×

শিক্ষা

বুয়েট শিক্ষার্থীদের অনড় অবস্থান

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০১ পিএম

বুয়েট শিক্ষার্থীদের অনড় অবস্থান

ছবি: সংগৃহীত

ঈদের ছুটির পর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু হলেও ‘ছাত্র রাজনীতিমুক্ত’ ক্যাম্পাসের দাবিতে পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত রেখেছেন এখানকার শিক্ষার্থীরা। 

তারা বলেছেন, রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের নিশ্চয়তা না পেলে তারা ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন না। অন্যদিকে অ্যাকাডেমিক অচলাবস্থা ও আইনি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

ঈদুল ফিতর ও পয়লা বৈশাখের টানা ১৩ দিনের ছুটি শেষে বুধবার বুয়েট ক্যাম্পাস খোলা হয়। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা ছিল, কিন্তু তারা তা বর্জন করেন। পরদিন বৃহস্পতিবার টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন করেন ২২ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষা থাকায় এ দুদিন কোনো ব্যাচের ক্লাস ছিল না। 

শুক্রবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শনিবার ২০ ব্যাচের একটি পরীক্ষা রয়েছে, আন্দোলনের অংশ হিসেবে সেটিও তারা বর্জন করবেন। 

শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাই কোর্ট যে আদেশ দিয়েছে, তার বিরুদ্ধে আপিল করা হলে এবং বর্জন করা পরীক্ষার নতুন তারিখ ঠিক করা হলে শিক্ষার্থীরা অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে ফিরবেন। 

বুয়েট প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, শনিবার বুয়েটের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভা রয়েছে। সভায় পরীক্ষার সময়সূচি পুনঃনির্ধারণ করা হতে পারে, যাতে শিক্ষার্থীরা অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে ফেরেন। 

জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘হাই কোর্টের অর্ডার আমরা এখনো হাতে পাইনি। পেলে আমরা লিগ্যাল অ্যাডভাইজারের সঙ্গে কথা বলে আপিলের সিদ্ধান্ত নেব। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি, তারা পরীক্ষা দিতে রাজি হয়েছে। অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় পুনরায় পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণ করা হবে।’ 

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র আবরার ফাহাদকে রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বুয়েট। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বুয়েটে নিষিদ্ধ হয় ছাত্র রাজনীতি। 

গত ২৮ মার্চ গভীর রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতিসহ একদল নেতাকর্মী বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। 

আন্দোলনের অংশ হিসেবে ২৯ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ৬ দফা দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বীকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং ‘দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ’ ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালকের অপসারণ। 

শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের ছাত্র ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বীর হলের সিট বাতিল করা হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল, রাব্বীই ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতাদের সমাগম ঘটিয়েছিলেন। 

পরে রাব্বীর রিট আবেদনে হলের সিট বাতিলের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেয় হাই কোর্ট। তার আলাদা আবেদনে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতির ওপর জারি করা নিষেধাজ্ঞাও স্থগিত করে উচ্চ আদালত। তাতে প্রকৌশল শিক্ষার এই বিদ্যাপীঠে ছাত্র রাজনীতি ফেরার পথ খোলে। 

এদিকে ক্যাম্পাস খোলার আগে গত মঙ্গলবার বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক (ডিএসডব্লিউ) অধ্যাপক মিজানুর রহমানকে সরিয়ে দেয়া হয়। এই পদে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুরকৌশলের অধ্যাপক মোহাম্মদ আল আমিন সিদ্দিককে। তার পরেও শিক্ষার্থীরা একাডেমিক কার্যক্রমে ফেরেননি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App