কাগজ প্রতিবেদক : বাজারে জিনিসপত্রের সরবরাহের কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু যেসব জিনিস আমদানিনির্ভর, ব্যবসায়ীরা সেসব জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ। আমদানি দাম বেড়েছে বলে তারাও দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন উল্লেখ করে সচিব বলেন, এখন থেকে আমদানি করতে যেটুকু দাম স্থানীয় বাজারে আনুপাতিক হারে সেটুকুই যেন দাম বাড়াতে পারে তার জন্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা এ ব্যাপারে কঠোর মনিটরিং করবেন। কিন্তু এ সুযোগ নিয়ে যারা জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেবে তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য মোবাইল কোর্ট চালানো হবে।
সম্প্রতি কয়েক দিন ধরে বেসামাল চাল, চিনি ও ভোজ্য তেলের বাজার। এমন পরিস্থিতিতে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো নিয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করতে গতকাল বুধবার সংবাদ সম্মেলনে আসেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তিনটি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ায় বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়েছে। তবে এ সুযোগে নিয়ে কোনো অসৎ ব্যবসায়ী মুনাফা করার জন্য অতিরিক্ত মজুত করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সচিব বলেন, আমদানি মূল্য বেড়েছে শুধুমাত্র ভোজ্যতেল এবং চিনির। কিন্তু ব্যবসায়ীরা এ সুযোগে অনেক পণ্যের দামই বাড়িয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং করছে। সাপ্লাই চেইন ঠিক থাকলে জিনিসপত্রের দাম বাড়বে না বলেও জানান বাণিজ্য সচিব। এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সফিকুজ্জামান বলেন, চিনির খুচরা মূল্য আপাতত ৭৫ টাকা থেকে ৮০ টাকার মধ্যেই থাকবে বলে আলোচনা হয়েছে।
বাণিজ্য সচিব গতকাল বুধবার ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত, সরবরাহ, আমদানি, মূল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করে এসব কথা বলেন। টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আরিফুল হাসান, সিটি গ্রুপ, টিকে গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন, ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলাসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্য সচিব বলেন, বাজারে যাতে পণ্য সরবরাহে কোনো ধরনের ঘাটতি বা ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয় অথবা কৃত্রিম উপায়ে পণ্যের সংকট সৃষ্টি করা না হয়, সে বিষয়ে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য খোলা বাজারে বিক্রয় অব্যাহত রেখেছে।
গত বছরের চেয়ে এবার প্রায় আড়াইগুণ বেশি পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছে। অন্যায়ভাবে পণ্যর মজুত করলে বা কৃত্রিম উপায়ে মূল্যবৃদ্ধির চেষ্টা করা হলে সরকার আইন মোতাবেক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সচিব এ সময় বলেন, বাজারে চাউলের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে সরকার চাউল আমদানি শুরু করেছে এবং আমদানি শুল্ক কমানো হয়েছে।
পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আমদানিকৃত ভোজ্যতেল এবং চিনির যৌক্তিক মূল্য নিশ্চিত করতে মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।