মাসুদ রানা সিরিজ কার জানা যাবে ১৩ ডিসেম্বর

আগের সংবাদ

পাঠ্যবই নিয়ে এনসিটিবির ঢিলেমি : যথাসময়ে ছাপার কাজ শুরু হয়নি > ১ জানুয়ারি আংশিক বই পাবে শিক্ষার্থীরা > মাঠে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়

পরের সংবাদ

নতুন প্রজন্মের চোখে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গত পঞ্চাশ বছর ধরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিভিন্ন পেশাজীবী ও দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদদের ত্যাগ, তিতিক্ষা, পরিশ্রম, কষ্ট এবং স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির মোকাবিলা করে ধীরে ধীরে হলেও গরিব দেশ থেকে স্বল্প উন্নয়নশীল দেশ, তারপর পঞ্চাশ বছরে এসে বিশ্বের অন্যতম উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদার গৌরব অর্জনে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে দেশের যে বর্তমান অবস্থান, সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে এ প্রজন্মের তারকাদের মতামত কী? জানিয়েছেন শোবিজের কয়েকজন তারকা। শুনেছেন রোমান রায়

বাংলাদেশ আমার গর্ব : সিয়াম আহমেদ

স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে বহমান আমাদের দেশ। এটা অত্যন্ত গর্বের। আমার চাওয়া-পাওয়া খুব সীমিত। আমি আমার পরিবারের সবাইকে নিয়ে সুখে-শান্তিতে, নিরাপদে সম্মানের সঙ্গে আমার এদেশে ভালো থাকতে চাই। আমি আমার দেশকে খুব ভালোবাসি। দেশের মাটির গন্ধ আমার কাছে ভালো লাগে। এ দেশে সব ধর্মের মানুষ যেন পরস্পরকে সম্মান দিয়ে একসঙ্গে বসবাস করতে পারি। কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে কোনো আঘাত আনা যাবে না। এভাবে আমরা একটু একটু করে এগিয়ে যেতে পারব। তবেই দেশের উন্নয়ন সম্ভব। আমি যেহেতু সিনেমার মানুষ, তাই আমি সিনেমা নিয়ে কথা বলতে চাই। সিনেমায় কাজ করার স্বপ্ন নিয়ে এসেছি। স্বপ্ন তো আর একদিনে পূরণ হয় না। সেটার জন্য সময় লাগে। এখন একটা আশার বিষয় হচ্ছে যে, শিক্ষিত সমাজ, শিক্ষিত মানুষজন সিনেমার সঙ্গে জড়িত হচ্ছেন। এটা ভাবতে এখন ভালো লাগে। মধ্যবিত্তরা আবারও সিনেমা দেখতে শুরু করেছে। যেটা মাঝে অনেক দিন বিরতি ছিল। তবে অন্যান্য শিল্প যতটা এগিয়েছে সে অর্থে আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পটা এগোতে পারেনি। চলচ্চিত্র হচ্ছে একটা দেশের দর্পণ। কোনো অজ্ঞাত বা জ্ঞাত কারণে হোক আমরা পিছিয়ে পড়েছি। আমাদেরকে মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে হবে। আমাদের এই সমস্যাগুলো প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী সবসময় আমাদের শিল্পীদের সাহায্য সহযোগিতা করে আসছেন। জেলা শহরগুলোতে কিছু ভালো হল নির্মাণ করা জরুরি। এভাবে আমাদের চলচ্চিত্রের উন্নয়ন সম্ভব।

