সবুজ বাংলাদেশকে সবুজতর করার আহ্বান আইজিপির

আগের সংবাদ

হুমকির মুখে রোহিঙ্গা জাতিসত্তা : বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের প্রস্তাব নিয়ে কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত

পরের সংবাদ

এনবিআরের ইএফডি স্থাপনে ধীরগতি কাটছেই না

প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আলী ইব্রাহিম : ভ্যাট আদায়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) মেশিন চালু করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট ইএফডির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। লক্ষ্য ছিল চলতি বছরের জুনের মধ্যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ১০ হাজার ইএফডি ও এসডিসি মেশিন স্থাপন করা। তবে নতুন অর্থবছরের প্রথম মাস কেটে গেলেও মাত্র ৩ হাজার ৩৯৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইএফডি বসানো সম্ভব হয়েছে। বাকি ৬ হাজার ৬০৭টি মেশিন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বসাতে পারেনি এনবিআর।
এছাড়া ভ্যাট অনলাইনেও চলছে নানা জটিলতা। অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন দিতে পারছেন না ভ্যাটদাতারা। সব মিলিয়ে ভ্যাট সংক্রান্ত জটিলতা কাটছেই না। তবে নির্ধারিত সময়ে ইএফডি সরবরাহ করতে না পেরে বিকল্প খুঁজছে এনবিআর। এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম ডিজিটাল পদ্ধতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ইএফডির উদ্বোধন করেন। তখন প্রাথমিকভাবে ১০০টি মেশিন বসানো হয়। উদ্বোধনের পর প্রথম পর্যায়ে ১১৭টি, দ্বিতীয় পর্যায় ১ হাজার ৬১টি, তৃতীয় পর্যায় ২৯৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইএফডি ও এসডিসি মেশিন বসানো হয়েছিল। এনবিআর চেয়ারম্যানের মেয়াদ শেষ পর্যায়ে চলে এলেও ইএফডি পাননি ভ্যাটদাতারা।
নির্ধারিত সময়ে ইএফডি সরবরাহ করতে না পেরে বিকল্প পথ খুঁজছে এনবিআর। এখন এনবিআর তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ইএফডি নেবে। প্রক্রিয়াটি হবে, তৃতীয় পক্ষ ইএফডি কিনে দোকানগুলোতে সরবরাহ করবে। আর ইএফডি সরবরাহ এবং সার্ভিস বাবত একটা নির্ধারিত পরিমাণে কমিশন পাবেন সরবরাহকারীরা। এতে এনবিআরের খরচও বাচবে ইএফডি সরবরাহ করা যাবে।
সূত্র আরো জানায়, এনবিআরের পরিকল্পনা ছিল ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে ৩ হাজার, মার্চের মধ্যে ৪ হাজার এবং জুনের মধ্যে ১০ হাজার ইএফডি ও এসডিসি মেশিন স্থাপন করা। কিন্তু এনবিআর অদ্যাবদি এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। তবে এনবিআরের দাবি, করোনার সংক্রমণ রোধে সরকারের দেয়া কঠোর বিধিনিষেধের কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এছাড়া বর্তমান বাস্তবতায় মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। যে কারণে লক্ষ্য পূরণ হয়নি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআর সদস্য (ভ্যাট বাস্তবায়ন ও আইটি) আব্দুল মান্নান শিকদার বলেন, ইএফডি স্থাপন আমাদের একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প ছিল। সরকারের দেয়া কঠোর বিধিনিষেধ ও করোনা সংকটের কারণে এনবিআর লক্ষ্য পূরণ করতে পারেনি। তবে এটি চলমান প্রক্রিয়া। আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ইএফডি একটি আধুনিক হিসাবযন্ত্র। এটি ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্টারের (ইসিআর) উন্নত সংস্করণ। এ যন্ত্র বসানো হলে প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত লেনদেন বা বিক্রির তথ্য জানতে পারবে এনবিআর।
এর মধ্যে কত অংশ ভ্যাট তা জানা যাবে। ফলে ফাঁকি বন্ধ হবে এবং আদায় বাড়বে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দৈনিক লেনদেনের তথ্য তদারকিতে রাজস্ব বোর্ডের সার্ভারের সঙ্গে সফটওয়্যারের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকবে ইএফডি মেশিন। সার্ভার ইতোমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। মূলত হোটেল, রেস্তোরাঁ, ডিপার্টমেন্টাল স্টোরসহ সেবা খাতের লেনদেনের তথ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে ভ্যাটের হালনাগাদ তথ্য পেতে ইএফডি মেশিন বসানো হচ্ছে। ২৫টি সেবা খাতে ইএফডি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নেয়া। ব্যবসায়ীদের এ মেশিন ব্যবহারে উৎসাহিত করতে প্রথম পর্যায়ে বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে।
এনবিআর গত অর্থবছরে ইএফডি চালুর প্রক্রিয়া শুরু করে। এর আগে ২০০৮ সালে পরীক্ষামূলকভাবে ইসিআর মেশিন ব্যবহার করা হয়। তবে তা সফল হয়নি। এরপর ইএফডি মেশিন বসানোর পরিকল্পনা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ চলছে। ১ লাখ মেশিন কেনার নীতিগত অনুমোদনও দেয়া হয় ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে।
এর আগে ইএফডি নিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ভ্যাটের অনিয়ম বন্ধ করতেই ইএফডি। ইএফডি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থায় একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে। ফলে কথিত হয়রানি দূর হবে ও রাজস্ব আহরণের ব্যয় ও ব্যবসায়িক খরচ কমবে। কর পরিহারের সুযোগ থাকবে না। রাজস্ব আদায়ে গতি আসার পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অটোমেশনের আওতায় আসবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়