১ মিনিট ‘ব্ল্যাকআউট’ : আলোর মিছিলে গণহত্যার স্বীকৃতি দাবি

আগের সংবাদ

পাঠ্যবই কেলেঙ্কারি : গোয়েন্দা নজরদারিতে ৪ কর্মকর্তা

পরের সংবাদ

হিলি স্থলবন্দরে কমেছে জিরা আমদানি

প্রকাশিত: মার্চ ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : হিলি স্থলবন্দর দিয়ে অর্ধেকে নেমেছে ভারত থেকে জিরা আমদানি। ডলার সংকটের কারণে এলসি খুলতে না পারায় আমদানিতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এছাড়া দাম বাড়ার কারণেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। জিরা আমদানি কমার ফলে সরকারের রাজস্ব আহরণ এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের আয়ও কমেছে। আয় কমায় বিপাকে পড়েছেন বন্দরে কর্মরত শ্রমিকরা। তবে চলতি মাসে বন্দর দিয়ে জিরা আমদানির পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে।
হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে প্রতি টন জিরা ১ হাজার ৮৫০ ডলার মূল্যে আমদানি করা হচ্ছে। গত বছরের জানুয়ারিতে ১২১টি ট্রাকে ৩ হাজার ৩০৫ টন জিরা আমদানি হয়েছিল। ফেব্রুয়ারিতে তা কিছুটা কমে ১১৩টি ট্রাকে ৩ হাজার ৯৭ টন হয়েছিল। মার্চ মাসে আমদানি খানিকটা কমে ৭২টি ট্রাকে ১ হাজার ৯৬৫ টন হয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে আমদানি তিন ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে। এ সময় মাত্র ৩৯টি ট্রাকে ১ হাজার ৫৭ টন জিরা আমদানি হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে ৪৬টি ট্রাকে ১ হাজার ২৩৭ টন জিরা আমদানি হয়েছে। তবে চলতি মাসে জিরার আমদানি কিছুটা বাড়ায় আগের তুলনায় দামও খানিকটা কমেছে। বন্দরে প্রতি কেজি জিরা ৫৫০ টাকা থেকে ৫৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগে যার মূল্য ছিল ৬৭০ থেকে ৭০০ টাকা।
হিলি স্থলবন্দরে কর্মরত শ্রমিকরা জানান, বন্দর দিয়ে আগে ভালো পরিমাণে জিরা আমদানি হতো। এতে শ্রমিকদের আয়-রোজগার ভালো হতো। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে জিরার আমদানি অনেকটা কমে এসেছে।
এতে আমাদের কাজ কমে যাওয়ায় আগের মতো আর আয়-রোজগার নেই।
হিলি স্থলবন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্টরা জানান, ?মূলত বন্দর দিয়ে জিরার আমদানি কমেছে। ডলার সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো ঠিকমতো এলসি দিচ্ছে না। অন্যান্য পণ্যের তুলনায় জিরার মূল্য বেশি থাকায় আমদানিতে বেশি ডলারের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমদানিকারকদের চাহিদা অনুযায়ী এলসি খুলছে না ব্যাংক। প্রয়োজন ১০টি এলসি সেখানে হয়তো কোনো মাসে দুটি এলসি পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া জিরার মূল্য বাড়ার কারণে দেশের বাজারে বেচাকেনা অনেকটা কমে এসেছে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ?ব্যাংকগুলো অল্প পরিমাণে হলেও এলসি দিচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে ভারতে জিরার দাম খানিকটা বেড়ে যাওয়ায় আমদানি করে তেমন কোনো লাভ হয় না। আগে প্রতি কেজি জিরা আমদানিতে ৯৪ থেকে ৯৫ টাকার মতো শুল্ক পরিশোধ করতে হতো। কিন্তু বর্তমানে ডলার রেট বাড়তি হওয়ার কারণে প্রতি কেজি জিরা আমদানিতে ১০০ টাকার উপরে শুল্ক পরিশোধ করতে হচ্ছে। যে কারণে দেশের বাজারে আমদানিকৃত জিরার দাম বাড়ছে। ফলে দেশের বাজারে দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, বন্দর দিয়ে ভারত বাংলাদেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য স্বাভাবিক থাকলেও ভারত থেকে জিরা আমদানির পরিমাণ কমেছে। বিশেষ করে চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অর্ধেক জিরা আমদানি হয়েছে। এতে বন্দরের দৈনন্দিন আয় কমার পাশাপাশি কর্মরত শ্রমিকদের আয়ও কমেছে। বর্তমানে গত দুই মাসের তুলনায় বন্দর দিয়ে জিরা আমদানি কিছুটা বাড়লেও আগের অবস্থানে ফেরেনি। বন্দর দিয়ে চলতি মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত ১৬ কর্মদিবসে ৯৯টি ট্রাকে ২ হাজার ৬৯০ টন জিরা আমদানি হয়েছে।
হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের উপকমিশনার বায়জিদ হোসেন বলেন, হিলি স্থলবন্দর থেকে যে রাজস্ব আহরণ হয় তার ৫৩ ভাগ আসে জিরা থেকে। কিন্তু গত বছরের জানুয়ারিতে বন্দর দিয়ে ৩ হাজার টনের উপরে জিরা আমদানি হয়েছিল। সেখানে চলতি অর্থবছরের জানুয়ারিতে তা অর্ধেকের নিচে নেমে ১ হাজার ২০০ টনে এসে পৌঁছেছে। একইভাবে ফেব্রুয়ারিতেও ১ হাজার ২০০ টন জিরা এই বন্দর দিয়ে আমদানি হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়