হাছান মাহমুদ : সেই নৈরাজ্যের পথেই হাঁটছে বিএনপি

আগের সংবাদ

ভূরাজনীতির ফাঁদে প্রত্যাবাসন! রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে এডিটরস গিল্ডের গোলটেবিল বৈঠক : ৫ বছরে সংকট আরো বেড়েছে

পরের সংবাদ

নিউজ উইকের প্রতিবেদন : বাংলাদেশের গর্ব ওয়ালটন হয়ে উঠছে গেøাবাল ব্র্যান্ড

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ওয়ালটন বাংলাদেশের করপোরেট খাতের গর্ব। ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনে ওয়ালটন নতুন স্ট্যান্ডার্ড সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স বাজার সৃষ্টিতে ওয়ালটন বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। এবার প্রতিষ্ঠানটি অন্যতম সেরা গেøাবাল ব্র্যান্ড হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্ব খ্যাত সাময়িকী নিউজ উইকের একটি বিশেষ প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে গত এক যুগে (২০০৯ থেকে ২০২১ সাল) বাংলাদেশের অর্থনীতির সাফল্যের চিত্র, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, স্থিতিশীল পুঁজিবাজার এবং শিল্প খাতে ওয়ালটনের অবদান তুলে ধরা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে ২০০৯ সালে বাংলাদেশের জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) ছিলো ১০২ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালে যা দাঁড়িয়েছে ৪১৬ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলারে। ২০১০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এক যুগ ধরে ক্রমবর্ধমান জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ বিশ্বে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে। দেড় দশকে ২৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষকে দারিদ্র্যমুক্ত করেছে। গত বছর জাতিসংঘ নিশ্চিত করেছে যে ২০২৬ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটবে, যা বিশ্বের খুব কম দেশই সম্ভব করতে পেরেছে। বর্তমান সরকারের লক্ষ্য প্রবৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত রেখে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করা।
নিউজ উইকের প্রতিবেদন বলছে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার সময় বাংলাদেশ ছিল বিশ্বের দ্বিতীয় দরিদ্রতম দেশ। সেখান থেকে আজ বাংলাদেশ ‘দারিদ্র্য বিমোচনের মডেল’ হয়ে উঠেছে। স্থিতিশীল গণতন্ত্র, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের সুযোগ সৃষ্টি, রপ্তানি আয় ইত্যাদির কারণে বাংলাদেশ অতিমারির মধ্যেও প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী ২০২১ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ২,৫০৩ মার্কিন ডলার, যেখানে একই সময়ে প্রতিবেশী ভারতের মাথাপিছু আয় ২,২৭৭ মার্কিন ডলার। তৈরি পোশাকের পাশাপাশি, চামড়া, পাট, আইটি সেবা, ওষুধ, কৃষি এবং হাইটেক পণ্যের রপ্তানি খাত ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক আভাস দিয়েছে ২০২২ সালে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ২০২৩ সালে ৭ দশমিক ১ শতাংশ।
নিউজ উইকের প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার দেশ সব ধরনের প্রতিকূলতা জয় করেছে। শেখ হাসিনা তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশে স্থিতিশীল গণতন্ত্র নিশ্চিত এবং নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়নে অভূতপূর্ব পরিবর্তন এনেছেন। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মাঝেও বাংলাদেশের পুঁজিবাজার স্থিতিশীল ও ইতিবাচক রয়েছে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামেরও একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার নিউজ উইকে প্রকাশিত হয়েছে।
