ওমর সানীকে গুলি করার হুমকি জায়েদ খানের

আগের সংবাদ

সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ : পাচার হওয়া অর্থ দেশে আনার প্রস্তাবে সমর্থন

পরের সংবাদ

কালো টাকার সুযোগ না পেয়ে পুঁজিবাজারে হতাশা : গতকাল সূচক কমেছে ৪৮ পয়েন্ট

প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাজেট ঘোষণার পর প্রথম কর্মদিবসে পুঁজিবাজারে দরপতন হলো। একদিনে কোনো শেয়ারের সর্বোচ্চ পতনের হার ২ শতাংশ বেঁধে দেয়ার পরও সূচকের ৪৮ পয়েন্ট পতনে বড় দরপতনই বলা যায়। গত সপ্তাহে একটু একটু করে বাড়তে থাকা পুঁজিবাজার গত বৃহস্পতিবার বাজেট ঘোষণার আগে আগে স্লথ হয়ে যায়। বিশ্লেষকরা সেদিন বলেন, পুঁজিবাজারের জন্য কী ঘোষণা আসে সেটা দেখে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেবেন বিনিয়োগকারীরা। এবার বাজেটে পুঁজিবাজারের কোম্পানিগুলোর করপোরেট করের হার আড়াই শতাংশ কমানোর কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। এটিকে স্বাগত জানিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ। তবে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আকাক্সক্ষা ছিল, কালো টাকা নামে পরিচিতি পাওয়া অপ্রদর্শিত আয় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া হবে। কিন্তু সেটি হয়নি। পুজিবাজারে লভ্যাংশের ওপর থেকে দ্বৈত করও প্রত্যাহার হয়নি। পাশাপাশি ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করহার আগের মতোই ৩৭.৫ শতাংশ রাখা হয়েছে।
বাজেট প্রতিক্রিয়া গত শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব রেখেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। এর পরেই গতকাল রবিবার প্রথম কর্মদিবসের লেনদেনের চিত্র বলছে, বাজেট নিয়ে বিনিয়োগকারীরা আশাবাদী হয়নি। একদিনেই দর হারিয়েছে তিন শতাধিক কোম্পানি। এর মধ্যে একটি বড় অংশের দর কমেছে দিনের সর্বোচ্চসীমা ২ শতাংশ পর্যন্ত বা এর আশপাশে। বহু কোম্পানির দর সর্বোচ্চসীমা পর্যন্ত কমার পর ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ে। অর্থাৎ এই বিধান না থাকলে দরপতন আরো বেশি হতে পারত। লেনদেনের শুরু থেকেই সূচক ছিল নি¤œমুখী। আধা ঘণ্টা পরে উঠে দাঁড়াতে চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি। দিন শেষ কমেছে ৩০৬টি কোম্পানির দর, বেড়েছে ৫৩টির, আর ১৯টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে আগের দরেই।
বাজেট ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় গতকাল রবিবার বড় দরপতন দেখে দেশের পুঁজিবাজার কমে গেছে লেনদেনও। বাজেট ঘোষণার দিন যেখানে হাতবদল হয়েছিল ৭৫৮ কোটি ২৬ লাখ ৬২ হাজার টাকার শেয়ার, সেটি কমে হয়েছে ৬৩৬ কোটি ৪০ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এর চেয়ে কম লেনদেন হয়েছিল ৫ মে। সেদিন ডিএসইতে হাতবদল হয়ে ৪৬৮ কোটি ৭০ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। দর বৃদ্ধির তালিকায় অপেক্ষাকৃত দুর্বল ভিত্তির কোম্পানিগুলোর আধিপত্য ছিল। শীর্ষে বিশের প্রায় সবগুলোই ছিল এ ধরনের কোম্পানি। এসব কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের নিয়মিত লভ্যাংশ প্রদান করে না। কোনোটি লভ্যাংশ দিলে খুবই নগণ্য। শীর্ষ দশের ৩টির দর বেড়েছে ৯ শতাংশের ওপরে, একটি করে কোম্পানির ৭ ও ৬ শতাংশের বেশি, দুটির ৫ শতাংশের বেশি, একটির ৮ শতাংশের বেশি এবং দুটি কোম্পানির দর বেড়েছে ৩ শতাংশের বেশি। সবচেয়ে বেশি ৯.৯১ শতাংশ দর বেড়েছে ইন্স্যুরেন্স খাতের কোম্পানি মেঘনা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের। চলতি বছরেই তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির লেনদেন শুরু হয়েছে ৮ জুন। অভিহিত মূল্যের কিছুটা ওপরে থেকে লেনদেন হচ্ছে শেয়ার। ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকা মেঘনা ইন্স্যুরেন্সের দর ১২ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে ১৩ টাকা ৩০ পয়সায় হাতবদল হয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯.৯০ শতাংশ দর বেড়েছে লোকসানি কোম্পানি দুলামিয়া কটনের। লভ্যাংশের ইতিহাস না থাকা কোম্পানিটির শেয়ারদর প্রায়ই অস্বাভাবিক হারে বাড়তে দেখা যায় আবার পড়েও যায়। এরপরেই ৯.০৭ শতাংশ দর বেড়েছে মুন্নু ফেব্রিকসের। নিয়মিত লভ্যাংশ দিতে না পারার পর ২০০৯ সালে ওটিসি মার্কেটে পাঠানো হয় কোম্পানিটিকে। গত বছর ফেরে সেখান থেকে। কিন্তু নগণ্য পরিমাণ মুনাফার পর কোম্পানিটি কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। চলতি অর্থবছরে অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ এসেছে শেয়ারে ১০ পয়সা। বেক্সিমকো গ্রুপের শাইনপুকুর সিরামিকসের দর ৯.৪৮ শতাংশ বেড়ে ৪৫ টাকায় হাতবদল হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ৬.২০ শতাংশ বেড়ে ৪১ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়েছিল। এই কোম্পানিটির ল্যভাংশের ইতিহাস ভালো নয়। তারপরেও প্রায়ই কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়ে যায়। চতুর্থ অবস্থানে থাকা সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের দর ৭.১০ শতাংশ বেড়ে লেনদেন হয়েছে ২১ টাকা ১০ পয়সায়। ধারাবাহিক দুই বছর লভ্যাংশ দিলেও ঘোষিত লভ্যাংশ বিতরণ না করায় কোম্পানিটির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বিএসইসি। ইনফরমেশন সার্ভিস নেটওয়ার্কের দর বেড়েছে ৬.৬৫ শতাংশ। স্বল্প মূলধনি কোম্পানিটি লভ্যাংশ দিলেও খুবই নগণ্য। গত দুই বছরে যথাক্রমে ১ ও ২ শতাংশ হারে লভ্যাংশ পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। ৫.৮৮ শতাংশ দর বেড়ে ১৯ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে ন্যাশনাল ফিড মিলসের শেয়ার। কোম্পানিটির লভ্যাংশের ইতিহাসও খুব বেশি ভালো নয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়