×

জাতীয়

সেনাবাহিনী হেফাজতে কারা আছেন এবং তাদের ভবিষ্যৎ কী?

Icon

বিবিসি

প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৫০ এএম

সেনাবাহিনী হেফাজতে কারা আছেন এবং তাদের ভবিষ্যৎ কী?

আওয়ামী লীগের ওপর ক্ষোভ দেখা গেছে সর্বত্র

শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর তার সরকারের মন্ত্রী, এমপি থেকে শুরু করে অনেকেই আত্মগোপনে চলে যান। মঙ্গলবার সেনাবাহিনী প্রধানের বক্তব্য থেকে জানা যায় তাদের কেউ কেউ সেনা হেফাজতে রয়েছেন। ক্ষমতাচ্যুত মন্ত্রী, এমপিদের হেফাজতে নেয়া সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, তাঁদের জীবনের যে হুমকি আছে, সেটার জন্য আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। তিনি বলেন, তাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে যাতে কোন বিচারবহির্ভূত কাজ না হয়। তবে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে বা মামলা হলে তারা শাস্তির আওতায় আসবেন বলেও উল্লেখ করেন সেনাপ্রধান। কারা সেনা হেফাজতে রয়েছেন সেটি নিয়ে নাগরিক সমাজের মধ্যে কৌতূহল রয়েছে।

বুধবার সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)এর একটি সংলাপে অংশ নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কারা সেনা হেফাজতে আছে তার একটা তালিকা করা দরকার। এসব ব্যক্তিকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। তারা যাতে পালিয়ে যেতে না পারে সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। 

৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাবার পরপরই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দেশত্যাগের চেষ্টা করেন তার মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য। সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়। তার কিছুক্ষণ পর আটক হন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটকে দেয়। এ দু'জনকেই সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে বিমানবন্দর সূত্র নিশ্চিত করেছিল।

সেদিন পুলিশের এক বার্তায় জানানো হয়েছিল, প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ না করায় অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সাথে পরামর্শক্রমে বিভিন্ন হাই প্রোফাইল ব্যক্তিবর্গ যেমন- সাবেক মন্ত্রী, এমপি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা, মিডিয়াকর্মীদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন না করে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। বিমানবন্দর থেকে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত এবং ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ মাহমুদকেও আটকের খবর আসে গণমাধ্যমে। তবে, তাদের সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে কি না সে ব্যাপারে কোনো তথ্য মেলে নি।

সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার চট্টগ্রামের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফ বিএনপি নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়লে তাকেও হেফাজতে নেয় সেনাবাহিনী। চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করার খবর প্রকাশ করে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানায়, তাকেও সেনাবাহিনীর হেফাজতে দেয়া হয়েছে। এই তথ্য দুটি স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী, এমপি বা নেতাদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের অনেকে দেশের বাইরে পালিয়ে গেছেন, কেউ কেউ আত্মগোপনে রয়েছেন। তাদের কেউ কেউ সেনা হেফাজতে থাকতে পারেন বলে ধারণা রয়েছে।

বাংলাদেশে কয়েকদিন কার্যত সরকারবিহীন অবস্থা পার করার পর গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এই সময়টায় পুলিশও ছিল অনুপস্থিত। ফলে, নিরাপত্তা কিংবা আইনিব্যবস্থা নেয়ার কাজ আপাতভাবে সামরিক বা আধা-সামরিক বাহিনীকেই করতে হয়েছে। গত রবিবার থেকে ধীরে ধীরে সচল হতে শুরু করে পুলিশের কার্যক্রম। নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রি. জে. (অব) শামীম কামাল বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যাদের ওপর মানুষের আক্রোশ তারা নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে সেনানিবাস এলাকাগুলোকে বেছে নিয়েছিল। সেনাবাহিনীর দিক থেকেও তাদের নিরাপত্তা দেয়াটা ছিল অত্যন্ত কার্যকরী পদক্ষেপ।

পাবলিকের হাতে পড়লে মব জাস্টিস বলে একটা কথা আছে, পাবলিক পিটিয়ে মেরেও ফেলতে পারতো, যোগ করে কামাল বলেন, তেমন হলে পরিস্থিতির একটা নেগেটিভ কনোটেশন (নেতিবাচক অর্থ) দাঁড়াতো। তবে, যত তাড়াতাড়ি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তাদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

আরেকজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রি. জে. (অব.) বায়েজিদ সারোয়ার বলছেন, সামরিকবাহিনী হেফাজতে নিয়েছে বলার চেয়ে তারাই বাহিনীটির কাছে আশ্রয় চেয়েছে বলা অধিক যুক্তিযুক্ত হবে। নিজেদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে, জীবন বিপন্ন হতে পারে এমন শঙ্কা থেকেই সম্ভবত তারা সেনাবাহিনীর কাছে আশ্রয় চেয়েছেন, বলেন মি. সারোয়ার। মন্ত্রি-এমপিদের বিরুদ্ধে আদালতে রেগুলার মামলা হলে এবং সেনা কর্তৃপক্ষকে জানালে তখন পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তারে বাধা থাকবে না। 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রি. জে. (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, যাদের অপরাধের সম্পৃক্ততা আছে এবং আত্মগোপনে আছেন তাদের আমরা হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছি। সেনা প্রধান যা বলার বলেছেন, আমরা আমাদের মতো করে চেষ্টা করছি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ ব্যাপারে আরো অগ্রগতি আসবে বলেও ধারণা দিলেন স্বরাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা। ইতিমধ্যেই, বাংলাদেশের সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

টাইমলাইন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

১৩ সেপ্টেম্বর: সারাদিন যা যা ঘটলো

১৩ সেপ্টেম্বর: সারাদিন যা যা ঘটলো

ডোনাল্ড লু’র নেতৃত্বে আজ ঢাকায় আসছে মার্কিন প্রতিনিধিদল

ডোনাল্ড লু’র নেতৃত্বে আজ ঢাকায় আসছে মার্কিন প্রতিনিধিদল

রাজধানীতে ট্রাফিক পুলিশকে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত

রাজধানীতে ট্রাফিক পুলিশকে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত

বিএনপি নেতা আশফাকের নেতৃত্বে বায়রার ইসি বৈঠকে হামলা-ভাঙচুর

বিএনপি নেতা আশফাকের নেতৃত্বে বায়রার ইসি বৈঠকে হামলা-ভাঙচুর

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App