কাগজ প্রতিবেদক : দেশের পুঁজিবাজারে আবারো দাপট দেখাতে শুরু করেছে ব্যাংক খাত। সেই সঙ্গে চাঙ্গা উঠেছে বিমা খাত। মূলত এই দুই খাতের দাপটে গতকাল মঙ্গলবার পুঁজিবাজারে মূল্যসূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম। সেই সঙ্গে বড় অঙ্কের লেনদেন হয়েছে।
এক সময় পুঁজিবাজারের প্রাণ হিসেবে বিবেচিত হতো ব্যাংক খাত। ২০১০ সালের মহাধ্বসের পর ক্রমে তলানিতে নামতে থাকে ব্যাংকের শেয়ার দাম। ভালো লভ্যাংশ দেয়ার পরও বিনিয়োগকারীদের বড় অংশ ব্যাংকের শেয়ারেরপ্রতি আগ্রহী হচ্ছিল না। ফলে দিনের পর দিন অবমূল্যায়িত থাকে বেশির ভাগ ব্যাংকের শেয়ার দাম। সম্প্রতি কিছু ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গতকাল ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়ার পালে নতুন করে হাওয়া লেগেছে। এদিন তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে ৩০টির দাম বেড়েছে। বাকি একটির শেয়ার লেনদেন হয়নি।
ব্যাংকের এই দাপটের মধ্যে আবার বেশ গরম হয়ে ওঠে বিমা খাত। এ খাতে তালিকাভুক্ত ৫১টি কোম্পানির মধ্যে ৪৮টির শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে তিনটির। বিমা কোম্পানিগুলোর শেয়ার দাম অস্বাভাবিক বাড়ার ঘটনা ঘটে গত বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরে। অধিক মুনাফার আশায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ সেই অস্বাভাবিক দামে শেয়ার কেনে। এরপর দাম কমে যাওয়ায় লোকসানের মধ্যে পড়েন অনেকে।
দাম বাড়ার ক্ষেত্রে ব্যাংক ও বিমা কোম্পানিগুলো দাপট দেখানোর কারণে মূল্যসূচকেও ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৭৮৭ পয়েন্টে উঠে এসেছে, যা এ যাবৎকালের মধ্যে সূচকটির সর্বোচ্চ অবস্থান।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৪২২ পয়েন্টে নেমে গেছে। আর ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক দশমিক ২০ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৬৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১৯২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭৪টির। আর আটটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৬৭৩ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ২ হাজার ৯৫৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ২৮০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১০৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আইএফআইসি ব্যাংকের ১০০ কোটি ২৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৯৬ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১১৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১০৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩২৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪৭টির ও ১৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।