কাগজ প্রতিবেদক : নতুন অর্থবছরের জন্য এসএমই ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে দেয়া ১৪ প্রস্তাবনাকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এজন্য ফাউন্ডেশন মনে করছে, এসব প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে দেশের এসএমই উদ্যোক্তারা তথা এসএমই খাত নানাভাবে উপকৃত হবে। তবে এসএমই উদ্যোক্তাদের বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে অর্থায়নের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার চ্যালেঞ্জও থাকবে বলে মনে করছে এসএমই ফাউন্ডেশন। গতকাল রবিবার সংস্থাটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতি বছর প্রাক-বাজেট আলোচনায় ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আয়কর, ভ্যাট, শুল্ক ও বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা শিল্প মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং অন্যান্য সংস্থার কাছে উপস্থাপন করা হয়। এবারের বাজেটে ১৮টি এসোসিয়েশন/ট্রেডবডি থেকে এসএমই খাত সংশ্লিষ্ট ১২০টির বেশি প্রস্তাবনা পাওয়া যায়। সেখান থেকে ৫০টি প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করে প্রাক-বাজেট আলোচনায় উপস্থাপন করা হয়। সেখান থেকে বাজেটে ১৪টি প্রস্তাবনা নেয়া হয়েছে।
এগুলো হচ্ছে- ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রতিরক্ষণে শিল্প কর্তৃক তৈরিকৃত কয়েকটি পণ্য আমদানিতে প্রযোজ্য শুল্ককর বাড়ানো হয়েছে। অ্যাগ্রোপ্রসেসিং এবং কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনকারী উদ্যোক্তাকে ১০ বছর মেয়াদে কর অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। হাল্কা প্রকৌশল শিল্পের সব ধরনের পণ্য, যা শুধু শিল্প-কারখানায় ব্যবহৃত হবে এমন উদ্যোক্তাদের ১০ বছর মেয়াদে কর অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এসএমই খাতের ইনফরমাল উদ্যোক্তাদের ফরমাল হওয়ার উৎসাহ দেয়ার লক্ষ্যে এক ব্যক্তি কোম্পানির (ওপিসি) করহার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২২ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রতিরক্ষণে শিল্পের পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত কতিপয় উপকরণ আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেয়া হয়েছে। পেপারকাপ প্রস্তুতকারী শিল্পের সুরক্ষায় শিল্প কর্তৃক তৈরিকৃত কয়েকটি পণ্য আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক দেয়া হয়েছে। পাওয়ার টিলারের উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। ফাউন্ড্রি শিল্পে স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত স্ক্রাপ সরবরাহের ক্ষেত্রে মূসক অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। নারী উদ্যোক্তাদের মালিকানাধীন এসএমই খাতের কোনো প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক টার্নওভারের পরিমাণ ৭০ লাখ টাকা পর্যন্ত হলে প্রতিষ্ঠানের আয়কে করমুক্ত রাখা হয়েছে।
স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের জন্য শুধু আয়কর রিটার্ন দাখিল ব্যতীত অন্যান্য সকল প্রকার রিপোর্টিংয়ের বাধ্যবাধকতা হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে এবং স্টার্টআপ কোম্পানির লোকসান ৯ বছর পর্যন্ত সমন্বয়ের বিধান রাখা হয়েছে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ব্যবসার প্রসারের জন্য স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে ব্যয় সংক্রান্ত বিধিনিষেধ প্রত্যাহার ও টার্নওভার করহার ০.৬০ শতাংশের পরিবর্তে ০.১০ শতাংশ করা হয়েছে। মুড়ি ও চিনির ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। শিল্পোন্নয়ন উপযোগী দক্ষ মানব সম্পদ তৈরিতে বিভিন্ন কারিগরি বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ প্রদানে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানকে ১০ বছর মেয়াদে কর অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। সিএমএসএমই খাতের ঋণ ও অগ্রিমের নিট স্থিতির পরিমাণ প্রতি বছর কমপক্ষে ১ শতাংশ বৃদ্ধিসহ আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে ন্যূনতম ২৫ শতাংশ উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। নতুন এসএমই উদ্যোক্তাদের সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জামানতবিহীন এবং সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানতসহ পুনঃঅর্থায়ন করার নির্দেশা দেয়া হয়েছে।