নিউজ উইককে দেয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন তার উন্নয়ন লক্ষ্যের কেন্দ্রে রয়েছে উদ্ভাবন ও শিল্পোদ্যোগ। বিশ্বখ্যাত সাময়িকী নিউজউইকের একই সংখ্যায় বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য শিল্পখাতের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনকে নিয়ে প্রকাশিত বিশেষ প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ওয়ালটনের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সমান্তরাল। ২০০৮ সালে ওয়ালটন বাংলাদেশে রেফ্রিজারেটর উৎপাদন শুরু করার আগে প্রয়োজনীয় এসব পণ্য বিলাসদ্রব্য হিসেবে বিবেচিত হতো। কিন্তু বর্তমানে এসব পণ্য সাধারণ মানুষের ব্যবহার্য্য হয়ে উঠেছে এবং প্রায় প্রতিটি ঘরে রেফ্রিজারেটর আছে। গত এক দশকে বাংলাদেশে রেফ্রিজারেটরের বাজার ১০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
নিউজ উইক বলছে- ওয়ালটন বাংলাদেশের প্রথম মোবাইল ফোন, কম্প্রেসর, এয়ার কন্ডিশনার, টেলিভিশন, ল্যাপটপ এবং এলিভেটর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। ৭০০ একর জায়গাজুড়ে ওয়ালটনের প্রোডাকশন প্ল্যান্ট গড়ে উঠেছে। যেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে ৩০ হাজার মানুষের। ইলেকট্রনিক্স ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স খাতে রপ্তানিনির্ভর দেশ থেকে বাংলাদেশকে ওয়ালটন শুধু স্বনির্ভরই করেনি বরং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি সম্প্রসারণ করেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ব্র্যান্ড হওয়ার লক্ষ্যে ওয়ালটন নতুন করে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি ব্র্যান্ডকে মোবাইল ফোন সরবরাহে ২০২০ সালে ওয়ালটন চুক্তি করেছে। ২০২২ সালের এপ্রিলে ৩টি ইউরোপিয়ান ব্র্যান্ডের স্বত্ব কিনে নিয়েছে। চলতি বছর দক্ষিণ কোরিয়ায় গবেষণা ও উদ্বাবন সেন্টার চালুর মাধ্যমে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে। সব মিলিয়ে বিশ্বের ৪০টি দেশের বাজারে ওয়ালটনের উপস্থিতি রয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং পশ্চিম আফ্রিকায় ওয়ালটন পণ্যের বড় বাজার রয়েছে।
নিউজ উইককে দেয়া সাক্ষাৎকারে ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও গোলাম মুর্শেদ বলেছেন, আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করছে ওয়ালটন। একই সঙ্গে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রি এবং দেশের রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তবে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং। ইলেকট্রনিক্স ও হাইটেক শিল্প খাতে বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং করছে ওয়ালটন।
তিনি আরো বলেন, ওয়ালটন পরিবেশের সুরক্ষার ব্যাপারে খুবই সচেতন। আমরা পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোনো দ্রব্য ব্যবহার করি না। ওয়ালটনই বিশ্বের প্রথম প্রতিষ্ঠান যারা হাইড্রোফ্লুরোকার্বন (এইচএফসি) এবং হাইড্রোক্লোরোফ্লোরোকার্বন (এইচসিএফসি) ফেজআউট প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। কম বিদ্যুৎ খরচ মানে কম পরিবেশ দূষণ। বিদ্যুৎসাশ্রয়ী পণ্য উৎপাদন এবং পরিবেশবান্ধব রেফ্রিজারেন্ট ব্যবহার করে আসছে ওয়ালটন। একই সঙ্গে ওয়ালটন উৎপাদন খাতে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবস্থা করছে।
নিউজ উইকের সাক্ষাৎকারে ওয়ালটন সিইও আরো বলেন, উদ্ভাবন ও গবেষণা ছাড়া কোনো উদ্যোগ টেকসই হতে পারে না। ওয়ালটন এই দুই বিষয়ে শুরু থেকেই ব্যাপক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। যার ফলে আমরা বিশ্বের প্রথম অফলাইন ভয়েস কমান্ড এবং ব্লুটুথ, এয়ার প্লাজমা ও থ্রি-ইন-ওয়ান কনভার্টার প্রযুক্তির এয়ার কন্ডিশনার গ্রাহকদের দিতে পেরেছি। এছাড়া, দেশের প্রথম স্মার্ট রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনার, ভয়েস কমান্ড ও গুগল সার্টিফাইড টেলিভিশনও আমরা বাজারে ছেড়েছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়