প্রণয় ভার্মাকে সংবর্ধনা : ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কূটচালে নষ্ট হওয়ার নয়’

আগের সংবাদ

গ্যাস সংকট কাটছে না সহসা : দৈনিক চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট > সরবরাহ ২৬৬ কোটি ঘনফুট > দুর্ভোগে রাজধানীর বাসিন্দারা

পরের সংবাদ

মোহাম্মদ এজাজ হোসেনের বই : বাবা-মেয়ের মধুর আলাপচারিতা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মনে রাখতে বই পড়ি না। আন্ডার লাইন করে পড়ি না। পরে কোটেশন ঝাড়ার দায় আমার নেই। আমি পাঠক। সাধারণ পাঠক। বাণী না খাই না পরি। যে বই মনে থাকার, দেখেছি আপনা থেকেই মনে থেকে যায়। বইয়ের কিছু একটা ছবি সমেত। বাক্য পড়ি ছবি মনে করে, শব্দ পড়ি ছবি মনে করে। বাজে ছবি মনে থাকে না, ভালো ছবির একটা টানও মনে থাকে।
দিন তারিখ বলতে পারব না। গত বছর প্রকাশিত একটা বই পড়েছিলাম। ছোট বই। নব্বই পৃষ্ঠার। মূল টেক্সট ৮৩ পৃষ্ঠা। মনে থেকে গেছে। তার মানে আমার মতে ভালো একটা বই এটা। তবে আমি যে কে? ভালো বইয়ের কোনো আমি-তুমি নেই। ভালো বই হলো ভালো বই।
ভালো এই বইটা এক বাবা লিখেছেন। দুই কন্যার বাবা। ছোট ভূমিকা আছে বইয়ের। ছোট দুই কন্যার বাবা লেখক লিখেছেন : বইটা ‘বাবা-মেয়ের মধুর আলাপচারিতা। বাবার সঙ্গে কথা বলতে বলতে ছোট মেয়ের শৈশব, কৈশোর পাড়ি দেয়ার গল্প।’
মধুর বলে মধুর! জারুল ফুলের মতো চনমনে সেই আলাপচারিতা আর পাড়ি দেয়ার গল্প- রেশ থেকে যায়, মন ভালো হয়ে যায় এমন বই পড়লে। কেন মন ভালো হয়ে যায় বইয়ের উদ্ধৃতি, প্যারা উল্লেখ করে কোনো উদাহরণ দিতে চাচ্ছি না। আমার ধারণা আমার মতো সাধারণ পাঠকের তাতে মহা সর্বনাশ। যে বই পড়ব সেই বইয়ের সেরা বাক্যটাও অন্যের মুখে আগে শুনে বসে থাকব কেন? পড়ার আনন্দ লাটে ওঠে এতে। কোটেশন-অলাদের থেকে সতর্ক তফাতে থাকি এজন্য। -মধুর বইটার কথা বলি। বইয়ের ফ্ল্যাপে ছবি আছে দুই কন্যার। তারা হলেন অহনা আরিনা। বইয়ের নাম ‘আরিনার সঙ্গে কথোপকথন।’ দেখার চোখ থাকে ছোট পাখিরও- এই জগৎ এই বিশ্ব সংসার দেখার। অহনা আরিনাও দেখেন। বইটা আরিনার দেখা নিয়ে। এই জগৎ এই সংসার কী চোখে দেখছেন আরিনা, সব এত গুছিয়ে বলেন বাবাকে, বাবা সেইসব কথা লিখে রাখাতে না এত একটা ভালো বই হতে পারল। পড়ে এত ভালো লেগেছিল, মনে করেছিলাম এই বই নিয়ে নিশ্চয় অনেক না হোক, একটা-দুটো আলোচনা দেখব পত্র পত্রিকায়। হা হতোষ্মি। ফেসবুকে অনলাইনে কিছু লেখা হয়ে থাকলে সেটা আমার এরেনা না, মুদ্রিত পত্র-পত্রিকায় ছোট কোনো উল্লেখও আমার নজরে পড়েনি। একী কাণ্ড। ভালো বই ক’টা ছাপা হয় বছরে? আমরা কেবল কি রকম হয়ে যাচ্ছি দিন দিন। কত কী বদলাচ্ছে, কে ঠেকায়? চেঞ্জ উই নিড বলে আমরা তড়পাই, ওদিকে বদল যা ঘটবার ঘটে যায়, কোভিড-১৯ পৃথিবীর একদল প্রাণীকে নাস্তানাবুদ করে রেখে গেছে।- তারা হলো মানুষ। আরিনা অহনাদের জন্য অস্বাভাবিক এক বাস্তবতা আমরা পুঁতে দিয়েছি স্থল মাইনের মতো। এই উপলক্ষে প্যারেন্টাল গাইডেন্স অমুক তমুক পরামর্শের দোকানও খোলা হয়ে গেছে। সেসব যে ঠিক কি জিনিস? অত কূটকচালির থেকে বরং বইটার কথা বলা ভালো- ‘আরিনার সঙ্গে কথোপকথন।’ একজন বাবা তাঁর প্রাণভরা আলো আর আশাবাদ নিয়ে লিখেছেন-

বইটা। পৃথিবীর সব শিশুকে তার আরিনা অহনা মনে করে লিখেছেন। আরিনার সব কথা যে কী সহজ আর কী গভীর। সেসব কথা আবার এত সহজে এভাবে লেখা যায়? দারুণ!
আরিনা অহনার বাবা মোহাম্মদ এজাজ হোসেন- যে প্রজন্মের মানুষ, স্কুল জীবনে রচনা লিখেছেন হয়তো, পিতামাতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য- বাবা হয়ে এই মানুষ যে বইটা লিখেছেন, সেটাকে সন্তানের প্রতি পিতামাতার কর্তব্য বলা যায়। নিষ্ঠার সঙ্গে কর্তব্য সম্পাদন করেছেন। মানুষ হিসেবে পেশাগত একটা বড় পরিচয় আছে মোহাম্মদ এজাজ হোসেনের, সেটা এখানে উল্লেখ না করলেও চলবে। এখানে মোহাম্মদ এজাজ হোসেন লেখক। সৎ লেখক। ভালো লেখক। এর আগে বই লিখেছেন একটা। পরে একটা, ও, এই বইটা ‘আরিনার সঙ্গে কথোপকথন’ গত বছর না দুই বছর আগে প্রকাশিত। প্রকাশকাল দেখছি ফেব্রুয়ারি ২০২১। প্রকাশক অনন্যা। দুই বছরে অনেক মানুষ অনেক বাচ্চা অনেক বাবা মা নিশ্চয় পড়েছেন বইটা। আরো অনেকে পড়বেন আশা করি। মুগ্ধ হবেন। ভালোবাসা পৃথিবীর সব আরিনা অহনা এবং লেখক মোহাম্মদ এজাজ হোসেনের জন্য।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়