ইউনেসকোর প্রতিবেদন : দেশে শিক্ষা ব্যয়ের ৭১ ভাগ বহন করে পরিবার

আগের সংবাদ

তীব্র শীতে জবুথবু জনজীবন

পরের সংবাদ

কাপাসগোলা স্কুল পরিদর্শনে চসিক মেয়র : অভিযোগ প্রমাণিত হলে স্থায়ী বরখাস্ত হবেন সেই শিক্ষক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত হলে কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলাউদ্দিনকে স্থায়ী বরখাস্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। ঘটনার প্রায় তিন দিন পর গতকাল বুধবার কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
মেয়র বলেন, শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি অভিযোগের ‘প্রাথমিক সত্যতা’ পাওয়ায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অভিযোগ তদন্তে কমিটিও গঠন করে কর্তৃপক্ষ। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হলে স্থায়ী বরখাস্ত করা হবে। তিনি চসিক পরিচালিত কোনো স্কুলেই চাকরি করতে পারবেন না।
তিনি বলেন, মানুষের ঘরে জন্ম নিলেই মানুষ হয় না। মানুষ হতে হলে নীতি-নৈতিকতা থাকা প্রয়োজন। মা-বাবার পরে শিক্ষকের স্থান। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ ওঠেছে, সেগুলো তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টের পরে চাকরি বিধিমালা অনুসারে কঠিন থেকে কঠিনতম ব্যবস্থা নেয়া হবে। 
বার বার অভিযোগ ওঠার পরও ওই শিক্ষককে পুনর্বহালের জন্য সাবেক মেয়রদের দায়ী করে বর্তমান মেয়র রেজাউল করিম বলেন, ‘অভিযুক্ত শিক্ষককে ইতোমধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই শিক্ষকের নিয়োগ বা পুনঃনিয়োগ কিন্তু আমার আমলে হয়নি। পূর্ববর্তী মেয়র যারা ছিলেন, শিক্ষা কর্মকর্তা যারা ছিলেন, তারাই নিয়োগ দিয়েছেন। আসলে ওই ব্যক্তির নিয়োগ এখানে দেয়া ঠিক হয়নি। যার আমলেই দিক না কেন, হয়তো চিন্তা করেছে সংশোধন হবে। তবে আমার আমলে কোনো ক্ষমা নেই। আমি কাউকে করুণা করি না। অপরাধ করলে শাস্তি পেতে হবে।’
শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনাকাক্সিক্ষত ও দুঃখজনক উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘মা-বাবার পরে শিক্ষকের স্থান। আমাদের কোমলমতি সন্তানরা এখানে পড়ালেখা করতে আসে। কিছু ব্যক্তির জন্য আমাদের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। লজ্জা লাগে একজন শিক্ষকের নীতি-নৈতিকতা যখন হারিয়ে যায়, পশুত্ব যখন তার মধ্যে বিরাজ করে, তখন সে আর মানুষ থাকে না। পাকিস্তান আমল থেকে এ বিদ্যালয়ের সুনাম আছে। যে ঘটনা হয়েছে, তার জন্য সন্তানরা প্রতিবাদ করেছে। প্রতিবাদের সঙ্গে সঙ্গেই আমার কাছে যখন খবর এসেছে, আমি কাউন্সিলর, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তাকে বললাম ওই শিক্ষককে প্রত্যাহার করে নিন। ঘটনা বিস্তারিত জানার পর আমি তাকে সাময়িক বরখাস্ত করতে বললাম।’
প্রসঙ্গত, যৌন নিপীড়নের অভিযোগে গত রবিবার সকালে কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিনকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করে ছাত্রীরা।
দুই ঘণ্টা বিক্ষোভের পর চসিকের স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুর মোস্তাফা টিনু গিয়ে ওই শিক্ষককে সরিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। অভিযুক্ত শিক্ষক মো. আলাউদ্দিনকে প্রথমে নগরীর দক্ষিণ পতেঙ্গা সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়। পরদিন তাকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেয়া হয়। এ ঘটনা তদন্তে সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন পৃথক দুটি কমিটি গঠন করে। আলাউদ্দিন ২০১৩ সালে একই স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে বরখাস্ত হয়েছিলেন। তখন মেয়রের দায়িত্বে ছিলেন এম মনজুর আলম। পাঁচ বছর পর বহিষ্কারাদেশ কাটিয়ে ২০১৮ সালে একই বিদ্যালয়ে ফের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান আলাউদ্দিন। এ সময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব পালন করছিলেন আ জ ম নাছির উদ্দীন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়