ওবায়দুল কাদের : ২১ আগস্ট মামলার আপিল শুনানি শুরু শিগগিরই

আগের সংবাদ

মহামারিতে মেগা প্রকল্পে স্থবিরতা

পরের সংবাদ

পরকীয়ার জেরে স্বামীকে খুন : সাভারে এলিম হত্যাকাণ্ডে স্ত্রীসহ প্রেমিক গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ডিস ব্যবসায়ী হওয়ায় স্বামীর হত্যাকাণ্ড ব্যবসায়িক বিরোধের জেরে সংঘটিত হয়েছে-এমনটাই প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিল স্ত্রী সুলতানা আক্তার কেমিলি (৩০)। তবে তদন্তে ঘটনা অন্যদিকে মোড় নেয়। খুলতে থাকে রহস্যজট। বেরিয়ে আসে দুই সন্তানের মা স্ত্রী কেমিলিয়ার পরকীয়ার ঘটনা। পরকীয়ার জেরেই প্রেমিক রবিউল করিম পিন্টুর (৩৫) সঙ্গে মিলে স্বামী এলিম সরকারকে (৪২) হত্যা করা হয়।
সাভারের আশুলিয়ার ডিস ব্যবসায়ী এলিম সরকার ক্লুলেস হত্যা মামলা রহস্য উদঘাটন নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকা জেলার এসপি মোহাম্মদ খোরশেদ আলম। রাজধানী উত্তরার পিবিআই ঢাকা জেলা কার্যালয়ে গতকাল বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। এসপি বলেন, তদন্ত ও তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে আশুলিয়া জিরাবো জামগড়া এলাকা থেকে নিহতের স্ত্রী মোসা. সুলতানা আক্তার কেমিলি ও তার পরকীয়া প্রেমিক মো. রবিউল করিম পিন্টুকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা জেলা পিবিআই। তিনি আরো বলেন, ডিস ব্যবসায়ী এলিম সরকার স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন আশুলিয়া থানাধীন কাঠগড়া এলাকায়। প্রতিদিনের মতো গত ২৭ মার্চ রাত ১০টার দিকে খাওয়া-দাওয়া শেষে এলিম সরকার তার স্ত্রী সন্তানসহ ঘুমিয়ে পড়ে। পরের দিন ২৮ মার্চ সকাল ৮টার দিকে এলিম সরকারের স্ত্রী সুলতানা আক্তার কেমিলি ঘুম থেকে উঠে জরুরি প্রয়োজনে তার শ্বশুর ফজল হক সরকারের বাড়িতে যান। বাড়ির অন্যদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শেষে ওই দিন সকাল ১০টার দিকে বাড়িতে ফিরে আসেন কেমিলি। বাসায় ঢুকেই স্বামী এলিম সরকারের লাশ দেখতে পায়। তখন স্বামীর গলার নিচে ১টি ও পেটে ১১টি ও পিঠে ধারালো অস্ত্রের ১টি আঘাত দেখতে পায় বলে জানায় সে। পরে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী এলিমের বাবা ফজল হক সরকার বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। যেহেতু নিহত ব্যক্তি আশুলিয়ায় ডিস ব্যবসা করতেন। তাই হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাটি ডিস ব্যবসাকেন্দ্রিক ঝামেলায় ধাবিত করতে চেয়েছিল কেমিলি। তবে তদন্তে বেরিয়ে আসে আসল ঘটনা। মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, মামলাটি আশুলিয়া থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআইও তদন্ত করছিল। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তদন্তে আসামিদের আটক করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, রবিউল করিম পিন্টু আশুলিয়া এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে লাইনম্যান হিসেবে চাকরি করেন। সেই সুবাধে স্থানীয় ডিস ব্যবসায়ী এলিম সরকারের বাসায় বিদ্যুতের মিটার লাগানোর কাজ করতে গিয়ে তার স্ত্রী সুলতানা আক্তার কেমিলির সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ২০১৯ সাল থেকে তাদের পরকীয়া চলে আসছিল। বিষয়টি স্বামী এলিম সরকার টের পায়। পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও জানাজানি হয়ে যায়। এই নিয়ে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করে স্ত্রী কেমিলি। প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামীকে ভাড়াটিয়া খুনি দিয়ে হত্যা করতে চাইলেও ব্যর্থ হয়।
পরে পিন্টু একাই হত্যা করবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়। সেই অনুযায়ী, কেমিলি রাতেই তার স্বামী এলিম সরকারকে দইয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ায়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৮ মার্চ সকাল অনুমান ৮-৯টার মধ্যে কেমিলির পরামর্শে পিন্টু তার এক বন্ধুকে নিয়ে বাসায় ঢোকে। নিস্তেজ পড়ে থাকা এলিমকে চাকু দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে বাসার সিসি ক্যামেরা ও ডিভিআর নিয়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় পিন্টুর বন্ধু পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তদন্তের স্বার্থে তার নাম এখনই বলা যাচ্ছে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়