সিনহার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য পেছাল

আগের সংবাদ

জাতীয় গ্রিড আধুনিকায়নে এবার গুরুত্ব দিন

পরের সংবাদ

অবসরপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র : রপ্তানি আয়ে একক নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে

প্রকাশিত: অক্টোবর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বৈশ্বিক সংকটের কারণে বিশ্বব্যাপী ডলারের দাম বেড়েছে। পুরো বিশ্বই চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে। শুধু বাংলাদেশে না, এর চেয়েও অনেক দাম বেড়েছে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে। আমরাও এতে কিছুটা চাপে আছি। আর তাই অর্থনীতির প্রয়োজনে আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম। আবার এটিও স্থায়ী সমাধান নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা সংকট স্থায়ীভাবে সমাধান করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যাংকগুলোর ওপর বিনিময় হার ছেড়ে দিয়েছে। এখন তারাই দাম নির্ধারণ করছে। তিনি বলেন, সংকট মোকাবিলায় রপ্তানি, রেমিট্যান্স বাড়ানোতে জোড় দেয়া হয়েছে। তখন আমদানিও বাড়বে।
আমাদের দেশ অনেক আগ থেকেই একটি পণ্যের ওপর নির্ভর করে রপ্তানি বাজার চলে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পূর্বে ছিল পাট আর এখন তৈরি পোশাক। এই একক নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তৈরি পোশাক খাতের জন্য আবার ৬০ শতাংশের মতো কাঁচামাল আমদানি করতে হয়। এখন চামড়াসহ যে সব খাতের কাঁচামাল আমদানি করতে হয় না- সেসব খাতের পণ্য রপ্তানিতে জোড় দিতে হবে। তৈরি পোশাক খাত বাংলাদেশের কোনো ব্র্যান্ড নয়। এটি একটি পণ্য মাত্র, যেখানে বাংলাদেশের লগো থাকে। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের কোনো পণ্যকে ব্র্যান্ড হিসেবে তৈরি করতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের কনফারেন্স হলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। আজ বুধবার থেকে অবসরে যাচ্ছেন সিরাজুল ইসলাম। সে হিসেবে গতকালই নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ছিল তার শেষ কর্মদিবস।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ১৯৮৮ সালের ২৫ আগস্ট যোগ দেয়া মো. সিরাজুল ইসলাম বাংলাদেশ ব্যাংকে ছয় বছর ধরে মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গতকাল মঙ্গলবার সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনটি করেন। মুখপাত্রের দায়িত্ব পালনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ৩০ হাজার টাকা সম্মানি বরাদ্দ রয়েছে বেতনের অতিরিক্ত হিসেবে। সিরাজুল ইসলাম দায়িত্ব পালনকালে এই সম্মানি নেননি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, সাংবাদিকরা দেশ ও মানুষের জন্য তথ্যকর্মী হিসেবে কাজ করে। তাদের সঙ্গে কাজ করাটা অনেক সম্মানের, এর আর্থিক বিনিময় হয় না।
তিনি বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার চাপ সামাল দিতে বাংলাদেশকে রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের ওপর জোর দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমাদের রেমিট্যান্স কিছুটা কমছে। পাশাপাশি রপ্তানি আয়ের পরিমাণও কমছে। এতে রিজার্ভে কিছুটা চাপ তৈরি হয়েছে। তবে, এ চাপ থাকবে না। কারণ, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় দুটোই বাড়বে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে ডলারের দাম স্বাভাবিক হচ্ছে। সংকটে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৪৮ থেকে ৩৬ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। এতে বাংলাদেশে কোনো নতুন সংকট তৈরি করবে কিনা- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ডলার বিক্রিতে রিজার্ভ কমেছে, এটা সত্য। এটা বাড়বে-কমবে স্বাভাবিক। আবার এক জায়গায় যে রিজার্ভ স্থির রাখতে হবে- এমন নয়। সব খাতেই একটি ভারসাম্য রাখতে হবে। রিজার্ভ এক সময়ে ৪৮ বিলিয়ন হয়েছিল। সেখান থেকে আবার কমেছে। এটা বুঝতে হবে যে, রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় ভারসাম্য রাখা হচ্ছে কিনা। বাংলাদেশ ব্যাংক ভারসাম্য রাখছে।
ইডিএফ ফান্ড নিয়ে তিনি বলেন, রিজার্ভ থেকে ইডিএফ ফান্ডে যে ঋণ দেয়া হয়েছে, তার উদ্দেশ্য ঠিক ছিল। এটার টাকা নিয়ে যদি কেউ ফেরত না দেয়, সে বিষয়েও বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যবস্থা নেবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়