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে : মেহজাবীন চৌধুরী

স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর চলছে। আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের অনেক কিছুতে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। পদ্মা সেতু, ফুট ওভারব্রিজ, ফ্লাই ওভারব্রিজ, মেট্রোরেল নির্মাণ হচ্ছে। আজ থেকে ১০-১৫ বছর আগে যে সমস্যায় পড়তাম সেটা অনেকটা কমে আসছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হচ্ছে। আরো অনেক কিছুতে উন্নয়ন ঘটছে। এভাবে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে দেশ একদিন উন্নত দেশে পরিণত হবে। দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। সচেতন নাগরিকই পারে দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে। যেহেতু দেশ সব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে তাহলে আমাদের শিল্প কেন পিছিয়ে থাকবে। আমাদের শিল্পের জন্য একটা ফিল্ম সিটি খুব প্রয়োজন। যেখানে সব সুবিধাসহ আরামে কাজ করতে পারব। শুটিংয়ের সব সুযোগ-সুবিধা ফিল্ম সিটিতে থাকবে। আমরা একটা গল্প ভালো মতো ফুটিয়ে তুলতে পারি না। ফিল্ম সিটি নির্মাণ হলে কাজের মানও বেড়ে যাবে। সরকার এদিকেও নজর দিচ্ছে। এটা শিল্প-সংস্কৃতির জন্য অত্যন্ত সুখবরের।
আরো বলবো, সরকারকে এদেশের হলগুলোকে আধুনিকীকরণ করার দিকে নজর দিতে হবে। শুনেছি, সরকার সিনেমাহলগুলো সংস্কারের জন্য এবং বন্ধ হল পুনরায় চালু করতে বাজেট বরাদ্দ করেছে। এভাবেই ধীরে ধীরে সিনেমাশিল্প আরো সামনের দিকে এগুবে।
প্রযুক্তির উন্নয়নেও সরকারকে আরো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। তখনই সংস্কৃতিক্ষেত্র আরো
সমৃদ্ধ হবে।

ইতিবাচক বিষয় নিয়ে
এগোতে হবে : ইয়ামিন হক ববি

স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্ণ হয়েছে এটা আমাদের গৌরবের। আমরা স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক। আমরা নিজের ভাষায় কথা বলতে পারছি এটা আনন্দের। আমরা তো সে সময়ে ছিলাম না। আমরা গল্প শুনে, বই পড়ে জেনেছি সে সময়টা কতটা কঠিন ছিল। পরাধীন থাকাটা যে কত কষ্টের। নিজের ভাষায় কথা বলতে না পারার কষ্ট। তাই আমরা এখন সুখি যে, আমরা আর পরাধীন নই। আমাদের নেতিবাচক বিষয়গুলো বাদ দিয়ে ইতিবাচক বিষয় নিয়ে এগোতে হবে। মিডিয়াতে কাজের ক্ষেত্রে মেয়েদের আরেকটু স্বাধীনতা দেয়া উচিত। মিডিয়াতে মেয়েরা ভালো করলেও কিংবা কোনো কিছু খারাপ হলে সবাই ভাবে তার পেছনে কেউ আছে। এটা কেন? পুরুষ শিল্পীরা ভালো করলে সবাই বাহবা দেয়। আর আমরা মেয়ে শিল্পীরা ভালো করলেও একটা দুইটা কথা চলে আসে। সবাই সবার সাহায্য নিয়ে কাজ করে। তাই চিন্তা-ভাবনার জায়গা থেকে মেয়েদের ক্ষেত্রে ইতিবাচক হওয়া উচিত। সিনেমার জন্য সিনেমা হলের কোনো বিকল্প নেই। সিনেমা হল নির্মাণ এবং যেগুলো আছে সেগুলোর সংস্করণ করা দরকার। আর প্রযুক্তিতে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে আমরা সবাই লড়াই করে যাচ্ছি। তাই আমি হতাশার কথা বলব না। আর খারাপ লাগে যখন দেখি কারো সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও গরিব অসহায় মানুষদের পাশে এসে দাঁড়ায় না। কেউ পাঁচতারকা হোটেলে খাচ্ছে আর এদিকে না খেতে পেয়ে অনেকে রাস্তায় শুয়ে আছে। এগুলো খুব কষ্ট দেয়।

