ডিএমপি কমিশনার : জীবনে সফলতার শর্টকাট কোনো রাস্তা নেই

আগের সংবাদ

বিপজ্জনক জেনেও সংরক্ষণে ত্রæটি

পরের সংবাদ

স্ট্রবেরি চাষে লাখপতি চাঁপাইয়ের ফাহাদ : তিন মাসে আয় ২৮ লাখ টাকা

প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আতিক ইসলাম সিকো, শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) থেকে : চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার স্ট্রবেরি চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন চাষি ফাহাদ আলী। এখানকার উৎপাদিত স্ট্রবেরি জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হচ্ছে। তবে ৩ মাসে ৪ বিঘা জমিতে এখন পর্যন্ত ২৫ লাখ টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি করে এলাকাবাসীকে অবাক করে দিয়েছেন উপজেলার ফাহাদ আলী নামে এক যুবক। অন্য কৃষকরা বলছেন- এত স্বল্প জমিতে এত বেশি টাকার স্ট্রবেরি এর আগে কেউ বিক্রি করতে পারেননি।
সরজমিন দুর্লভপুর ইউনিয়নের পারকালুপুর এলাকার ফাহাদ আলীর স্ট্রবেরির বাগানে গিয়ে দেখা যায়, চার বিঘা জমি বর্গা নিয়ে স্ট্রবেরির চাষ করছেন তিনি। দুই ভাইসহ প্রায় ৩০ জন শ্রমিক নিয়ে দিন-রাত পরিচর্যা করছেন। এ থেকে গেল ৩ মাসে প্রায় ২৫-২৮ লাখ টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি করেছেন তিনি। আশা করছেন আগামী কয়েক সপ্তাহে আরো ৬-৮ লাখ টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি করবেন। স্ট্রবেরি চাষি ফাহাদ আলী বলেন, আমি গত তিন বছর থেকে স্ট্রবেরি চাষ করছি।
গত বছর ২ বিঘা জমিতে চাষ করেছিলাম। এতে প্রায় ১২ লাখ টাকা পেয়েছিলাম। আর এবার ৪ বিঘা জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করে প্রথম থেকেই মনোযোগ দিয়ে পরিচর্যা করেছি। ফলে ফলনও হয়েছে ভালো।
গত ৩ মাসে প্রায় ২৮ লাখ টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি করেছি। আর এতে মোট খরচ হয়েছে সাড়ে ৫ লাখ টাকা। তবে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করি না। ক্ষেত থেকে সংগ্রহের পর তা ট্রাকযোগে পাঠানো হয় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে। সেখানে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজি দরে। তিনি আরো বলেন, গত কয়েক বছর আগে আমার কাছে তেমন টাকা-পয়সা ছিল না। স্ট্রবেরি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছি। তিন তলা বাড়ি নির্মাণ করেছি। সামনের বছর আরো বেশি স্ট্রবেরি চাষাবাদ করব। আরেক স্ট্রবেরি চাষি সাইরন আলী বলেন, ফাহাদের হাতে স্ট্রবেরি চাষের জাদু আছে। ওর মতো ভালো ফলন কারো হচ্ছে না। আমারও ১ বিঘা জমিতে স্ট্রবেরি ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র সাড়ে তিন লাখ টাকা পেয়েছি। এর মধ্যে খরচ হয়ে গেছে প্রায় ২ লাখ টাকা। ফলে প্রতিদিন একবার হলেও ফাহাদের স্ট্রবেরি বাগান দেখতে আসি। অন্যদিকে মাসিদুল নামে এক চাষি বলেন, আমি গত দুই বছর ধরে স্ট্রবেরি চাষ করছি। এবার দুই বিঘা জমিতে স্ট্রবেরি ছিল। বিভিন্ন রোগবালাই থেকে রক্ষা করতে পারিনি। মাত্র সাড়ে চার লাখ টাকা পেয়েছি। এই এলাকায় ফাহাদের মতো কারো ফলন ভালো হয়নি বাগানে। ফাহাদের স্ট্রবেরি বাগানের এক শ্রমিক বলেন, গত তিন বছর থেকে আমি প্রায় ৩০ জন শ্রমিক নিয়ে এ জমিতে কাজ করছি। প্রতিদিন ৩৫০ টাকা করে পারিশ্রমিক দেয়া হয়। এ দিয়েই চলে আমার সংসার। আশপাশে কারো এখন স্ট্রবেরির ফলন হয়নি। ফাহাদের স্ট্রবেরি বাগানে কাজ করতে পেরে খুশি আমরা।
এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম ভোরের কাগজকে বলেন, এবার কৃষি বিভাগের সমন্বয়ে জেলায় মোট ২৫-২৬ হেক্টর জমিতে স্ট্রবেরি চাষ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। বিশেষ করে ছোট আম বাগানে বেশি স্ট্রবেরি চাষ হচ্ছে। জেলার ৫ উপজেলার মধ্যে শিবগঞ্জ উপজেলার বেশি স্ট্রবেরি চাষ করছেন চাষিরা। এতে অধিক লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়