বাজারের ব্যাগে মিলল নবজাতকের লাশ

আগের সংবাদ

দেশীয় জ্বালানি উত্তোলনে গুরুত্ব : অনুসন্ধান ও উত্তোলনে মহাপরিকল্পনা > ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৬টি কূপ খনন করার উদ্যোগ পেট্রোবাংলার

পরের সংবাদ

নজরুলময় জীবন রতœার

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সংগীতশিল্পী রতœা দাস বর্তমানে গান নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন টেলিভিশন, বেতার, মঞ্চ ও নিজের ইউটিউব চ্যানেলে। গত ২৭ আগস্ট জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে এসেছে তার নতুন গান নজরুলের গজল ‘কেন আনো ফুল ডোর’। বিশেষ এই দিনে নজরুলের গান নিয়ে বিভিন্ন টেলিভিশন ও বেতার অনুষ্ঠানে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন এই শিল্পী। 
ছোটবেলায় নাচ শিখতে গিয়ে পরিচয় নজরুলের ছন্দময় গানগুলোর সঙ্গে পরিচয়। পরিবারে মায়ের কাছ থেকেই গানের হাতেখড়ি তার। গানের প্রতি তীব্র আকর্ষণ থেকে কেউ হারমোনিয়াম বাজিয়ে দিলেই গাইতেন রতœা। মর্ম না বুঝলেও প্রশংসা পেতেন সবার কাছ থেকেই, চলত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অনুরোধের আসর। সেখান থেকেই নজরুলের গান গাইতে চাওয়ার ইচ্ছা পোষণ। শিক্ষক বাবা ভালো তবলাবাদক ও মা সুকণ্ঠী হওয়া সত্ত্বেও পরিবার থেকে নাচ ও গান একসঙ্গে করতে বারণ করা হয় তাকে, চতুর্থ শ্রেণির পর নাচ করা ছেড়ে দেন। পরিবার থেকে গান শেখার সূচনা হলেও পরবর্তীতে গ্রামের স্থানীয় গান শেখার প্রতিষ্ঠান থেকে দীক্ষা নেন রতœা। সব ধরনের গান শিখলেও নজরুল সংগীতের প্রতি তীব্র ভালোবাসা থেকে ঢাকায় এসে ভর্তি হন ছায়ানটে। এছাড়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে বাংলা সাহিত্যের ‘পঞ্চকবি’ ও ‘তিনকবি’-এর গানের দীক্ষাও নিয়েছেন তিনি। গান শিখেছেন নীলুফার ইয়াসমিন, মানসকুমার দাস, সুধীন দাস, সুমন চৌধুরীর মতো শিল্পীদের কাছ থেকে। বর্তমানে নজরুলকে আঁকড়ে রেখে এগিয়ে যাচ্ছেন এ শিল্পী, কাটাচ্ছেন নজরুলময় জীবন। বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে রবীন্দ্র সংগীতের তুলনায় নজরুল সংগীতের চর্চা বেশ কম, এ বিষয়ে তার অভিমত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসলে যেভাবে রবীন্দ্রনাথের প্রচার-প্রসারটা হয়েছে, নজরুলের ক্ষেত্রে সেটা হয়নি; নজরুল এখানে উপেক্ষিত হয়েছেন। তবে এ দায়ভার কার, কাকে বলব এ বিষয়টি নিয়ে, তা নির্ণয় করা বেশ কঠিন। এক্ষেত্রে বেশকিছু মতবিভেদ রয়েছে, কেউ বলেন এভাবে না অন্যভাবে গাইতে হবে, পুরনো সুর, নতুন সুর নিয়েও বিতর্ক হয়। অথচ নজরুল যেখানে নিজেই শিল্পীর স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন, তাই গানে নজরুলের গানের বাণী ও সুর ঠিক রেখে আমরা এই নতুন ও আধুনিক প্রজন্মের জন্য সংগীত আয়োজন এবং উপস্থাপনা উন্নত করতেই পারি। এ কাজটি অবশ্যই করতে হবে। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমগুলোরও দায়িত্ব রয়েছে। শুধু নজরুল জন্মবার্ষিকী আর প্রয়াণ দিবস কেন্দ্রিক অনুষ্ঠান হচ্ছে আমাদের দেশে, সারাবছরই কেন নজরুলময় হচ্ছে না, সারাটি বছরজুড়ে কেন নজরুল চর্চা হচ্ছে না, এটি আমার প্রশ্ন। নজরুলের মতো চির আধুনিক কবি পাওয়া খুব কঠিন। যত বেশি নজরুলকে নিয়ে চর্চা হবে, মানুষ ততই তাকে জানবে, শিখবে, বুঝবে। তখন নজরুলের গান আরো বেশি হবে।’ নজরুলের প্রতি অন্যরকম এই টানের জন্যই জীবনে নজরুল সংগীত ছাড়া আর কোনো কিছু ভাবতে চাননি এই শিল্পী। কেননা তিনি শুধু নজরুলের গানই গান না, নজরুলের আধুনিকতা, দর্শনকে অন্তরে ধারণ করেন সবসময়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নজরুলের মতো এত বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী কমই আছেন। আধুনিকতার চরম শিক্ষক তিনি। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, তার এই শিক্ষাগুলো আমরা যদি গ্রহণ ও চর্চা করতে পারি তাহলে অন্য কোনো ঘরানার সংগীতের দিকে না গেলেও ক্ষতির কিছু নেই। কারণ আমি নজরুলের সমগ্র সত্ত্বাটাকে পেয়ে যাচ্ছি। প্রকৃতি, প্রেম, বিরহ, অভিমান, গণসংগীত, দেশাত্মবোধ- সবকিছুতেই নজরুল রয়েছেন। এক জায়গাতেই আমি সব পেয়ে যাচ্ছি।’
নজরুলপ্রেমী এই শিল্পীর এখন পর্যন্ত দুটি অ্যালবাম বের হয়েছে প্রতিষ্ঠিত প্রচার মাধ্যম লেজারভিশন থেকে। মিউজিক ভিডিও এসেছে ১৬টি।

:: আর এস সৈকত

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়