খোলাবাজারে ডলারের রেকর্ড দাম ১১২ টাকা

আগের সংবাদ

তিন কারণে চড়ছে ডলার : বৈশ্বিক অস্থিরতা, মজুতদারি, অর্থ পাচার, ব্যাংক ও খোলাবাজারে ডলারের দামের ফারাক অস্বাভাবিক

পরের সংবাদ

আরো ৩০০ কোটি টাকা ঋণ পাবেন এসএমই উদ্যোক্তারা

প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : করোনা ভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের আরো ৩০০ কোটি টাকা ঋণ দেবে এসএমই ফাউন্ডেশন। ঋণের সুদের হার হবে মাত্র ৪ শতাংশ। একজন উদ্যোক্তা ১ লাখ থেকে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। এ বিষয়ে ১৮টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
গতকাল বুধবার এসএমই ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনা-পরবর্তী পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ত্বরান্বিতকরণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ঋণদান কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় এসএমই ফাউন্ডেশনের অনুকূলে দুই ধাপে ৩০০ কোটি টাকা ছাড় করা হয়, যা এরই মধ্যে উদ্যোক্তা পর্যায়ে বিতরণ শেষ হয়েছে। এ ঋণ পরিশোধ থেকে আসা অর্থ এবং নিজস্ব তহবিল দিয়ে এসএমই ফাউন্ডেশন একটি ‘রিভলভিং ফান্ড’ গঠন করেছে। ‘রিভলভিং ফান্ড’ থেকে নতুন ঋণ বিতরণ করা হবে। এলক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করে অংশীদার ১৫টি ব্যাংক ও ৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীরা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- বেসিক ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, দ্য প্রিমিয়ার ব্যাংক, সীমান্ত ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, দ্য সিটি ব্যাংক, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, আইপিডিসি ফাইন্যান্স ও লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান এবং ফাউন্ডেশন কর্তৃক বাস্তবায়িত প্রণোদনা প্যাকেজ ‘রিভলভিং ফান্ড’ থেকে ঋণ বিতরণ নীতিমালার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন মহাব্যবস্থাপক নাজিম হাসান সাত্তার।
পলিসি গাইডলাইন অনুযায়ী গ্রামীণ ও প্রান্তিক পর্যায়ের অতি ক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র ৬ শ্রেণি-পেশার উদ্যোক্তারা ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। যেমন- অগ্রাধিকারভুক্ত এসএমই সাব-সেক্টর, ক্লাস্টার এবং ভ্যালু চেইনের আওতাভুক্ত উদ্যোক্তা, সারাদেশের নারী-উদ্যোক্তা, নতুন উদ্যোক্তা অর্থাৎ যারা এখনো ব্যাংক থেকে ঋণ পাননি, পশ্চাদপদ অঞ্চল, উপজাতীয় অঞ্চল, শারীরিকভাবে অক্ষম এবং তৃতীয় লিঙ্গের উদ্যোক্তা, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত ট্রেডবডি, এসএমই এসোসিয়েশন, নারী-উদ্যোক্তা সংগঠন, নাসিব এবং উদ্যোক্তা উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে এমন সরকারি-বেসরকারি সংস্থাসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সুপারিশকৃত উদ্যোক্তা।
অংশীদার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে জামানতবিহীন ঋণ বিতরণের বিষয়ে উৎসাহিত করা হবে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত গ্যারান্টি/সামাজিক গ্যারান্টি/গ্রুপ গ্যারান্টির বিপরীতে ঋণ প্রদানের প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হবে। গ্রাহকপর্যায়ে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা হবে সর্বোচ্চ ৩ বছর, ৬ মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০টি মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করা যাবে।
মোট ঋণের ২৫% নারী-উদ্যোক্তাদের মধ্যে বিতরণ করতে হবে এবং ৩০% উদ্যোক্তার ঋণ ১০ লাখ টাকা বা তার চেয়ে কম পরিমাণের হতে হবে। ক্লাস্টার ও সেক্টরের ভ্যালু চেইন যেমন- টেক্সটাইল খাতের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল, সুতা, রং, স্ক্রিন প্রিন্ট, প্যাকেজিং, খুচরা যন্ত্রাংশ বিক্রেতা, সরবরাহকারী এবং উৎপাদিত পণ্য পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা অগ্রাধিকার পাবেন। ভ্যালু চেইনের উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২৫% ঋণ ব্যবসা (ট্রেডিং) খাতে প্রদান করা যাবে। ব্যাংকার-কাস্টমার সম্পর্ক ও ঐক্যমতের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ৫ জন উদ্যোক্তার অনুকূলে গ্রুপভিত্তিক ঋণ বিতরণ করা যাবে। ফাউন্ডেশন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ বিতরণ ও আদায় কার্যক্রম নিয়মিতভাবে মনিটরিং করবে। ঋণ বিতরণের পর এসএমই ফাউন্ডেশনের নিজস্ব পদ্ধতি ও লোকবল দ্বারা সরজমিন পরিদর্শন করে চুক্তি অনুযায়ী এবং সঠিক উদ্যোক্তার অনুকূলে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে কিনা তা যাচাই ও নিশ্চিত করবে। তবে অনুৎপাদনশীল খাত যেমন- মুদি দোকান, ঔষধ বিক্রেতা, হার্ডওয়্যার বিক্রেতা এবং পরিবেশ দূষণকারী যেমন- ইটভাটা, তামাকজাত দ্রব্য বিক্রেতাকে এ কর্মসূচির আওতায় ঋণ প্রদান করা যাবে না।
উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা এবং পল্লী এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সরকারের প্রণোদনার আওতায় ৩ হাজার ১০৮ জন মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তার মধ্যে ইতোপূর্বে ৩০০ কোটি টাকা এবং ক্রেডিট হোলসেলিং কর্মসূচির আওতায় প্রায় ২ হাজার ২০০ জন উদ্যোক্তার মধ্যে ১৩০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করে এসএমই ফাউন্ডেশন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়