রাজউক : মুছে যাওয়া সাড়ে ২৬ হাজার নথি উদ্ধার

আগের সংবাদ

বাজারে ফের সিন্ডিকেটের থাবা! : কারসাজি করে বাড়ানো হচ্ছে দাম, নজরদারি জোরদারের তাগিদ বিশ্লেষকদের

পরের সংবাদ

রপ্তানি আয়ে বড় ধাক্কা

প্রকাশিত: মে ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পর রপ্তানি আয়েও বড় ধাক্কা লেগেছে। গত এপ্রিল মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে ৩৯৫ কোটি ৬০ লাখ (৩ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছেন রপ্তানিকারকরা। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ দশমিক ৫২ শতাংশ কম। আর আগের মাস মার্চের চেয়ে কম প্রায় ১৫ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) বুধবার পণ্য রপ্তানি আয়ের এই হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ঈদের মাস হওয়ার পরও গত এপ্রিলে প্রবাসী আয় এসেছে ১৬৮ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। গত বছরের এপ্রিলে প্রবাসী আয় এসেছিল ২০১ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত বছরের এপ্রিলের তুলনায় এ বছরের এপ্রিলে প্রবাসী আয় কমেছে ১৬ দশমিক ২৬ শতাংশ।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে অর্থাৎ জুলাই-এপ্রিল সময়ে ৪ হাজার ৫৬৭ কোটি ৭৬ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত বছরের এই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ৪ হাজার ৩৩৪ কোটি ৪৩ লাখ ডলারের পণ্য। অর্থাৎ গত অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসের তুলনায় এবার পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে তৈরি পোশাক, প্লাস্টিক পণ্য ও চামড়াবিহীন জুতা রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। অন্যদিকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হিমায়িত খাদ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল ও প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি কমে গেছে।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে ৩ হাজার ৮৫৭ কোটি ৭৫ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ শতাংশ বেশি। এদিকে গত মার্চ পর্যন্ত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় ছিল। তবে এপ্রিল শেষে এই খাতের রপ্তানিও নেতিবাচক ধারায় চলে গেছে। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ১০০ কোটি ডলারে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দশমিক ৫২ শতাংশ কম।
তবে রপ্তানিকারকরা বলছেন, বরাবরই দুই ঈদের মাসে রপ্তানি আয় কম আসে। এবার তাই হয়েছে। ২২ এপ্রিল দেশে ঈদ উদযাপিত হয়েছে। এর আগে-পরে মিলিয়ে ৮-১০ দিন রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকসহ সব কারখানা বন্ধ ছিল। সে কারণে পণ্য উৎপাদন হয়নি; রপ্তানিও হয়নি। তাই এপ্রিল মাসে আয় কমেছে। তবে বর্তমান বিশ্ব পেক্ষাপটও এই কমার কারণ বলে জানান তারা।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, বৈশ্বিক বাজারে পোশাকের চাহিদা কম থাকায় প্রতিটি কারখানাই কম ধারণক্ষমতা নিয়ে চলছে। তাছাড়া গত মাসে রমজান ও ঈদুল ফিতরের কারণে পোশাক শিল্পে প্রায় ১২ দিনের ছুটি ছিল, যার প্রভাব দেখা যাচ্ছে রপ্তানি আয়ে। বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, বিশ্ববাজারে গত কয়েক মাস ধরে বিক্রি কমেছে, যার প্রভাব পড়ছে আমাদের ব্যবসায়। তবে অন্যান্য প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় স্থানীয়ভাবে উন্নত মানের সুতা উৎপাদন করতে পারায় ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ; যদিও অর্ডার ৩০ শতাংশ কমেছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ বাজার আবারও ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসবে বলে আশাব্যক্ত করেন পারভেজ।
যদিও চলতি বছরের মার্চে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে; এক্ষেত্রে আশার বিষয় হলো গত অর্থবছরের প্রথম নয় মাসের তুলনায় চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে রপ্তানি ৮ দশমিক ০৭% বেড়েছে।
এই প্রবৃদ্ধি হয়েছে মূলত তৈরি পোশাক খাতের মাধ্যমে। ইপিবির তথ্য অনুসারে, এই সময়ে তৈরি পোশাক খাত ১২ দশমিক ১৭% বৃদ্ধি পেয়ে ৩৮ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে। তবে মার্চে রপ্তানি ২ দশমিক ৪১% কমে ৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে সারা বিশ্বের গ্রাহকদের চাহিদা কমেছে। মানুষ মৌলিক নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস বাদে অন্যান্য পণ্য কেনা কমিয়ে দিয়েছে। কটন ইনকর্পোরেটেডের ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় তিনজন গ্রাহকের মধ্যে দুইজন হয় নিজেদের জন্য কম পোশাক কিনছেন, বা কেনাকাটা একেবারেই বন্ধ করে দিচ্ছেন।
বাংলাদেশের পোশাক আমদানিকারী সবচেয়ে বড় বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর ক্ষেত্রেও একই অবস্থা দেখা গেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়