পঞ্চাশ বছর দীর্ঘ সময় : ইরফান সাজ্জাদ

মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের দেশের অনেক মেধাবী বুদ্ধিজীবী সাহায্য করেছিলেন। তাদের বিভিন্ন ধরনের বিচক্ষণতার কারণে আমরা অনেক কঠিন সময় সুন্দর ভাবে পার করে এসেছি । সবচেয়ে বড় ব্যাপার যদি বলি- আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মারা যাওয়ার পর এত বছরে তার মতো কোনো যোগ্য নেতা পাইনি। এই পঞ্চাশ বছরে সমসাময়িক বা আরো কম সময়ে যে দেশগুলো স্বাধীন হয়েছিল, সে দেশগুলো যেভাবে এগিয়ে গেছে আমাদের দেশ সেভাবে পারেনি। দিন শেষে আমার একটা প্রশ্ন- আসলে কি আমাদের দেশে যোগ্য লোকের অভাব নাকি সততার অভাব? আর যদি সততার অভাব হয়ে থাকে তাহলে পঞ্চাশ বছর কেন একশো বছরেও আমরা আমাদের দেশকে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে নিয়ে যেতে পারব না। যে সরকারই আসুক না কেন এটা নিয়ে চিন্তা করা দরকার। পঞ্চাশ বছর একটা দীর্ঘ সময়। এত দিনে আমাদের অনেক উপরে থাকার কথা। সেই জায়গায় আমরা এখনো উন্নয়নশীল দেশের কাতারে রয়ে গেলাম। যেহেতু এখন ব্যবসা করার সুযোগ, কাজ করার সুযোগ, দেশকে আরো সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে। যাদের এই পদক্ষেপ নেয়ার কথা তারা হয়তো ঠিকমতো নিচ্ছেন না। তাই যতটুকু উন্নয়ন সম্ভব তা হচ্ছে না। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা ততোটা ভালো না। খাদ্যদ্রব্যের মূল্য অধিক। পোশাকের দাম প্রচুর। আমাদের শিল্পটাও ততো উন্নত না। এখানেও অনেক কিছুতে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এখনো টেকনিশিয়ানের জন্য পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে নিয়ে আসতে হয়। আসলে সব ক্ষেত্রেই সমস্যা রয়েছে।

বিজয় উদযাপনটা
অনেক আনন্দের : সানিয়া সুলতানা লিজা

স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর এটা আমাদের কাছে একটা আনন্দের ব্যাপার। আমি যেহেতু গানের মানুষ তাই গানের বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই। আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে পঞ্চাশ বছর হয়েছে। একদিক দিয়ে চিন্তা করলে সময় অনেক হয়েছে, আবার সময়টা কমও মনে হয়। অন্যান্য মাধ্যমের সঙ্গে তুলনা করলে আমরা আরো এগিয়ে যেতে পারতাম। তবুও বর্তমানে যে অবস্থান তাতে আমি ব্যক্তিগতভাবে সন্তুষ্ট। অন্তত এই জায়গায় থেকে একটা কথা বলতে পারি, একটা সময় পর আর এই প্রজন্মকে দুস্থ শিল্পী বলতে হবে না। আমরা এই প্রজন্মের শিল্পীরা আস্তে আস্তে শিখছি আর নিজেদের জায়গাটা গুছিয়ে নিচ্ছি। সরকার আমাদের যথেষ্ট সাহায্য করছে। এখন আমরা অনেক বেশি শো করতে পারছি। যেটা ১২ বছর আগেও ছিল না। সংগীত নিয়ে এখন অনেক বেশি আয়োজন হচ্ছে। আমরা নিজেদেরটা নিজেরা করার সুযোগটা পাচ্ছি এখন। সবমিলিয়ে সংগীতে একটা আশার জায়গা দেখতে পাচ্ছি। সেটা হচ্ছে সংগীতে আমাদের একটা সমিতি হয়েছে। আমরা আশা করছি সেখান থেকে আমরা সবাই উপকৃত হব। আমরা মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি। তারপরও আমরা সেটা উদযাপন করতে পারছি। এটা আমাদের জন্য গর্বের। আমি অনেক দেশে গান করার জন্য যাই। সেসব দেশগুলো দেখে আমার খুব দুঃখ হয়। সে তুলনায় আসলে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। তবে ধীরে ধীরে দেশ যে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে এটাও সত্য।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়