খোলাবাজারে ডলারের রেকর্ড দাম ১১২ টাকা

আগের সংবাদ

তিন কারণে চড়ছে ডলার : বৈশ্বিক অস্থিরতা, মজুতদারি, অর্থ পাচার, ব্যাংক ও খোলাবাজারে ডলারের দামের ফারাক অস্বাভাবিক

পরের সংবাদ

পুঁজিবাজারের উত্থান টিকল না দুদিনও

প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থার নেয়া বেশকিছু পদক্ষেপে অনেকটা ইতিবাচক অবস্থায় ফিরেছিল লেনদেন। শেষ দুই কর্মদিবসে লেনেদেন ও সূচকের উত্থানে সেই আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু আগের দুই কর্মদিবসে যতটুকুু বেড়েছিল, তার চেয়ে আরো ১৫ পয়েন্ট বেশি সূচক পড়ল গতকাল বুধবারের লেনদেনে। ফলে টানা ৯ কর্মদিবসের পরে পুঁজিবাজারে যে উত্থানের ইঙ্গিত দিয়েছিল সেটি দুদিনের বেশি স্থায়ী হলো না। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, ৭৪ পয়েন্ট কমার মধ্য দিয়ে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স অবস্থান করছে ৬ হাজার ৩৮ পয়েন্টে। গত বছরের ২১ জুনের পরে এটি সূচকের সর্বনি¤œ অবস্থান। ওই দিন ডিএসইএক্স ছিল ৬ হাজার ৪২ পয়েন্টে। দুদিন পর ফিরে এলো ব্যাপক দরপতনের স্মৃতিও। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারে ৩১৮টি কোম্পানির দর পতন হয়েছিল, ক্রেতা ছিল না বিপুল সংখ্যক শেয়ারের। গতকাল বুধবারে দর পতনের তালিকায় যোগ হয়েছে আরও ২০টি কোম্পানি। এদিন ৩৩৮টি কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে। যার বেশিরভাগেরই দিনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ ও এর আশপাশে। বিপরীতে বেড়েছে মাত্র ১৭টি কোম্পানির শেয়ার দর। আর আগের দামেই লেনদেন হয়েছে ২৫টি কোম্পানির শেয়ার। লেনদেনের এই প্রভাবে প্রধান খাতগুলোর কয়েকটি এবং ছোট খাতের বেশিরভাগেই শতভাগ দরপতন হয়েছে। এগুলো হলো- ওষুধ ও রসায়ন, জ্বালানি, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, আইটি, জীবন বিমা, সিরামিকস, ট্যানারি, কাগজ ও মুদ্রণ, সেবা ও আবাসন, ভ্রমণ ও অবকাশ এবং পাট খাত। উল্লেখ করার মতো দর বেড়েছে বস্ত্র, বিমা এবং মিউচুয়াল ফান্ডের। বস্ত্র খাতে ১১ শতাংশ, বিমা খাতে ৭ শতাংশ এবং মিউচুয়াল ফান্ড খাতে ১১ শতাংশের বেশি কোম্পানির দর বাড়তে দেখা গেছে। অবশ্য এর চেয়ে কিছুটা বেশি দরপতন দেখা গিয়েছিল গত সপ্তাহের সোমবার ও মঙ্গলবার। ওই দুদিন সাড়ে তিনশর মতো করে কোম্পানির দর হারাতে দেখা যায়। ওই ?দুই কর্মদিবসে বড় ধস তো বটেই, ওই সপ্তাহের পুরোটাই পতনে দেখেছেন বিনিয়োগকারীরা। তার আগের সপ্তাহের শেষ তিন কর্মদিবসেও ধারাবাহিক পতন হয় পুঁজিবাজারে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, পুঁজিবাজারের পতন যেন কাটছেই না ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই। ওই সময় আগুন লাগা পুঁজিবাজারে ঘি ঢালে প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট। এছাড়া বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় মূল্যস্ফীতি, কোভিড পরবর্তী সময়ে দেশের আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়া বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া, ডলারের বিপরীতে টাকা মান কমে যাওয়া ইত্যাদি কারণে উঠে দাঁড়াতে পারেনি পুঁজিবাজার। গত সপ্তাহের আগের তিন কর্মদিবস পতনের পরে নতুন সপ্তাহে ভালো দিন কাটবে বলে প্রত্যাশা করেছিলেন অনেকেই। তবে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সরকারের এলাকাভেদে এক ঘণ্টা বা প্রয়োজন বিশেষে দুই ঘণ্টার লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্তের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করতে পারেননি বিনিয়োগকারীরা। দেশের অর্থনীতি আরো বেশি মন্দার দিকে ধাবিত হচ্ছে ধরে আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন। যার কারণে দেখা গেছে শেয়ার বিক্রির প্রবণতা। ব্যাপক বিক্রির চাপে ধস নামে পুঁজিবাজারে। সেটি অব্যাহত থাকে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিব রবিবারেও। এ দিকে অনাকাক্সিক্ষত বিক্রির চাপ রোধে ডিলার অ্যাকাউন্টগুলোর ওপর নজরদারির সিদ্ধান্ত রবিবার থেকে কার্যকরের সিদ্ধান্ত জানায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। এই ঘোষণার পরের দুদিন, অর্থাৎ সোমবার ও মঙ্গলবার যথাক্রমে ৩০ ও ২৯ পয়েন্ট করে মোট ৫৯ পয়েন্ট সূচক বাড়ে। লেনদেন বেড়ে ১৩ কর্মদিবসের মধ্যে সর্বোচ্চ হয়।
তবে দুই কর্মদিবস পরেই সূচকের সঙ্গে কমল লেনদেনও। দিনভর হাতবদল হয়েছে ৭৭৮ কোটি ৪৩ লাখ ১৮ হাজার টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ৫৯ কোটি ৬১ লাখ ৯৯ হাজার টাকা কম। মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ৮৩৮ কোটি ৫ লাখ ১৭ হাজার টাকা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের আতঙ্ক এখনো কাটেনি। এছাড়া গত দুদিন যারা শেয়ার কিনেছিল তারা হয়তো কিছুটা লাভ পেয়েই শেয়ার ছেড়ে দিয়েছেন। কারণ তারা আস্থা রাখতে পারেননি। এ জন্য ব্যাপক সেল প্রেসারের কারণে ট্রানজেকশন মোটামুটি হলেও ব্যাপক দর পতন হয়েছে বলেও অভিমত তাদের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়