িয়ে এবার বিদেশে যাচ্ছে। গত মঙ্গলবার চলতি মৌসুমে বরেন্দ্রভূমির সুস্বাদু আম সর্বপ্রথম রপ্তানি হলো বিদেশে। ৪ টন ক্ষীরসাপাত সুইডেনে ও ৩ টন আম ইংল্যান্ডে রপ্তানি করা হয়েছে।
জানা গেছে- নাচোল উপজেলার মেসার্স এমবিবি এগ্রো নামে ফল ও সবজি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানটি এসব আম রপ্তানি করছে। চলতি মৌসুমে ১০০ টনের বেশি আম বিদেশে রপ্তানি করার আশা করছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্ত্বাধিকারী বদরুদ্দোজা ভোরের কাগজকে বলেন, গত ২০১২ সাল থেকে আম ও বিভিন্ন ধরণের সবজি সুইডেনে রপ্তানি করে আসছি। এবারো করছি। এ বছর এখন পর্যন্ত ৪ টন আম সুইডেনে ও ৩ টন আম ইংল্যান্ডে পাঠিয়েছি। মূলত আমি সুইডেনেই থাকি। সুইডেনের স্টকহোমের বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা আমাকে আমের অর্ডার দিয়ে রাখে। পরে আমি নাচোল থেকে আমগুলো প্যাকিং করে পাঠিয়ে দিই। সুইডেন বিমানবন্দর থেকেই আমগুলো তাদের কাছে পৌঁছে যায়।
তিনি আরো বলেন, সুইডেনে আমি ছয় মাস বাংলাদেশের সবজি বিক্রি করি। আর অন্য ছয় মাস ইতালির। আমের সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বিক্রি করছি। বাংলাদেশ থেকে লাউ ও পটোলসহ প্রায় ২০ ধরনের সবজি রপ্তানি করে থাকি। এখন আমার নিজস্ব বাগানের আম বিদেশে পাঠাচ্ছি। আমার বাগানের আম শেষ হলে কিনে রপ্তানি করব।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক পলাশ সরকার ভোরের কাগজকে বলেন, বদরুদ্দোজার বিষয়টি আমরা দেখভাল করি। বিদেশে আম পাঠানোর জন্য কৃষি বিভাগ সার্বিক সহযোগিতা করছে। বর্তমানে আমরা আম রপ্তানির পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা করছি। যেহেতু এই জেলার আম রপ্তানিযোগ্য ও সম্পূর্ণ কেমিক্যালমুক্ত, তাই আশা করছি বিদেশে আম রপ্তানির পরিমাণ আরো বাড়বে। তিনি আরো বলেন, এবার জেলায় ৩৭ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ হয়েছে। আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ২৫ হাজার টন। উল্লেখ্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলতি বছর ৩৭ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এ বছর আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ২৫ হাজার টন।
গত বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৭ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ হয়। গত মৌসুমে জেলায় আম উৎপাদন হয় ৩ লাখ ২৫ হাজার টন। ২০২১ সালে জেলায় ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে আড়াই লাখ টন এবং তার আগের বছর ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৪৫ হাজার টন আম উৎপাদন হয়।