বিএনপি নেতা খন্দকার মাহবুব হোসেন আর নেই

আগের সংবাদ

দেশজুড়ে জেঁকে বসেছে শীত : উত্তররাঞ্চলের কয়েক জেলায় বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ > জনজীবন বিপর্যস্ত > বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগবালাই

পরের সংবাদ

চট্টগ্রামে বছরের প্রথম দিন সব বই পায়নি শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : অন্যান্যবার নতুন বছরের প্রথম দিনে শতভাগ বই বিতরণের মাধ্যমে উৎসবে মাতলেও এবার তার ছন্দপতন হয়েছে চট্টগ্রামে। ‘বই উৎসবের’ আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হলেও অনেক শিক্ষার্থীর হাতেই দেয়া যায়নি নতুন বইয়ের পুরো সেট। চট্টগ্রামের অধিকাংশ স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা শতভাগ বই পায়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
কেউ কেউ শুধু দুটো বই পেয়েছে, অনেক শিক্ষার্থী খালি হাতেই স্কুল থেকে বাড়ি ফিরেছে। পাশপাশি এবার যেসব বই বিতরণ করা হয়েছে সেগুলো নি¤œমানের কাগজ দিয়ে ছাপানো হয়ছে এবং ছাপানোর মানও অত্যন্ত নি¤œমানের বলে অভিযোগ পাওয় গেছে। তবে কোনো কোনো স্কুলে আবার বইয়ের সংকট তেমন ছিল না। সংশ্লিষ্ট বিভাগের হিসেব অনুযায়ী এ পর্যন্ত মাত্র ৫৪ শতাংশের মতো বই সরবরাহ পাওয়া গেছে। বাকী বই জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের আগে পৌঁছানোর সম্ভাবনা নেই।
চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসের তথ্য মতে, চট্টগ্রামের মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ লাখ ৪৩ হাজার ৪৮১ জন। এসব শিক্ষার্থীর বিপরীতে বইয়ের চাহিদা ১ কোটি ৫৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯০৩টি। এর মধ্যে মাধ্যমিকের প্রাপ্ত বইয়ের সংখ্যা ৫৮ লাখ ৫৪ হাজার ৪৬১টি। মাদ্রাসায় প্রাপ্ত বইয়ের সংখ্যা ২৯ লাখ ৮৭ হাজার ৪১টি। এর মধ্যে পাওয়া গেছে সর্বমোট ৮৮ লাখ ৪১ হাজার ৫০২টি বই। এ পর্যন্ত মোট প্রাপ্ত ৫৬ শতাংশ বই বিদ্যালয়ে পৌঁছেছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামের ৪ হাজার ৩৫৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিকে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ লাখ ৮২ হাজার। এসব শিক্ষার্থীর বিপরীতে বইয়ের চাহিদা ৪৫ লাখ ২২ হাজার ১০৯টি। চাহিদার বিপরীতে এ পর্যন্ত বই পাওয়া গেছে ২৩ লাখ ৬ হাজার ২৭৫টি, যা মোট চাহিদার ৫১ শতাংশ। বাকি ৪৯ শতাংশ বই এখনো পাওয়া যায়নি। এসব হিসেব অনুযায়ী চট্টগ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রাথমিকের ৫১ শতাংশ এবং মাধ্যমিকে ৫৬ শতাংশ বই সরবরাহ করা হয়েছে। জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষার্থীরা সব বই পেয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফরিদুল আলম হোসাইনী ভোরের কাগজকে বলেন, অল্পকিছু দিনের মধ্যে বাকি বইও চলে আসবে। তখন শিক্ষার্থীরা সব বই পেয়ে যাবে। এ পর্যন্ত যা বই এসেছে সেগুলো দিয়ে বই উৎসব হয়েছে। আমাদের যা বই এসেছে সব বই সরবরাহ করা হয়েছে। নি¤œমানের কাগজ দিয়ে বই ছাপানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই বিষয়ে কিছু কিছু অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে প্রাপ্ত তথ্য পৌঁছে দিব।
ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহেদা আক্তার বলেন, শনিবার পর্যন্ত চাহিদার বিপরীতে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ বই এসেছে। এর মধ্যে নবম শ্রেণিতে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ বই এসেছে। অষ্টম শ্রেণিতে বই এসছে ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ, সপ্তম শ্রেণিতে ৯০ শতাংশ, ষষ্ঠ শ্রেণিতে শতভাগ বই এসেছে এবং পঞ্চম শ্রেণিতে বই এসেছে মাত্র সাড়ে ৩৩ শতাংশ। তিনি আরো বলেন, এখন প্রতিদিনই বই আসছে। সংশ্লিষ্টরা আমাদের জানিয়েছেন কিছুদিনের মধ্যে বাকি বইগুলো চলে আসবে।
নগরীর ঐতিহ্যবাহী কলেজিয়েট স্কুলে গিয়ে দেখা গেছে, বই বিতরণের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়েই ভারি বইয়ের বান্ডিল বহন করিয়েছেন। শারিরীকভাবে দুর্বল ছাত্রদের অনেকেই এভাবে বইয়ের ভাড়ি বোঝা বইতে পারেনি। অথচ এসব বই স্কুল কর্তৃপক্ষকেই যথাযথভাবে বণ্টন স্থানে নিয়ে যাওয়ার নিয়ম রয়েছে। তা না করে ছাত্রদের দিয়েই সেই কাজটি করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে দিদারুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক বলেন, আমার ছেলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। অন্যান্যবার বছরের প্রথম দিন নতুন বই হাতে পেলেও আজকে মাত্র ৪টি বই হাতে পেয়েছে। অন্য বইগুলো পড়ে দেয়া হবে বলে স্কুল থেকে বলা হয়েছে। হাতে যেসব বই পেয়েছে সেগুলো অত্যন্ত নি¤œমানের কাগজ দিয়ে ছাপানো। ছাপার মানও নি¤œ। এসব বই কতদিন পড়তে পাড়বে, তা নিয়ে আমি সন্দিহান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়