রাজধানীর বছিলায় জুতার কারখানায় আগুন

আগের সংবাদ

সংসদে প্রধানমন্ত্রী : দেড় বিলিয়ন ডলার সহায়তা সংগ্রহের চেষ্টা চলছে

পরের সংবাদ

পেটুক পিপিন

প্রকাশিত: জুন ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

পিপিন খালি খাইখাই করে। সারাদিন একটানা খাইখাই। রাতের বেলাও থামে না। ঘুমিয়েও বলতে থাকে, খাব। আমাকে খেতে দাও। খাইখাই করতে করতে মাঝেমাঝেই ঘুম ভেঙে যায় পিঁপড়ে খোকা পিপিনের। খাইখাই করা ছাড়া ওর কোনো কাজ নেই।
পিপিন এমন পেটুক, পেটের খাবার হজম হবার সময়ই দেয় না। মুখের খাবার শেষ হতে না হতেই আবার খেতে চায়। খেতে খেতে পেটটা হয়ে গেছে বালিশ।
পিপিনের মা বলেন, বেঁচে থাকার জন্য খেতে হয়। তবে এত বেশি খাওয়া ভালো না। বেশি খেলে শরীর খারাপ হয়। অসুখ করে। নানারকম বিপদে পড়তে হয়। তাই খেতে হয় পরিমাণ মতো। বুঝেছ পিপিন?
মাথা ঝাঁকায় পিপিন। মাথা ঝাঁকানি দেখে মনে হবে, কথায় কাজ হয়েছে। আসলে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। একচিলতেও না। এক কান দিয়ে শুনেছে, আর এক কান দিয়ে বের করে দিয়েছে।
শুধু মায়ের বারণ নয়, দিনে যে কতবার বাবার ধমক খায়, তার হিসাব নেই। ধমক খেয়েও খাইখাই করতেই থাকে। খেতে না দিলেই কাঁদতে থাকে। চেঁচামেচি করে। রেগেমেগে গাল ফুলিয়ে চালকুমড়ো বানায়।
কখনো কখনো কাউকে কিছু না বলে নিজেই বেরিয়ে যায় খাবারের খোঁজে। কোথায় গেলে মজার মজার খাবার পাওয়া যায়, সবই ওর জানা। একাজ করতে গিয়ে বিপদেও কম পড়েনি ও।
একবার খেয়েছিল অনেক অনেক পাউরুটির গুঁড়ো। মন যত চায়। পেটে যত ধরে। তারপর খেয়েছিল পানি। পানি খাওয়ার পর পেটের পাউরুটির গুঁড়োগুলো আরো ফুলেফেঁপে উঠল। পেটও ধীরে ধীরে ফুলতে লাগল। ফুলতে ফুলতে ফাটুম ফাটুম। কখন জানি বেলুনের মতো ফুটুস করে ফেটে যায়! দম নেয়ারও জো নেই যেন। হাঁসফাঁস করতে করতে প্রাণ যায় যায়। কোনো উপায় না পেয়ে জোরে জোরে কাঁদতে লাগল পিপিন। তখন ওর পিঁপড়ে মা ও

পিঁপড়ে বাবা এসে তাড়াতাড়ি হজমের ওষুধ খাইয়ে দিলেন। তবেই পেট ফোলা কমতে শুরু করল।
আবার একদিন চিনির বয়াম দেখে মাথা খারাপ হয়ে গেল পিপিনের। চিনি খাওয়ার জন্য বয়ামের গা বেয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে লাগল। আর ভাবতে লাগল, কীভাবে ভেতরে ঢোকা যায়। বয়ামের মুখের ঢাকনাটা খুব আঁটোসাঁটোভাবে লাগানো। ঢোকার পথ নেই। তবুও পিছপা হলো না পিপিন। তালাশ করতে লাগল, কোনো পথ পাওয়া যায় কি না। হঠাৎ বয়ামের গায়ে পেয়ে গেল একটা ফুটো। ফুটোটা খুবই সরু। এমন রকম সরু, ঢুকতে গেলে শরীর ছিলেও যেতে পারে। সেই ভয় একটুও নেই পিপিনের। দেরি না করে সেখান দিয়েই কোনোমতে ঢুকে পড়ল।
বয়ামের ভেতরে প্রবেশ করে পিপিন নিজেকে মনে করল চিনিরাজ্যের রাজা। যত খুশি চিনি খাবে, কেউ কিছু বলবে না। এই ভেবে আনন্দে নাচতে লাগল। নেচে নেচে খাওয়া শুরু করল চিনি। চেটে চেটে অনেক চিনি খেয়ে ফেলল। পেটে আর জায়গা নেই। পেটটা হয়ে গেল তুলোর বস্তা। এমন সময় বয়াম থেকে বেরোবার জন্য সেই ফুটোর কাছে গেল পিপিন। বেরোতে চেয়েও পারল না। ফুটো দিয়ে মাথা ঢোকে, পেট ঢোকে না। ঠেকে যায়। কারণ, ফুটোর চেয়ে পেটটা মোটা হয়ে গেছে। কী মুশকিল!
পিপিন ভাবল, এ বাড়ির মানুষ যখন চিনি বের করতে বয়ামের ঢাকনা খুলবে, তখনই দৌড়িয়ে বেরিয়ে পড়ব। তবে এতেও ভয় আছে। তখন যদি চিনির তলে চাপা পড়ে যায়! মানুষের হাতের ঘষা খেলেও জীবন শেষ! এসব ভেবে বয়ামের এককোণে বসে কাঁদতে লাগল পিপিন। তখন মা-বাবার কথা মনে পড়ল ওর। কী কারণে মা-বাবা পরিমাণমতো খেতে বলেন, বেশি খেতে নিষেধ করেন, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে এখন। পিপিন মনে মনে বলল, আর কখনো বেশি খাব না। সব সময় মা-বাবার কথা শুনব। এই বিপদ থেকে বাঁচাও প্রভু!
বয়ামের ভেতর বসে থাকতে থাকতে পেটের চিনি হজম হতে শুরু করল। ফোলা পেট চুপসে যেতে লাগল। অনেক সময় পর পেটের আকার স্বাভাবিক হলো। তখন ফুটো দিয়ে সহজেই বেরিয়ে এলো পেটুক পিপিন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়