সংসদে অর্থমন্ত্রী : গত বছরের ১১ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯.৫৮ বিলিয়ন ডলার

আগের সংবাদ

তারল্য সংকটে বিপাকে ব্যাংক : সংকট উত্তরণে দরকার দৃশ্যমান রাজনৈতিক অঙ্গীকার, এখনই সমাধান না করলে সংকট আরো গভীর হবে

পরের সংবাদ

ডিসেম্বরের তথ্য এখনো মেলেনি : নভেম্বর পর্যন্ত চা উৎপাদন ৮৬ মিলিয়ন কেজি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : চা শ্রমিক আন্দোলন ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ২০২২ মৌসুমে ২০ মিলিয়ন কেজি চা কম উৎপাদন হওয়ার শঙ্কায় ছিলেন চা সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু চা বোর্ড, চা গবেষণাকেন্দ্র, চা বাগান কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের একান্ত পরিশ্রমে তা নভেম্বর পর্যন্ত উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা থেকে মাত্র সাড়ে ৩ মিলিয়ন কেজি পেছনে রয়েছে। তবে ডিসেম্বরের হিসাব সম্পন্ন হলে তা আরো বাড়বে। চা শ্রমিক ও সংশ্লিষ্টদের মতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে শ্রমিক আন্দোলন নিরসন না হলে চায়ের উৎপাদন আরো অনেক পিছিয়ে থাকত।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ চা বোর্ডের শ্রীমঙ্গলস্থ প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. রফিকুল হক জানান, নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করেও ২০২২ অর্থবছরের নভেম্বর পর্যন্ত ৮৬ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। তবে সব বাগান থেকে ডিসেম্বরের তথ্য না আসায় পূর্ণাঙ্গ হিসাব এখনো সম্পন্ন হয়নি।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত উৎপাদন ছিল ৯৬ মিলিয়ন কেজি। নভেম্বর পর্যন্ত উৎপাদন ছিল ৮৯ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন কেজি। ২০২২ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত উৎপাদন হয়েছে ৮৬ দশমিক ৫ মিলিয়ন কেজি। যা গত অর্থবছরের চেয়ে মাত্র ৩ দশমিক ৯৩ ভাগ কম। তবে ডিসেম্বরে ৮ থেকে ১০ মিলিয়ন কেজি উৎপাদন হবে।
যা সংযুক্ত হলে গত বছরের উৎপাদন ৯৬ মিলিয়ন কেজির কাছাকাছিই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি জানান, ২০২২ সালে ১০০ মিলিয়ন কেজির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে তারা কাজ শুরু করেন। তবে গত বছরর প্রথম দিকেই খড়ার ধাক্কায় পড়ে চা শিল্প। এরপর অতি বৃষ্টি এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে বিভিন্ন যোগ-বিয়োগের মুখে পড়ে এ শিল্প। এ প্রতিকূল অবস্থা মোকাবিলায় চা বোর্ডের চেয়ারম্যানের নির্দেশে চা গবেষণাকেন্দ্রের বিজ্ঞানী ও প্রকল্প উন্নয়ন কর্মকর্তারা সরজমিন অধিক সময় দিয়ে চা বাগান সংশ্লিষ্টদের যথাযথ পরামর্শ দেন।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ চা গবেষণাকেন্দ্রের পরিচালক ড. ইসমাইল হোসেন বলেন, ২০২২ অর্থবছরে একাধিক প্রাকৃতিক সৃষ্ট সমস্যায় পড়ে দেশের চা শিল্প। এই অবস্থায় চা বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যানের নির্দেশে দেশের চা বাগানগুলোর ৭টি ভ্যালিকে নিয়ে ১০টি কর্মশালা করা হয়। একই সঙ্গে ৭৫টি বাগানে সরজমিন গিয়ে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে পরামর্শ প্রদান করা হয়।
তিনি জানান, ২০২২ মৌসুমে চায়ের ভরা মৌসুমে ১০ থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত চা শ্রমিক আন্দোলনের কারণে পাতা চয়ন হয়নি। উৎপাদন পিছিয়ে পড়ার জন্য এটি একটি বড় কারণ ছিল। তবে এ ঘটনার পর পরই চা গবেষণাকেন্দ্র থেকে এক সার্কুলারের মাধ্যমে প্রত্যেক বাগানকে নির্দেশনা দেয়া হয় দ্রুততম সময়ের মধ্যে পাতা চয়ন করে ওপরের পাতা রেখে নিচের অংশ ফেলে দিয়ে চায়ের স্বাভাবিক প্লাকিং গ্রাউন্ড মেন্টেইন করার জন্য। এছাড়া ছায়া তরু ব্যবস্থাপনা, সেচ ও পানি নিষ্কাশনে ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন করার প্রতি জোর দেয়া হয়। একই সঙ্গে ক্যামেলিয়া খোলা স্কুল করে সমস্যা উত্তোরণের পন্থা বলে দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাশাপাশি চা শিল্প বড় ধাক্কা খায় শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে। এই সময়ে পাতা না তোলায়ই মূলত পিছিয়ে পড়তে হয়েছে এবারের গড় উৎপাদনে।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল জেরিন চা বাগানের ব্যবস্থাপক সেলিম রেজা চৌধুরী জানান, ২০২২ সালে এর আগের বছর ২০২১-এর চেয়ে প্রায় ১০ ভাগ উৎপাদন কম হয়ছে। এবার তাদের লক্ষ্যমাত্রা আরো বেশি ছিল। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে তারা মূলত পিছিয়ে। তবে পিছিয়ে পড়ার পরিমাণ আরো বেশি হতো। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে চা শ্রমিক আন্দোলন স্থিমিত হওয়ায় এবং আন্দোলনের পর শ্রমিকরা অতিরিক্ত পরিশ্রম করে বাগানকে রক্ষা করেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়