বোটানিক্যাল গার্ডেনে স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় স্বামীর স্বীকারোক্তি

আগের সংবাদ

বিদেশে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা : কী করছেন কূটনীতিকরা

পরের সংবাদ

বেগমগঞ্জ-সোনাপুর ফোর লেন সড়ক : অগুরুত্বপূর্ণ স্থানে ৬ ফুটওভার ব্রিজ কোনো কাজে আসছে না

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মোহাম্মদ সোহেল, নোয়াখালী
থেকে : নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ চৌরাস্তা থেকে সোনাপুর জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার ফোর লেন সড়কে ৬টি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করবে সড়ক বিভাগ। ইতোমধ্যে ৪টির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। সাধারণ মানুষ বলছেন ব্রিজগুলো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নির্মাণ না হওয়ায় তাদের কোনো কাজে আসছে না। এতে ব্রিজগুলো থেকে যেমনি মানুষ কোনো সেবা পাচ্ছে না, তেমনি অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ হওয়ায় সরকারের অর্থ গচ্ছা গেছে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা। কিন্তু কর্তৃপক্ষের দাবি, ডিপিপির নির্দেশনা অনুযায়ীই ফুটওভারব্রিজগুলো নির্মাণ হয়েছে এবং হচ্ছে।
জানা গেছে, জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যান ও জনবহুল এলাকা বেগমগঞ্জের চৌমুহনী চৌরাস্তা। আর চৌরাস্তা হয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাওয়া আসা করে শত শত গাড়ি। প্রায় ২৪ ঘণ্টায়ই এ সড়কে যান চলাচলের পাশাপাশি মানুষের যাতায়াত থাকে। এতে বিভিন্ন সময় অসাবধানতাবসত সড়কের এক পাশ থেকে অন্য পাশে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে ঘটছে প্রাণহানি। ফলে চৌরাস্তায় একটি ফুটওভারব্রিজ স্থাপনের দাবিও ছিল এ অঞ্চলের মানুষের। অবশ্য সোনাপুর-চৌমুহনী ফোরলেন প্রকল্পের কাজ শুরু হলে চৌরাস্তায় একটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণও হয়। কিন্তু তা সঠিক স্থানে স্থাপন না করায় বর্তমানে পথচারী বা জনসাধারণের কোনো কাজেই আসছে না। পথচারীরা বলছেন, জেলার সবচেয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানের একটি চৌমুহনী চৌরাস্তা। এখানে একটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করলে সুন্দর হতো। এতে মানুষ নিরাপদে দ্রুত চারমুখী সড়কের এক পাশ থেকে অন্য পাশে সহজে যেতে পারত। কিন্তু দেখা গেছে চৌরাস্তার দক্ষিণ পাশে যে ফুটওভার ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে সেটি চৌরাস্তার মূল অংশ থেকে প্রায় দেড়শ ফুট দক্ষিণে, তাও একমুখী সড়কের ওপর। ফলে মানুষ সেটি ব্যবহার করে না। উল্টো সেটি বখাটেদের আড্ডা ও মাদকসেবিদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, শুধু চৌরাস্তার ফুটওভার ব্রিজটি নয়। চৌরাস্তা থেকে দক্ষিণে জেলা শহর মাইজদী পর্যন্ত মোট চারটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি জয়নাল আবেদিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে, একটি একলাশপুর বাজারে এবং একটি মাইজদী বাজার এলাকায়।
স্থানীয়রা জানান, চারটির মধ্যে চৌরাস্তা ও জয়নাল আবেদিন স্কুলের সামনের দুটোর একটিও ব্যবহার হয় না। কারণ সেটার কোনো প্রয়োজনই ছিল না।
অপরদিকে একলাশপুর ও মাইজদী বাজার এলাকায় যে দুটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে, সেগুলো কিছুটা গুরুত্বপূর্ণ হলেও মানুষ তা ব্যবহার করছে না। ফুটওভার ব্রিজ থাকা সত্ত্বেও মানুষ ফোর লেনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মাঝখান দিয়েই প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। এতে প্রায়সই ঘটছে দুর্ঘটনা, ঝরছে তাজা প্রাণ।
সড়ক বিভাগের তথ্যমতে, প্রায় পাঁচ বছর আগে সোনাপুর-চৌমুহনী সড়ক ফোর লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ১৩ কিলোমিটার ফোর লেন সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ৬টি ফুটওভার ব্রিজ স্থাপনের উদ্যোগও নেয়া হয় তখন। এরই মধ্যে ৪টি ব্রিজের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এসব ব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় তেমন একটা কাজে আসছে না পথচারীদের। অথচ প্রতিটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৭৫ লাখ টাকা।
সচেতন মহল বলছে, ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণে যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে, তাতে আরো নান্দনিক করা যেত এসব ফুটওভারব্রিজ। অন্ধ ও শারীরিক অক্ষমদের জন্য রাখা যেত আলাদা সিঁড়ি। তাছাড়া এটুকু দূরত্বে এতগুলো ব্রিজ অপ্রয়োজনীয় এবং রাষ্ট্রের অর্থ অপচয় বলে মনে করছেন তারা।
নোয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ফুটওভার ব্রিজগুলো নির্মাণের আগে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। তাছাড়া ডিপিপির নির্দেশনা অনুযায়ী নির্মাণ হয়েছে ফুটওভার ব্রিজগুলো। তবে ভবিষ্যতে যে কয়টি নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সেগুলো নির্মাণের আগে স্থানীয়দের সঙ্গে আরো গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করা হবে বলেও জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়