হাসান গোর্কি, রংপুর থেকে : আগামী ২৭ ডিসেম্বর সুষ্ঠুভাবে রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচনে প্রার্থীদের পক্ষে বিভিন্ন স্থানে লাগানো সব ধরনের প্রচার-প্রচারণাসামগ্রী আগামী ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা। প্রার্থী নিজ দায়িত্বে প্রচারণাসামগ্রী অপসারণ না করলে আচরণ বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। একইসঙ্গে সব ধরনের মিছিল-মিটিং ও শোডাউনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় এই নির্দেশনা দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক আবদুল বাতেন। এ সময় রংপুর জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেনসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে যা যা করণীয় তাই করা হবে জানিয়ে আবদুল বাতেন বলেন, একটি গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আচরণবিধি প্রতিপালনের কোনো বিকল্প নেই। আচরণবিধি অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থী কিংবা প্রার্থীর পক্ষে লাগানো সব ধরনের ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন, বিলবোর্ডসহ প্রচার-প্রচারণাসামগ্রী অপসারণ করতে হবে। কিন্তু গত ৭ নভেম্বর তফসিল ঘোষণা হলেও এখনো নগরজুড়ে বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টারে ছেয়ে আছে। আগামী ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে কোনো প্রার্থী যদি নিজ দায়িত্বে এসব সামগ্রী অপসারণ না করে তাহলে প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার পরেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে নির্বাচন কমিশন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা আরও জানান, সব কেন্দ্রে ইভিএম এবং গোপন কক্ষ ছাড়াও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। কেউ যেন কোনোভাবেই নির্বাচন কমিশনারের উদ্যোগে বাধা তৈরি করতে না পারে, সে ব্যাপারে কমিশন নেবে। সিসি ক্যামেরায় নির্বাচন কমিশন থেকেও ভোট মনিটর করা হবে। কোথাও কোনো ধরনের অনিয়ম হলে ভোট কেন্দ্র বন্ধসহ পুরো নির্বাচন বন্ধের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন। আগামী ২৯ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। ৮ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ এবং ৯ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করতে জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এটিএম গোলাম মোস্তফা বাবু নির্বাচনী প্রচারণা চালালেও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি। তাদের হাফ ডজন প্রার্থী মনোনয়নের জন্য মাঠে কাজ করছেন।
কেউ কেউ দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে লবিং করে চলেছেন। নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ এখনো অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকলেও দীর্ঘদিন থেকে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন অন্তত চারজন প্রার্থী।
এছাড়াও একাধিক স্বতন্ত্রপ্রার্থী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আয়তনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই সিটির ৩৩টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে লড়তে আড়াই শতাধিক প্রার্থী মাঠে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে এই সিটির জনসংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। আর ভোটার চার লাখের বেশি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।