×

শিক্ষা

জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠায় তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:৪৮ পিএম

জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠায় তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার লিনায়তনে নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত ‘জেন্ডার সমতা ও সমনাগরিকত্ব প্রতিষ্ঠায় গণতান্ত্রিক ও ইহজাগতিক মূল্যবোধ’ বিষয়ক সেমিনার। ছবি: ভোরের কাগজ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আযোজিত এক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠায় সমাজ চেতনা জাগ্রত করতে তরুণদেরইে এগিয়ে আসতে হবে। তারা বলেন, জেন্ডার একটি সাংস্কৃতিক নির্মাণ। শুধু লৈঙ্গিক পরিচয়ে কেউ অসমতার শিকার হয় তেমনটা নয়। ধর্মীয় বিধিনিষেধ, সামাজিক অবস্থান ও প্রান্তিকতা এসব কারণেও নারী বৈষমের শিকার হয়। সমাজকে আলোকিত করা, সত্য জানানো, অধিকার নিশ্চিত করা শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব। কার্য কারণ সম্পর্ক ছাড়া কিছুই ঘটে না। সমাজের মধ্যে থেকেই চেতনা আগ্রত করতে হবে। আর এসব ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ভূমিকাও বিশাল।

বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) এর উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) চবি’র কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার মিলনায়তনে ‘জেন্ডার সমতা ও সমনাগরিকত্ব প্রতিষ্ঠায় গণতান্ত্রিক ও ইহজাগতিক মূল্যবোধ’ বিষয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে প্রধান আলোচক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌলা বলেন, আমাদের সবাইকে মানবিক হতে হবে। ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়টি ৭২ এর সংবিধানে এমনি আসেনি। ঐতিহাসিকভাবে এসেছে। পাকিস্তান আমলের রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যবহার হচ্ছিল। তাই তখন ধর্ম নিরপেক্ষতার বিষয়টি এসেছিল। সমাজকে আলোকিত করা, সত্য জানানো, অধিকার নিশ্চিত করা তরুণ শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব। সমাজের মধ্যে থেকেই চেতনা আগ্রত করতে হবে। আর রাষ্ট্রের ভূমিকাও বিশাল।

সেমিনারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, নারীদের জন্য কিছু আসন সংরক্ষণ করে কি আসলে সমাজের দৃষ্টি পাল্টানো গেছে? তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের কি আসলে আমরা মানুষ মনে করি? সংবিধানের শুরুর মূলনীতি গুলো থাকা জরুরি। গণতন্ত্র থাকলেই অনেক বিষয় নিশ্চিত হয়ে যায়। নারীদের নিরাপত্তা না থাকলে তাদের অধিকার প্রাপ্তির সুযোগ নিশ্চিত করা যাবে না। নারীর জন্য যেসব গৎবাঁধা নিয়ম চালু আছে সেগুলোকে চ্যালেঞ্জ করতে হবে।

নৃ বিজ্ঞান সহকারী অধ্যাপক ড. মোশরেকা অদিতি হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর সমতাভিত্তিক রাষ্ট্র গড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। সেখান থেকে আমরা অনেক দূরে সরে গিয়েছি। নারীরা অনেকে এখন উপার্জন করছেন তবে পারিবারিক সিদ্ধান্ত দিতে পারছেন কিনা, সেটাও বিবেচনায় নিতে হবে। গার্হস্থ্য শ্রমে নারীর মূল্য নিশ্চিত করতে পারিনি। রিপ্রোডাক্টিভ হেলথ রাইট নিশ্চিত হয়নি। সম্পত্তির অধিকারে রাষ্ট্রীয় আইনের সাথে সকল ধর্মীয় আইনের তফাত অনেক। পাশাপাশি ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে অবশ্যই। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নিরসন ও সেবা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা থাকতে হবে। চবি লোক প্রশাসন বিভাগের প্রভাষক নওশীন ইসলাম বলেন, নারীকে পরিবারে সিদ্ধান্ত গ্রহণে তো কোনো প্রাধান্য দেয়া হয় না। অর্ধেক শিক্ষার্থী নারী হওয়ার পরও তাদের সমস্যা সুবিধা নিয়ে চিন্তা নেই। নারীর প্রতি সহিংস আচরণ কমছে না। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অনলাইন ভায়োলেন্স। ঘরে বাইরে সমাজে শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে সবাইকে নারীর অধিকার নিশ্চিতে সক্রিয় হতে হবে। বিএনপিএস কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কর্মসূচি সমন্বয়কারী ও সেমিনারের সভাপতি মনিরুজ্জামান মুকুল বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় ইহজাগতিকতার চর্চার কথা বলছি। এখনকার বাংলাদেশে রাষ্ট্র ও ধর্ম ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে। পরজগতে রাষ্ট্রের কোনো কাজ নেই। তাই আমরা বলেছি রাষ্ট্রীয় কাজে ধর্মকে একটু পাশে রাখতে, বাদ দিতে নয়।

সেমিনারে ধারনাপত্র উপস্থাপন করেন বিএনপিএস চট্টগ্রাম কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক ফেরদৌস আহমদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন রাজনীতিবিদ-সাংস্কৃতিক সংগঠক শরীফ চৌহান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App