মাছরাঙা টেলিভিশনের সংবাদ উপস্থাপিকা ডা. নাতাশার মৃত্যু

আগের সংবাদ

৫০ বছরের অংশীদারিত্ব উদযাপনকালে বিশ্বব্যাংক এমডি : বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের সর্ম্পক নতুন মাইলফলকে

পরের সংবাদ

সংবাদ সম্মেলনে ডিসিসিআই সভাপতি : মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : চলমান সংকটে কর্মী ছাঁটাই না করে ব্যবসায় টিকে থাকাই আসল কথা- এমনটিই মনে করেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। সংগঠনটির পক্ষে নতুন সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার বলেন, ২০২৩ সালে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ। এ বছর কর্মী ছাঁটাই না করে প্রফিট মার্জিন কমিয়ে হলেও ব্যবসায় টিকে থাকাই হবে বড় সফলতা। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি মাইক্রোসফট ও গুগলের মতো প্রতিষ্ঠান ১০ থেকে ১২ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা এসেছে। জাপানের মতো দেশে মুদ্রাস্ফীতি গত কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। সেখানে বাংলাদেশ এর বাইরে নয়।
তিনি বলেন, প্রতিবছর আমাদের দেশে প্রায় ২০ লাখ তরুণ শিক্ষাজীবন শেষ করে চাকরি বাজরে প্রবেশ করে, তবে বিপুল এ জনগোষ্ঠীর জন্য উপযোগী কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা বেশ চ্যালেঞ্জের বিষয়। এদের অনেকেই হয়ত চাকরি পাবে, তবে অবশিষ্টদের মধ্যে একটি বড় অংশ উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলবে। আমাদের তরুণ উদ্যোক্তারা তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ে বেশ উদ্ভাবনী দক্ষতার অধিকারী। ব্যারিস্টার সাত্তার বলেন, বৈশ্বিক অস্থিতিশীল বাজারে সিএমএসএমই খাতের তরুণ উদ্যোক্তাদের সহায়তা করতে ঋণের সজলভ্যতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বিদ্যমান জটিল পরিস্থতিতে তাদের সহজ শর্তে অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
গতকাল শনিবার ডিসিসিআইয়ের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পরে এটিই প্রথম সংবাদ সম্মেলন। অনুষ্ঠানের শুরুতে ডিসিসিআই সভাপতি সমসাময়িক অর্থনীতি বিষয়ক ১০টি বিষয়বস্তুর উপর বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরেন এবং ২০২৩ সালে ডিসিসিআইর কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। এ সময় সহসভাপতি এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর (আরমান), সহসভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলীসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা চেম্বার সভাপতি বলেন, মনিটরিং পলিসি ৬ মাস পর পর হচ্ছে। আমরা চাইব ৩ মাস পর পর পলিসি করা। বিদ্যমান পলিসি দিয়ে সবসময় চ্যালেঞ্জ করা সম্ভব নয়। পরিস্থিতি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পলিসি পরিবর্তন করতে হবে। গ্যাসের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে সামীর সাত্তার বলেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি অত্যাবশ্যক ছিল। জ্বালানি সংকটের এ সময়ে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে বড় ও শিল্প পর্যায়ে। বড় বড় শিল্পগুলোকে ঠিক করতে হবে কীভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে।
গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রভাব শিল্প পণ্যের ওপর পড়বে। গ্যাসের দাম কীভাবে সমন্বয় করবে তা শিল্প মালিকদের ঠিক করতে হবে। তারা কর্মী ছাঁটাই করে করবে নাকি প্রফিট মার্জিন কমিয়ে আনবে। রমজানে পণ্যের দামের লাগাম টেনে ধরার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রমজানে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আমাদের প্রস্তাব এলসি মার্জিন কমিয়ে আনা। বাজার মনিটরিং আরেকটি পদক্ষেপ হতে পারে।
অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই সভাপতি সমসাময়িক অর্থনীতি বিষয়ক ১০টি বিষয়বস্তুর উপর বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি ২০২৩ সালে ডিসিসিআইর কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, এ বছর ঢাকা চেম্বার সিএমএসএমই, মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, বেসরকারি ও বৈদেশিক বিনিয়াগ, আর্থিক খাত, কর ব্যবস্থাপনা, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন, অর্থনৈতিক কূটনীতি, অবকাঠামো ও স্মার্ট বাংলাদেশ প্রভৃতি বিষয়সমূহের উপর অধিক হারে গুরুত্বারোপ করবে এবং বিষয়গুলোর উপর ডিসিসিআই সভাপতি বিস্তারিত সুপারিশালা উপস্থাপন করেন।
সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্নোত্তর পর্বে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও জ¦ালানি সংকটের কারণে দেশে জ¦ালানির মূল্য বাড়ছে। তবে তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, জ¦ালানির মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি কেবলমাত্র একমুখী হওয়া উচিত হবে না বরং আন্তর্জাতিক বাজারে জ¦ালানির মূল্য হ্রাস পেলে কালক্ষেপন না করে, সে অনুপাতে স্থানীয় বাজারেও যেন জ¦ালানির মূল্য সমন্বয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
সরকার সম্প্রতি শুধুমাত্র শিল্প খাতে গ্যাসের মূল্য বেড়েছে, বাসা-বাড়ি এবং কৃষি খাতের জন্য তা প্রযোজ্য নয়, এ বিষয়ে তিনি বলেন, দেশের ব্যবসায়ী সমাজ শিল্প খাতে পণ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে উচ্চমূল্যে হলেও নিরবিচ্ছিন্ন জ¦ালানি সরবরাহ পেতে চায়, যেন স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আমাদের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়। এটা সত্য যে, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি আমাদের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উপর কিছুটা হলেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, কারণ এটি তাদের পণ্য উৎপাদন ব্যয় বাড়াবে।
ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োনীয় দ্রব্যের চাহিদা ও সরবরাহ স্থিতিশীল রাখতে এ ধরনের পণ্য আমদানিতে এলসি খোলার শর্তাবলী সহজীকরণের বিষয়টি বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি রাতারতি সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য আমাদের রেমিট্যান্স আহরণ বাড়াতে প্রণোদনা বৃদ্ধি ও রপ্তানি আয় বাড়ানোর উপর আরো বেশি হারে জোরারোপ করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়