হাসপাতালে ভর্তি আরো ৩৮১ রোগী : ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতন হওয়ার আহ্বান মন্ত্রীর

আগের সংবাদ

মহা আড়ম্বরে সমাহিত মহারানি

পরের সংবাদ

বিপাকে বিদেশি ঋণধারীরা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : অস্থির ডলার বাজার। দফায় দফায় বাড়ছে দাম। এতে বিদেশি মুদ্রায় ঋণধারীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ জমেছে। কারণ সাত মাসের কম সময়ে দেশের মুদ্রার দরপতন হয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। ফলে ৫ বছর আগে যারা বিদেশি উৎস থেকে ঋণ নিয়েছেন তাদের ধারণার চেয়ে বেশি টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। শিল্পে উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় অর্থায়নের জন্য দেশি উৎসের পাশাপাশি এখন বেশিসংখ্যক উদ্যোক্তা বিদেশি ঋণে ঝুঁকছেন। কম সুদের বলে বিদেশি ঋণ গ্রহণ করা ব্যবসায়ীরা ডলারের দর বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন। ফলে দেশি ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে সুদ-আসলে যে টাকা পরিশোধ করতে হতো, এখন কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার চেয়ে বেশি পরিশোধ করতে হবে। বলা হচ্ছে, দেশের তুলনায় বিদেশি ঋণে সুদহার কম। তবে ঋণের অর্থ ডলার বা অন্য কোনো মুদ্রায় দেশে আসে আর তা পরিশোধও করতে হয় বিদেশি সেই মুদ্রায়। এ কারণে বিদেশি মুদ্রার বিনিময় হার যদি বেড়ে যায়, তাহলে ঋণগ্রহীতাদের বেশি দামে তা কিনতে হবে। ফলে তাদের প্রত্যাশিত অর্থের চেয়ে বেশি পরিশোধ করতে হতে পারে। বিদেশি ঋণের বাড়তি এ বোঝাকে অর্থনীতির জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ডলারের বাজার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় বিদেশি ঋণের চাপ সামাল দেয়া কঠিন হয়ে যাবে। আর এই চাপ সামাল দিতে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। গত কয়েক বছরে সরকারি-বেসরকারি খাতে যে পরিমাণ বিদেশি ঋণ এসেছে, সেটি স্বাভাবিক নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছে বেসরকারি খাত। টাকার দরপতনে বিদেশি ঋণের বোঝা অনেক বেড়ে গেছে। কারণ যারা প্রতি ডলার ৮৪-৮৫ টাকা হিসাব ধরে ঋণ নিয়েছে, তাদের এখন ১০৬-১০৭ টাকা দিয়ে ডলার কিনে সেই ঋণের সুদ-আসল পরিশোধ করতে হচ্ছে। পরিত্রাণের উপায় হিসেবে রাজস্ব বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, সরকার যদি দ্রুততার সঙ্গে রাজস্ব আদায় বাড়াতে পারে, তাহলে ভালো সমাধান আসবে।
ব্যবসায়ীদের সংগঠন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) সাবেক প্রেসিডেন্ট শামস মাহমুদ বলেন, এখন থেকে ৭-৮ বছর আগে দেশি ঋণে ১৭ থেকে ১৮ শতাংশ সুদ গুনতে হতো। তখন বিদেশি ঋণের সুদ ছিল ৫ বা ৬ শতাংশ। ফলে অনেকে বিদেশি ঋণে ঝুঁকে যায়। লোকাল কারেন্সিতে ঋণ যারা নিয়েছে ডলার দর ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় তাদের এখন চড়া মূল্য দিতে হবে। জানা গেছে, গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরে বিদেশি উৎস থেকে সরকারি-বেসরকারি খাতের মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। অথচ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৫৮১ কোটি (৪৫ দশমিক ৮১ বিলিয়ন) ডলার। দেশের মোট জিডিপির ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ। ৫ বছরের ব্যবধানে এই ঋণ বেড়ে দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে বিদেশি ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১৯ শতাংশ। ওই সময়ে দেশে মোট বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৮১ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার। বেসরকারি খাতেও বিদেশি ঋণ : সরকারের পাশাপাশি দেশের বেসরকারি খাতেও বিদেশি ঋণ বেড়েছে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ ছিল ১২ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার। পাঁচ বছরে এ ঋণ প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়