সংসদে অর্থমন্ত্রী : গত বছরের ১১ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯.৫৮ বিলিয়ন ডলার

আগের সংবাদ

তারল্য সংকটে বিপাকে ব্যাংক : সংকট উত্তরণে দরকার দৃশ্যমান রাজনৈতিক অঙ্গীকার, এখনই সমাধান না করলে সংকট আরো গভীর হবে

পরের সংবাদ

গার্মেন্ট শিল্প পণ্যের চার আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী শুরু : শেষ হবে ১৪ জানুয়ারি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীতে চলছে তৈরি পোশাক শিল্প পণ্যের চারটি আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী। রাজধানীর বসুন্ধরায় আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) গতকাল বুধবার এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। মোট ১১টি হলে চারটি শো-এর মাধ্যমে ২৫০টি প্রতিষ্ঠানের ৬৫০টি স্টলে আরএমজি সেক্টরের জন্য সম্পূর্ণ সোর্সিংয়ের সমাধান দিচ্ছে। চার দিনের এই চারটি প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল ১০ থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। শেষ হবে ১৪ জানুয়ারি, শনিবার। প্রদর্শনীগুলো হলো- ২০তম গার্মেন্টস টেকনোলজি শো বাংলাদেশ (জিটিবি) ২০২৩, ১২তম আন্তর্জাতিক গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ এন্ড প্যাকেজিং (জিএপি)-২০২৩, প্রথম ভারত টেক্সটাইল ট্রেড ফেয়ার বাংলাদেশ (আইটিটিএফ)-২০২৩ এবং আন্তর্জাতিক ইর্য়ান এন্ড ফ্রেবিকস এক্সপো।
গার্মেন্টস শিল্পের সবচেয়ে বড় এই চারটি আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে গার্মেন্টস মেশিনারি, সুতা, কাপড়, গার্মেন্টস অ্যাক্সেসরিজ এবং প্যাকেজিংয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আরএমজি সেক্টরের বিভিন্ন ধরনের পণ্য থাকবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আস্ক ট্রেড এন্ড এক্সিবিশনস প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিপু সুলতান ভূঁইয়া জানান, গার্মেন্টস টেকনোলজি শো বাংলাদেশের যাত্রার শুরুতে গার্মেন্টস সেক্টরে রপ্তানি ছিল ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আরএমজি সেক্টরের উন্নয়নের জন্য প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বছরের পর বছর ধরে এই প্রদর্শনী সহায়তা করছে। দেশের আরএমজি খাতে পণ্যেও বৈচিত্র্য বাড়াতে এবং নতুন বাজার সৃষ্টির মাধ্যমে এ খাতকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা অব্যাহত আছে। গার্মেন্ট টেকনোলজি বাংলাদেশ-২০২৩ এ খাতের আধুনিকীকরণ এবং উন্নত করার জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তিগুলো নিয়ে এসেছে। সেইসঙ্গে বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিকে স্থানীয় শিল্পের দোরগোড়ার নিয়ে আসার চেষ্টা অব্যাহত রাখছে।
জিএপি এক্সপো-২০২৩ হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং ব্যাপক গার্মেন্টস এক্সেসরিজ এবং প্যাকেজিং এক্সপোজিশন। এই মেলায় যন্ত্রপাতি ও কাঁচামালের প্রদর্শনী চলছে। বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ এন্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ) দেশের প্রায় ১৮০০’র বেশি গার্মেন্টস অ্যাক্সেসরিজ এবং প্যাকেজিং ফার্মের প্রতিনিধিত্ব করে। সংগঠনটি গার্মেন্টসের আনুষঙ্গিক পণ্য এবং প্যাকেজিং আরএমজি সেক্টরের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প হিসেবে কাজ করে। এই শিল্প পাঁচ লাখের বেশি মানুষকে কর্মসংস্থানের সুযোগ দিয়েছে।
ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিজিএপিএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন মতি আরএমজিসহ সব রপ্তানিকারক এবং বায়িং হাউসগুলোর মালিকেদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, আমাদের সদস্যরা তাদের সর্বশেষ উদ্ভাবন এবং সংগ্রহগুলো এই শোতে প্রদর্শিত হচ্ছে। সবাইকে এই সেক্টরের অগ্রগতির জন্য কাজ করার আহ্বান জানান বিজিএপিএমইএ সভাপতি।
ইন্ডিয়া টেক্সটাইল ট্রেড ফেয়ার বাংলাদেশ ২০২৩ ও সাউথ গুজরাট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্টি (এসজিসিসিআই) যৌথভাবে আয়োজিত ‘আইটিটিএফ বাংলাদেশ-২০২৩’ এর প্রথম মেলায়, বিভিন্ন ধরনের সুতা, কাপড়ের পাশাপাশি লেইস, জরি মেটেরিয়ালস এবং অ্যাকসেসরিজের ব্যবহার করে তৈরি ব্রাইডালসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাক তুলে ধরা হয়েছে। এর মাধ্যমে গার্মেন্টস মালিক এবং রপ্তানিকাররা বুটিকস এবং দেশীয় ব্র্যান্ডের এমব্রয়ডারি করা কাপড় এবং স্পোর্টসওয়্যাগুলোর একটি বাজার তৈরি করবে।
গত ২০ বছর ধরে গার্মেন্টস টেক বাংলাদেশ তৈরি পোশাক খাতের বৈশ্বিক প্রযুক্তিগুলোকে এক ছাদের নিচে নিয়ে আসছে। এই প্রদর্শনীগুলোতে আরএমজি সেক্টরের কাটিং, সেলাই, ফিনিশিং, এমব্রয়ডারি মেশিনারিসহ বিভিন্ন ধরনের আনুষঙ্গিক পণ্য এক সঙ্গে দেখার সুযোগ পান দর্শনার্থীরা। এবারের প্রদর্শনীতেও দেশ-বিদেশের আধুনিক প্রযুক্তিগুলো প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে।
খাত অনুযায়ী উন্নয়ন : ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ৫০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির মাইলফলক অতিক্রম করেছে। এক অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে ৩৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। জুলাই ২০২১ থেকে জুন ২০২২ পর্যন্ত বাংলাদেশ মোট ১২ মাসে ৫২ দশমিক ৮ বিলিয়ন মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে, যার মধ্যে পোশাক খাতেই ছিল ৪২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারের। এটি সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে মোট রপ্তানির ৮১ দশমিক ৮১ শতাংশ। আগের অর্থবছরে পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ৩১ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারের। গত অর্থবছরে বাংলাদেশে আরএমজি খাতের সাফল্যের মূল কারণ ছিল রপ্তানির বৈচিত্র্যকরণ। বাংলাদেশের আরএমজি শিল্প ১১টি দেশে বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি করে। বাংলাদেশের বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি তালিকায় থাকা ১১টি দেশের মধ্যে সাতটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশ রয়েছে।
২০২২ সালের জুলাই-অক্টোবর সালের মধ্যে বাংলাদেশের মোট ১৬ দশমিক ৮৫৩ বিলিয়ন রপ্তানির ৮৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ ছিল বোনা পোশাক, পোশাকের আনুষঙ্গিক এবং হোম টেক্সটাইল। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩১ দশমিক ৪৫৬ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে আরএমজি রপ্তানি ৩৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেড়ে ৪২ দশমিক ৬১৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০২১-২২ সালে আরএমজি রপ্তানির মূল্যের দিক থেকে বাংলাদেশ সর্বকালের সর্বোচ্চ অর্জন করেছে। মোট রপ্তানিও এ সময়ের মধ্যে ১৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়েছে। সেই সঙ্গে ৪৩ দশমিক ৫০০ বিলিয়নের লক্ষ্যমাত্রা পার করেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়