মৃত্যুবার্ষিকী আজ : সাবেক মেয়র হানিফ স্মরণে নানা কর্মসূচি

আগের সংবাদ

সমাবেশ ঘিরে দুপক্ষের হুঙ্কার : বিএনপি নেতাদের বক্তৃতায় প্রচ্ছন্ন হুমকি > ছাড় না দেয়ার ঘোষণা আওয়ামী লীগ নেতাদের

পরের সংবাদ

সৈয়দপুরের বেকারি শিল্প বন্ধের পথে!

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জিকরুল হক, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে : কাঁচামালের আকাশছোঁয়া মূল্যে সৈয়দপুরের বেকারি শিল্প বন্ধ হতে চলেছে। ইতোমধ্যে ৮টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। অবশিষ্টগুলো ধুঁকে ধুঁকে চলছে। বেকারি শিল্প টিকিয়ে রাখতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে দেয়া হয়েছে স্মারকলিপি। কিন্তু শিল্প টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে সরকারি পর্যায়ে নেই কোনো চোখে পড়ার মতো উদ্যোগ। ব্যবসায়ীদের দাবি-রেশনিং পদ্ধতিতে বেকারির কাঁচামাল সরবরাহ করা হলে ধ্বংসের হাত থেকে এ শিল্পটিকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।
এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন ময়দা, চিনি, তেল, কাগজ ও পলিথিনের দাম গত আড়াই মাসে কল্পনাতীত বেড়েছে। বিকাশমান এ শিল্পের সঙ্গে শত শত মানুষের জীবন-জীবিকা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। আগে এসব শিল্পে দুই শিফটে কাজ করা হতো। বর্তমানে কাজ করা হচ্ছে এক শিফটে। ফলে বেকার হয়ে পড়েছেন হাজারও শ্রমিক।
ব্যবসায়ীদের মতে গত আড়াই মাস আগে যে চিনি ৮৫ টাকা কেজি দরে মিলত, সেই চিনি ১১২-১১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাম তেলের মূল্য কেজিতে ২৫ টাকা বেড়েছে। আটা ময়দার দাম ৫০ ভাগ বেড়েছে। ৩৫ টাকা কেজি দরের ময়দা ৭০ এবং ২৮ টাকা দামের আটা ৬০ টাকা কেজি দরে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
আগে লেবেল বানানোর এক রিম কাগজের দাম ছিল এক হাজার ৩০০ টাকা। বর্তমান বাজারে তা বৃদ্ধি পেয়ে ২০০০ টাকা হয়েছে। রুটি, বিস্কুট প্যাকিংয়ের কাজে যে পলিথিন ব্যবহার করা হয় তার দাম কেজিতে ১৫০ টাকা বেড়ে গেছে। পূর্বের ৩৫০ টাকার কেজির পলিথিন ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আগামী দিনে বাড়তি মূল্যেও প্যাকিংয়ের জন্য পলিথিন মিলবে কিনা সেই বিষয়েও ব্যবসায়ীরা সংশয় প্রকাশ করেছে।
বেকারি শিল্পের বর্তমান হাল হকিকত জানতে কথা হয় বাংলাদেশ ব্রেড, বিস্কুট ও কনফেকশনারী পণ্য প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির নীলফামারী জেলা শাখার সভাপতি মো. আকতার সিদ্দিকী পাপ্পুর সঙ্গে। ভোরের কাগজের সঙ্গে তিনি হতাশার পাশাপাশি আশার কথাও জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বেকারি শিল্পকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে তৈরিকৃত বেকারি পণ্যের সাইজ কমিয়ে আনা হয়েছে। দাম যাতে নাগালের মধ্যে থাকে সেজন্য পণ্যের মূল্য বাড়ানো হয়েছে শতকরা ২০ টাকা। তারপরও এ শিল্পের অবস্থা তথৈবচ। তার মতে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় পূর্বের তুলনায় বেচাকেনা অর্ধেকে নেমে এসেছে। দুই শিফট কাজের বিপরীতে এক শিফটে কাজ করানো হচ্ছে। এতে করে অর্ধেক শ্রমিক কর্মচারী বেকার হয়ে পড়েছে।
তিনি দাবি জানিয়ে বলেন, ক্ষুদ্র এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে এর আগে আমরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে আবেদন জানিয়েছি। আবেদনে বলা হয়েছে ভর্তুকি মূল্যে রেশনিং সিস্টেমে বেকারি শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহ করা হলে আমরা বেঁচে থাকার চেষ্টা অব্যাহত রাখতাম। তবে সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোনো সাড়া এখনো পাওয়া যায়নি।
ইতোমধ্যে নীলফামারী জেলার ৪০টি বেকারি শিল্পের মধ্যে দশটি বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে শুধু সৈয়দপুরে বন্ধ হয়েছে ৮টি বেকারি কারখানা। এসব কারখানার মালিক ও শ্রমিকরা হা-ভাতে দিন কাটাচ্ছে। এমন অবস্থায় তিনি দ্রুত মানবতার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সৈয়দপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তৌহিদুর রহমান মুঠোফোনে ভোরের কাগজকে জানান, বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যাতে দেশের সবধরণের শিল্প বাঁচিয়ে রাখা যায়, তা নিয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভাবছেন। তিনি বলেন, আশা নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে। সুদিন ফিরবে একদিন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়