হাইকোর্টে বিএনপি নেতা খোকন ও মিলনের জামিন

আগের সংবাদ

ভোটের আগাম প্রচারে আ.লীগ : সভা-সমাবেশে উন্নয়ন তুলে ধরে নৌকায় ভোট চাওয়া হচ্ছে

পরের সংবাদ

নওগাঁয় আমের মুকুল ঘিরে চাষিদের সোনালি স্বপ্ন

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. আবু বকর সিদ্দিক, নওগাঁ থেকে : ফাল্গুন মাস এখনো আসেনি, শেষ হয়নি শীত অথচ এরই মধ্যে নওগাঁর বিভিন্ন আম বাগানগুলোতে মুকুল আসতে শুরু করেছে। সবুজ পাতা ভেদ করে বেরিয়ে আসছে আম চাষিদের সোনালি স্বপ্ন। কিছুদিনের মধ্যেই আমের মুকুলের মিষ্টি গন্ধে সুবাসিত হয়ে উঠবে প্রকৃতি। এ সময়ে মুকুলের যতœ না নিলে আমের ভালো ফলন সম্ভব নয়। আর এ কারণেই আশায় বুক বেঁধে আম চাষিরা শুরু করেছেন পরিচর্যা। মুকুলে যাতে পোকার আক্রমণ না হয় ও ঝরে না পড়ে সেদিকেই নজর রাখছেন চাষিরা।
নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে- চলতি মৌসুমে জেলায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। যা গতবারের চেয়ে বেশি চাষ হয়েছে ৫২৫ হেক্টর জমিতে।
চলতি মৌসুমে উপজেলাভিত্তিক আম চাষের পরিমাণ হলো- সদর উপজেলায় ৫১০ হেক্টর, রানীনগরে ১৩০, আত্রাইয়ে ১২০ দশমিক ৫, বদলগাছীতে ৫৩০, মহাদেবপুরে ৬৩০, পতœীতলায় ৫ হাজার ৮১৫, ধামইরহাটে ৬৭৫, সাপাহারে ৯ হাজার ২৫৫, পোরশায় ১০ হাজার ৫৫০, মান্দায় ৪০০ ও নিয়ামতপুরে ১ হাজার ৩৮৪ দশমিক ৫ হেক্টর জমিতে।
‘শস্য ভাণ্ডার’ হিসেবে খ্যাত উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁ। এই জেলা এখন সারাদেশে আমের জেলা হিসেবে পরিচিত। নওগাঁর বিভিন্ন আমবাগান ঘুরে দেখা গেছে, বাগানের সারি সারি গাছে সবুজ পাতার মাঝে আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। সবচেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল আসছে। গত এক সপ্তাহ আগে থেকেই গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। পুরোদমে মুকুল ফুটতে আরো কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে বলছেন বাগান মালিকরা। তবে যে সব গাছে মুকুল আসছে, কুয়াশা আর শীতের কারণে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন আম চাষিরা। এ কারণে তারা ভালভাবেই মুকুল ও গাছের পরিচর্যা শুরু করছেন।
এ ব্যাপারে সাপাহার উপজেলার চাচাহার গ্রামের আমচাষি আলামিন ভোরের কাগজকে বলেন, ১০০ বিঘা জমি বিভিন্ন মেয়াদি লিজ নিয়ে আম বাগান করেছি। তাতে আ¤্রপালি, বারি ফোর, গৌড়মতি ও আশ্বিনা জাতের আম গাছ রয়েছে। এর মধ্যে কিছু আম গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। পুরোদমে মুকুল আসতে আরো মাসখানেক সময় লাগবে। তাই এ সময় গাছের বাড়তি যতেœর প্রয়োজন। ছোট-বড় আম বাগান পরিচর্যায় সময় ব্যয় করতে হচ্ছে। এছাড়াও বাগানের আগাছা পরিষ্কারসহ পোকা দমনে কীটনাশক স্প্রে করা হচ্ছে ।
পোরশা উপজেলার আমচাষি মেহেদী বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকে বাগানের আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। যেসব গাছে মুকুল এসছে কুয়াশা আর শীতের কারণে মুকুলেল ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই মুকুল আসার পর থেকেই গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছি। মুকুল রোগ বালাইয়ের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় বালায় নাশক স্প্রে করছেন।
একই উপজেলার আরেক আম চাষি ইয়াসিন আলী বলেন, তার আম বাগানের অধিকাংশ গাছেই মুকুল দেখা দিয়েছে। তবে যেসব গাছে মুকুল আসছে প্রায় নতুন গাছ। মুকুলের মাথাগুলোকে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য স্প্রে করা হচ্ছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে চলতি মাসের শেষের দিক থেকে শুরু করে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিক পর্যন্ত সব গাছে মুকুল দেখা যাবে বলে মনে করছেন তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নওগাঁ কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার এ কে এম মঞ্জুর-এ মাওলা ভোরের কাগজকে বলেন, আবহাওয়াগত ও জাতগত কারণে কিছু গাছে আগাম আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। এসব গাছে ফুল ফোটার আগে কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। এতে করে কুয়াশা বা অন্যান্য পোকার যে আক্রমণ কম হবে। তবে কোন ক্রমেই গাছে সেচ দেয়া যাবে না। এতে নতুন করে পাতা জন্মাবে। এই জন্য চাষিদেরর পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, এখনো সব গাছে মুকুল আসেনি। ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে পুরোদমে গাছে মুকুল আসবে, তখন শীত কেটে যাবে। সে সময় মুকুল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়