দৈনিক বাংলার মোড় থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার

আগের সংবাদ

কক্সবাজারের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী : আগামীতেও নৌকায় ভোট চাই

পরের সংবাদ

ফুটবলের বয়ান

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর বিশ্বকাপ চলছে মহাসমারোহে। খেলার মাঠ থেকে ফুটবল ঝড় তুলছে প্রতিদিনের চায়ের আড্ডাতেও। সমর্থকদের উন্মাদনা আর প্রিয় দলের রংবেরঙের পতাকায় ছেয়ে গেছে সারাদেশ। সব বয়সের মানুষ ফুটবলের ছন্দে মেতে উঠছে সমান তালে।
ফুটবলের ইতিহাস কিন্তু অনেক প্রাচীন। জানা যায়, ২ হাজার ২০০ বছর আগে চীনে ফুটবলজাতীয় খেলার প্রচলন ছিল। প্রাচীনকালে গ্রিক ও রোমান সভ্যতার মানুষরাও ফুটবলের আদলে একধরনের খেলা খেলত। তবে তারা হাত দিয়েও বলটি ধরতে পারত। আধুনিক সময়ে আমরা যে ধরনের ফুটবল খেলা উপভোগ করি তার সূচনা হয়েছিল এখন থেকে প্রায় ৮০০ বছর আগে। ব্রিটেনে সূচিত এই খেলা ধীরে ধীরে পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলার আসন লাভ করে।
সে সময়েই ফুটবল নিয়ে এত বেশি মাতামাতি হতো যে তা রীতিমতো চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ১৩০০ শতকের মাঝামাঝি সময়ে রাজা তৃতীয় এডওয়ার্ড ফুটবল খেলা নিষিদ্ধ করেছিলেন। কারণ তখন ফুটবল খেলার উন্মাদনা প্রায়ই সহিংসতায় রূপ নিত। তখনকার মানুষও প্রয়োজনীয় কাজের কথা ভুলে গিয়ে ফুটবল খেলা নিয়ে মেতে থাকত।
ফুটবল খেলাকে আধুনিকায়ন এবং কিছু নিয়মকানুনের ভেতর নিয়ে আসা হয় ১৮০০ সালে। সেটা ঘটেছিল ব্রিটেনের ইটন কলেজে। এরপর ১৮৪০-এর দশকে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুটবল খেলার নির্দিষ্ট নিয়মকানুন চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে তা আরো দৃঢ় রূপ পায় ১৮৬৩ সালে। তখন প্রথমবারের মতো ফুটবল এসোসিয়েশন গঠন করে এই খেলাকে একটি সর্বজনীন অবস্থান দেয়ার প্রচেষ্টা সাফল্যের মুখ দেখে। এরপর ১৯০৪ সালে গঠন করা হয় বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা দি ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল। যা সংক্ষেপে ‘ফিফা’ নামে পরিচিত।
বিশ্বকাপ হলো আন্তর্জাতিক ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর। সারা পৃথিবী থেকে বাছাই করা দেশের দলগুলোকে নিয়ে প্রতি চার বছর পর পর এই আসরের আয়োজন করা হয়। প্রথম বিশ্বকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট হয়েছিল উরুগুয়েতে, ১৯৩০ সালে। স্বাগতিক দেশ উরুগুয়েই সেই প্রথম টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছিল।
প্রথমে বিশ্বকাপ ট্রফিটির নাম ছিল ‘জুলে রিমে’। ফুটবল বিশ্বকাপের প্রবক্তা ফরাসি নাগরিক জুলে রিমের নামেই এই নামকরণ করা হয়। ১৯৭০ সালে প্রথম দেশ হিসেবে ব্রাজিল তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জিতে চিরকালের জন্য জুলে রিমে ট্রফিটি নিজেদের করে নেয়। বর্তমানে ট্রফিটির নাম ফিফা ওয়ার্ল্ডকাপ।
বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসে কিংবদন্তি হয়ে আছেন পেলে ও ম্যারাডোনা। পেলে ব্রাজিলের হয়ে ১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৬৬ ও ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। তিনি ব্রাজিলের জাতীয় দলের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা ও তিনবার বিশ্বকাপজয়ী একমাত্র ফুটবলার। অন্যদিকে ম্যারাডোনা আর্জেন্টিনার হয়ে ৪টি ফিফা বিশ্বকাপ (১৯৮২, ১৯৮৬ ১৯৯০ এবং ১৯৯৪) এবং ৩টি কোপা আমেরিকায় (১৯৭৯, ১৯৮৭ এবং ১৯৮৯) অংশগ্রহণ করেছেন। ১৯৮৬ ফিফা বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার ২-১ গোলে জয়লাভ করার ম্যাচে আর্জেন্টিনার হয়ে ম্যারাডোনার করা উভয় গোলই ফুটবল ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে।
২০২২ সালের বিশ্বকাপ আসর অনুষ্ঠিত হচ্ছে কাতারে। প্রযুক্তির কল্যাণে সারা পৃথিবীর মানুষ নিজের ঘরে বসে এই আসরের প্রতিটি খেলা উপভোগ করছে। মিডিয়াজুড়ে চলছে হাজারো বিশ্লেষণ। অনুরাগী-ভক্তদের মুখে শুধু একটাই শব্দ এখন, ফুটবল!

– আমির খসরু সেলিম

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়